জেলায় জেলায় ‘কিশোর গ্যাং’
কিশোরগঞ্জ সংবাদদাতা: রাজধানী ছেড়ে জেলা-উপজেলায়ও বেড়ে চলেছে ‘কিশোর গ্যাং’য়ের দৌরাত্ম্য। একের পর এক সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছে তারা। শহরের সবখানেই বহাল আছে তাদের ত্রাসের রাজত্ব। হত্যা, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, নারীটিজিংসহ নানা অপরাধে জড়িত হচ্ছে তারা। ঘটছে হত্যাকা-ও। ছোটখাটো যেকোনও ইস্যুতেও এই কিশোররা একত্র হয়ে হামলা চালায়। তারপরও তারা থেকে যাচ্ছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এসব কিশোর অপরাধীদের আড়াল থেকে কেউ না কেউ মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। তারা মনে করেন, এখনই লাগাম টেনে না ধরলে আগামীতে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে তারা। আর পুলিশ বলছে, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
মফস্বলের ‘কিশোর গ্যাং’ কালচারের প্রতিটি গ্যাং-এ ৫০ থেকে ৬০ জন করে সদস্য তাকে। সদস্যদের বেশির ভাগ শহরের বিভিন্ন স্কুল-কলেজের ছাত্র এবং ঝরে পড়া শিক্ষার্থী, বেকার ও শ্রমিক শ্রেণির কিশোর। তাদের কোনও কোনও গ্যাং প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় চলে। মাঝেমধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্যাং সদস্যদের আটক করলেও বেশির ভাগই অধরা রয়ে গেছে।
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ কিশোরগঞ্জ সফরে এসে একটি অনুষ্ঠানে ‘কিশোর গ্যাং’-এর তৎপরতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, শিগগিরই এদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে এরা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে।’
এ বিষয়ে কিশোগঞ্জ সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি ও প্রবীণ সাংবাদিক সাইফুল হক মোল্লা দুলু বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে কিশোর গ্যাংয়ের অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। শহরের স্কুল-কলেজ, লেকপাড় ও অলিগলিতে তারা আড্ডা দেয়। দেখে বোঝার উপায় নেই তারা সন্ত্রাসী কর্মকা-ে জড়িত। কিন্তু, কিছু বলতে গেলেই তারা চাপাতি, রামদা ও দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বের হয়ে হামলা চালায়। শহরের সভ্য ও সামাজিক মানুষরা আজ তাদের কাছে জিম্মি। ‘কিশোর গ্যাং’-এর প্রতিকারের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযানের দাবির পাশাপাশি সচেতন মহলকে ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ২০১৮ সালের শেষের দিকে এ ধরনের প্রবণতা আমাদের চোখে পড়েছিল। তারপর আমরা একটা স্পেশাল টিম গঠন করি। এ নিয়ে লোকাল থানা এবং গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) কাজ করছে। এ ব্যাপারে পুলিশ সব সময় সজাগ থাকায় পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। সন্ধ্যার পর যেসব ছেলে ঘোরাঘুরি করে, কোচিং বা প্রাইভেটের কথা বলে বিভিন্ন জায়গায় আড্ডা দেয়, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অভিভাবকের হাতে তুলে দিয়েছি।আশা করছি, ধীরে ধীরে এর প্রবণতা কমবে।’
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন