‘তালেবানকে প্রথম পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছিল সৌদি আরব ও আমিরাত’
সাস নিউজ ২৪ ডট কম ডেস্ক : মধ্যস্ততাকারী হিসেবে দায়িত্বরত আফগান তালেবানের সাবেক এক যোদ্ধা জানিয়েছেন, কাতারে কার্যালয় খোলার আগে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত চেয়েছিল তাদের দেশে তালেবানের কার্যালয় চালু করতে। প্রয়াত আল-কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনের সাবেক সহচর আব্দুল্লা আনাস এই দাবি করেছেন।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক মিডল ইস্ট আই সংবাদমাধ্যমকে আনাস জানান, তালেবানকে কার্যালয় খুলতে দিয়ে কাতার সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতা করছে, সৌদি আরবের এমন অভিযোগ শুনে তিনি হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। কারণ তালেবানের প্রথম কার্যালয় সৌদি আরবে নেওয়া হয়েছিল।
আনাস বলেন, আমিরাতেও কয়েকটি কার্যালয় ছিল। কাতারকে যদি সন্ত্রাসবাদের প্রশ্রয়দাতা হিসেবে অভিযুক্ত করা হয় তাহলে একই সন্ত্রাসীদের অন্যরা আগেই পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে।
আলজেরীয় নাগরিক আনাস এখন লন্ডনে বসবাস করছেন। মিডল ইস্ট আই-কে তিনি জানান, ২০০৬-০৮ সালের মধ্যে তিনি বেশ কয়েকবার সৌদি আরব সফর করেছেন। আফগান তালেবানদের আলোচনায় নিয়ে আসার জন্য মধ্যস্ততা করছিলেন তিনি।
আনাস জানান, সৌদি আরবের গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক প্রধান প্রিন্স মাকরিন বিন আব্দুলাজিজ আল সৌদের সঙ্গে তিনি কয়েকবার বৈঠক করেছেন। প্রয়াত বাদশা আব্দুল্লা বিন আব্দুলাজিজ আল সৌদের সহযোগিতায় ২০০৮ সালে মদিনায় শান্তি আলোচনা আয়োজন করেন।
দোহাতে তালেবানের কার্যালয় খোলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছিলেন ওই সময়কার আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। এরপর থেকেই তালেবানের কার্যালয়টি বন্ধ রয়েছে।
আফগানিস্তানে নিযুক্ত আল জাজিরার সাংবাদিক হাশমাত মসলিহ জানান, আফগানিস্তানের যুদ্ধে সৌদি আরব একটি পক্ষে অবস্থান নেওয়ার ফলে তালেবানরা কাতারমূখী হয়ে পড়ে। কারণ তাদের একটি নিরপেক্ষ দেশ প্রয়োজন ছিল। কাতার ছিল নিরপেক্ষ দেশ। সৌদি আরব তালেবানদের পৃষ্ঠপোষকতা দিতে চাইছিল। কিন্তু আফগান সরকার অভিযোগ করেছিল তালেবানদের সঙ্গে সৌদি আরবের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে।
আল-জাজিরা জানিয়েছে, বেশ কয়েকটি ফাঁস হওয়া ইমেইলে দেখা যায়, আমিরাতি কূটনীতিকরা আবু ধাবিতে তালেবানের কার্যালয় খোলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
জুলাই মাসে নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক খবরে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত আমিরাতি রাষ্ট্রদূত ইউসেফ আল-ওতাইবা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের কাছ থেকে একটি ক্ষুব্ধ বার্তা পেয়েছিলেন। তাতে তালেবানের কার্যালয় আমিরাতে স্থাপিত না হয়ে কাতারে হওয়াতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নাহিয়ান।
এই ইমেইল বার্তাটি পাঠানো হয়েছিল ২০১১ সালে। ওই সময় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় জোর দিয়েছিল। এরপর ২০১৪ সালের দিকে আফগানিস্তান থেকে অধিকাংশ ন্যাটো সেনাকে প্রত্যাহার করা হয়।
উল্লেখ্য, ৫ জুন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিসর কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে। এতে করে কাতার পানিপথ, স্থলপথ ও আকাশপথে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। সন্ত্রাসবাদে সহযোগিতার অভিযোগে সৌদি নেতৃত্বের অভিযোগে এ অবরোধ আরোপ করা হয় কাতারের বিরুদ্ধে। যদিও কাতার এ অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। সূত্র: আল জাজির
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন