কৃষি অধিদফতরের নিষ্ক্রিয়তায় বাড়ছে তামাক চাষ
সাস নিউজ : নীলফামারীর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের তুলনায় এবার ৪৫৮ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ কমেছে। আর কৃষকদের দাবি, এবার জেলায় দ্বিগুণ জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। তামাক কোম্পানিগুলোর আর্থিক সহযোগিতায় দেশের উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নীলফামারীতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তামাক চাষ। বিনা মূল্যে বীজ, ঋণে সার ও নগদ অর্থসহ তামাক ক্রয়ের নিশ্চিতার লোভেই তামাক চাষে ঝুঁকে পড়েছে এ অঞ্চলের চাষীরা। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর জেনেও অধিক মুনাফা লাভের আশায় তামাকের জমিতে কাজ করছে শিশুরাও। জেলার ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সৈয়দপুর ও নীলফামারী সদরে মাঠের পর মাঠ জুড়ে শুধুই তামাকই চাষ হয়েছে। দিন যতই যাচ্ছে ততই বাড়ছে তামাক চাষ। কৃষি বিভাগ তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করলেও কোম্পানির লোভনীয় আশ্বাসে দিন দিন বেড়েই চলছে জেলায় তামাক চাষ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি অর্থবছর ৩ হাজার ১০২ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। গত বছর ২০১৮ সালে ৩ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছিল। সে হিসাবে এবার তামাক চাষ কমেছে ৪৫৮ হেক্টর জমি। তবে কৃষকরা বলছে, চলতি বছর জেলায় দ্বিগুণ পরিমাণ ফসলি জমিতে চাষ হয়েছে বিষ বৃক্ষ তামাকের। কোম্পানিগুলো তামাক ক্রয়ের শতভাগ নিশ্চিয়তা প্রদান করে। পাশাপাশি, কৃষকের উৎপাদিত পণ্য ক্রয়ের ব্যাপারে সরকারের নেই কোনও উদ্যোগ।
কৃষক আসাদুল ইসলাম মন্টু বলেন, সরকার যদি বিনা শর্তে ঋণসহ ফসল ক্রয়ের নিশ্চিয়তা দেয় তাহলে তামাক চাষ ছেড়ে দিয়ে কৃষক ভুট্টা, গম, আলু ও সরিষা চাষে করবে। কৃষকদের অভিযোগ, কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কৃষি তথ্যের খবর জানতে চাইলে তারা সেটি আমলে নেয় না। বীজতলাসহ সবজির ক্ষেত নষ্ট হলেও কৃষি অফিসের লোকজনের দেখাই মেলে না। তাই তারা গম ভুট্টা, আলু বা অন্য কোনও ফসল চাষ না করে তামাকই চাষ করছেন।
নীলফামারী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক গোলাম ইদ্রিস বলেন, তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করতে কৃষিবিভাগ যথেষ্ঠ আন্তরিক হয়ে কাজ করছে। কিন্ত চাষিরা অধিক মুনাফার আশায় তামাক চাষে ঝুঁকে পড়ছে। তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার ৪৫৮ হেক্টর জমিতে তামাকের কম চাষ হয়েছে। আশা করি সরকারের পৃষ্টপোষকতায় আগামীতে কৃষক তামাক চাষ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন