হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে কটূক্তি:
ভোলা সংবাদদাতা: ভোলায় মহান আল্লাহ পাক তিনি ও উনার রসূল নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শান মুবারকে এক হিন্দু যুবকের কটুক্তির প্রতিবাদে সাধারণ মুসুল্লিদের ডাকা বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪ জন নিহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহতরা হলেন- বোরহানউদ্দিন উপজেলার মাদ্রাসা ছাত্র মাহবুব (১৪), উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের কলেজ শিক্ষার্থী শাহিন (২৩), বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ (৪৫), মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজান (৪০)। এই ঘটনায় আহত শতাধিক মুসুল্লি বলে জানা গেছে। এই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামেগঞ্জেও।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হিন্দু যুবক বিপ্লব চন্দ্রের ফেসবুক আইডি থেকে তার বন্ধু তালিকার বেশ কয়েকজনের কাছে দ্বীন ইসলাম ও উনার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালির ম্যাসেজ পাঠানো হয়।
বিপ্লব চন্দ্র শুভ বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চন্দ্র মোহন বৈদ্দের ছেলের আইডি থেকে এই ম্যাসেজ পাঠানোকে কেন্দ্র করে সাধারণ মুসুল্লিরা বিক্ষোভের ডাক দেয়া হয়। সকাল থেকে বোরহানউদ্দিন উপজেলার গ্রামগঞ্জ থেকে মুসুল্লিরা শহর অভিমুখে আসতে থাকে। এতে ভোলার পুলিশ সুপার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ মোতায়েন করেন। পুলিশ সভা সংক্ষিপ্ত করার জন্য নির্দেশ দেয়ার পরপরেই সংঘর্ষের শুরু হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেখানে চার প্লাটুন বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া হেলিকপ্টারযোগে সেখানে আগেই এক প্লাটুন বিজিবি সদস্য অবতরণ করেছেন। পুলিশের পাশাপাশি তারা সেখানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
আহত শতাধিক মুসল্লীর মধ্যে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে ৪০ জনকে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া গুরুতর ১০-১৫ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে ভোলার পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়ছার দাবি করেন, আমাদের কাছে খবর আসে এ ঘটনা নিয়ে মাইকিং হচ্ছে এবং স্টেজ বানানো হচ্ছে। সেখানে গিয়ে আমরা উপস্থিত মুসল্লীদের সঙ্গে কথা বলি এবং আমি নিজে সেখানে বক্তব্য দিয়েছি। তারা সবাই আমার বক্তব্য শুনেছে। যখন আমি স্টেজ থেকে নেমে আসি তখন এক দল উত্তেজিত জনতা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
এসপি বলেন, অতর্কিত হামলায় তারা আত্মরক্ষার্থে একটি রুমে গিয়ে আশ্রয় নেয়। যখন তারা আমাদের রুমের জানালা ভেঙ্গে ফেলছে তখন আমরা প্রথমে শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ি। পরবর্তীকালে এতে কাজ না হওয়ায় ওপরের দিকে গুলি চালায়।
বিস্তারিত ঘটনা সূত্রে জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দ্বীন ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট বিষয় কটূক্তি করার কারনে হিন্দু যুবক বিপ্লব চন্দ্র শুভর বিচারের দাবিতে ঈদগাহ মাঠে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে স্থানীয় জনতা। এ সমাবেশের জন্য পুলিশ অনুমতি না দিতে চাওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বাড়তে থাকে। পুলিশ অনুমতি না দিলেও সকাল থেকে বিক্ষুব্ধ মুসুল্লিরা মাঠে জড়ো হতে থাকে। মিছিল না করে সেখানেই তার অবস্থান করে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। পরে পুলিশ তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে আসলে সেখানে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে মুসুল্লিদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে তৎক্ষনাৎ চারজন নিহত হন।
পুলিশের দাবি, উত্তেজিত লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করলে তারা গুলি করতে বাধ্য হয়।
স্থানীয় মুসুল্লিরা জানান, তারা হিন্দু যুবকের কটূক্তির বিষয়ে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করেও পুলিশদের থেকে তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। যে কারনে মানুষ এতে ক্ষুব্ধ হয়। এরইমধ্যে পুলিশ মুসুল্লিদেরকে সমাবেশের জন্য অনুমতি না দেয়ায় আরও ক্ষুব্ধ হন স্থানীয় জনতা।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন