অভিযানে জব্দ ইলিশ যায় কোথায়?
নিজস্ব প্রতিবেদক: ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জেলা প্রশাসন। অভিযানে কাউকে ইলিশ ধরা, মজুত কিংবা কেনা-বেচার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে তাৎক্ষণিক কারাদ- দেয়। বিকল্পে জরিমানা আদায় করে ছেড়ে দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময়ের মধ্যে জব্দ করা ইলিশ স্থানীয় মাদ্রাসা, এতিমখানা, বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র ও বৃদ্ধাশ্রমে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। এছাড়া, কখনও কখনও জব্দ করা মাছে কেরোসিন ঢেলে খাওয়ার ‘অযোগ্য’ করে মাটিতে পুতে ফেলারও রেওয়াজ রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা ।
প্রসঙ্গত, ০৯ অক্টোবর বুধবার ভোর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিনের জন্য দেশের ৬টি ইলিশ অভয়ারণ্যসহ ইলিশ অধ্যুষিত নদ-নদীতে ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার। একইসঙ্গে এই ২২ দিন ইলিশ মাছ পরিবহন মজুত, সংরক্ষণ ও বিক্রিও বন্ধ রয়েছে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে স্বাচ্ছন্দ্যে ডিম ছাড়ার সুযোগ দিতেই সরকার এ নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই বছর এই ২২দিনে মোট ২টি পূর্ণিমা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একটি পূর্নিমা গেছে ১৩ অক্টোবর, পরবর্তী পূর্ণিমা পাওয়া যাবে ২৮ অক্টোবর।
এই ২২দিন ইলিশের জন্য দেশের ৬টি অভয়াশ্রমসহ উল্লেখযোগ্য নদীতে সরকার ইলিশ মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিশেধাজ্ঞা জারি করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবছর আশ্বিনের ভরা পূর্ণিমার আগে পড়ে ১৫ দিন হচ্ছে ইলিশের ডিম ছাড়ার প্রকৃত সময়। প্রতিবছর এই সময়ে নদীতে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। কিন্তু এরপরও এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে অনেকেই মাছ ধরে। অবৈধভাবে এই মাছ ধরাকে ঠেকাতে জেলা প্রশাসন, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ নদীতে অভিযান চালায়। এসব অভিযানের প্রচুর ইলিশ জব্দ করা হয়। কিন্তু জব্দ করা ইলিশ কোথায় যায়? এই নিয়ে জনমনে প্রশ্ন রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের বলেন, শুধু জেলা প্রশাসনই নয়, মা ইলিশ রক্ষায় নদীতে নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ড এমনকি থানা পুলিশও অভিযান চালায়। যদিও আমি এসব সংস্থাকে যৌথভাবে অভিযান চালাতে বলেছি। এসব অভিযানে জব্দ করা জাল নদীর পাড়ে এনে পুড়িয়ে ফেলা হয়। আর ইলিশ বিভিন্ন এতিমখানা ও মাদ্রাসায় দিয়ে দেওয়া হয়।
জব্দ করা ইলিশ মাছ মাদ্রাসা ও এতিমখানায় দিয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মোহম্মদ মতিউল ইসলাম চৌধুরীও। তিনি বলেন, জব্দ করা জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করি। বাজারগুলোয় অভিযান চলছে। লুকিয়ে মাছ ধরলে তা আরও কঠোরভাবে মনিটরিং করা হবে।
প্রায় একই তথ্য জানালেন বরগুনার জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ। তিনি বলেন, এই বছর মা ইলিশরক্ষায় বরগুনার নদীগুলোয় অভিযান চালানো হয়েছে। তবে এসব অভিযানে কোনও ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়নি। কিছু জাল জব্দ করা হয়েছে। যা অভিযান শেষে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
অভিযানের সময় জব্দ করা ইলিশ বাজারে বিক্রি করা হয় না বলে জানিয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান। তিনি বলেন, জব্দ করা খাওয়ার যোগ্য মাছগুলো স্থানীয় মাদ্রাসা বা এতিমখানায় দিয়ে দেওয়া হয়। আর যেগুলো খাওয়ার অযোগ্য, সেগুলো মাটিতে পুঁতে ফেলে ধ্বংস করা হয়। জব্দ করা জালগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন