ওলামা লীগের মিথ্যা সমালোচনাকারীরা কোটি কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী
সাস নিউজ২৪ ডট কম : ওলামা লীগকে ‘বাটপার’ বলে কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভতিতে আঘাত দিয়ে আওয়ামী লীগের যু্গ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ফৌজদারি অপরাধ করেছেন বলে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে ওলামা লীগ।
সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাওলানা মুহম্মদ আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী।
শরীয়তপুরী বলেন, হানিফকে বলবো- আপনি ওলামা লীগকে বাটপারের দল বলে লাখ লাখ ওলামাকে অবমাননা করেছেন, তাদের পেছনে নামাজ আদায়কারী কোটি মুসলমানের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হেনেছেন। ৯৮ ভাগ মুসলমানের এই দেশে সাবধানে ও শ্রদ্ধাভরে কথা বলবেন। রাজনৈতিকভাবে না হোক, ধর্মীয় দিক থেকে কোটি কোটি মুসলমান ওলামা লীগকে অন্তর থেকে শ্রদ্ধা করে। ওলামা লীগের মিথ্যা সমালোচনাকারীরা কোটি কোটি মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ফৌজদারি অপরাধ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ওলামা লীগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের কিছু নেতার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের প্রতিক্রিয়া হলো- দলের সুবিধাভোগী নেতারা নিকট অতীত ভুলে গেছেন। তারা নিজেদের ছাড়া অন্য কাউকে এখন প্রয়োজন মনে করছেন না। রাজপথে নির্যাতিত ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়ন তো করছেনই না, এমনকি তার বিন্দুমাত্র প্রয়োজন মনে করছেন না। সবারই মনে আছে এ ধরনের কিছু নেতা এমনকি কোনও কোনও মন্ত্রী এমপি কিছুদিন আগে খোদ ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যায়িত করেছেন। যে কারণে গত ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট পত্রিকায় এসেছে ‘ছাত্রলীগ মন্ত্রী-এমপিদের রক্তচক্ষুকে ভয় পায় না’।
আবুল হাসান বলেন, যারা ওলামা লীগকে বাটপার সংগঠন বলছেন, তারা আমাদের কত সমাবেশে প্রধান অতিথি বিশেষ অতিথি ছিলেন তা আমরা গণমাধ্যমকে দেখাতে চাই। সেদিন আপনারা ওলামা লীগের কাঁধে চড়ে বক্তব্য দিয়েছেন। এমনকি ওলামা লীগের জন্য আওয়ামী লীগের অনেক হেভিওয়েট নেতা বেঁচেছেন। ওলামা লীগকে ছোট করে দেখলে স্বয়ং বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিজেও ছোট হয়ে যান। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ ও নেতৃত্বেই আওয়ামী ওলামা লীগ সারাদেশে সুসংগঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ওলামা ও পীর-মাশায়েখদের অনেক ভালোবাসেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিজেই ১৯৬৯ সালে আওয়ামী ওলামা পার্টি গঠন করেন, ১৯৯৬ সালে এসে যা বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগে রূপান্তরিত হয়।
ওলামা লীগ গঠন প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে আবুল হাসান বলেন, ২০০১ সালে শেখ হাসিনা হুকুম দেন প্রত্যেক জেলায়, থানায় ওলামা লীগের কমিটি গঠন করতে। ২০০২ সালে চার দলীয় জোট হাওয়া ভবনের উস্কানিতে পুলিশ যখন আওয়ামী লীগের কার্যালয় বন্ধ করে দেয়। তখন বর্তমান সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ওলামা লীগকে ফোন করে বলেন, হুজুর, আপনারাই পারেন আওয়ামী লীগ অফিস চালু করতে। তখণ ওলামা লীগই মিলাদ করে দলীয় কার্যালয় চালু করে দেয়।
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ওলামা লীগের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন- পহেলা বৈশাখ ও চৈত্রসংক্রান্তি পালন করলে মুসলমানিত্ব যায় না। এক্ষেত্রে আমরা বলতে চাই, ইনুর এ বক্তব্য ধর্মনিরপেক্ষতার খেলাপ। কারণ ইনু পহেলা বৈশাখকে ধর্মনিরপেক্ষতার আলোকে দেখেননি। তিনি এখানে ইসলাম ধর্মকে টেনে এনেছেন। পহেলা বৈশাখ পালন শরিয়ত সম্মত নয়, ওলামা লীগ এ কথা বলেছে। কিন্তু তা পালন না করার জন্য কোনও বাধ্যবাধকতা আরোপ করেনি বা কর্মসূচী ঘোষণা করেনি। পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা যাবো। তার কাছে বিনীতভাবে ব্যাখ্যা করব।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনটির সভাপতি মাওলানা মুহম্মদ আখতার হুসাইন বুখারী, সহ-সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী, লায়ন মাওলানা মুহম্মদ আবু বকর ছিদ্দীক্ব, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা মুহম্মদ শওকত আলী শেখ ছিলিমপুরী প্রমুখ।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন