দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে গ্রীক দেবীর ভাস্কর্য স্থাপন
ডিসেম্বর ২৮, ২০১৬
সাস নিউজ ২৪ ডট কম : দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপন করা হয়েছে একটি গ্রীক দেবীর ভাস্কর্য। সুপ্রিমকোর্টের মূল ভবনের সামনে ফোয়ারার মধ্যে এটি স্থাপন করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ভাস্কর্যের নানা কাজ শেষ হয়েছে। আদালত প্রাঙ্গণে এই প্রথম কোনো ভাস্কর্য স্থাপন করা হলো। নতুন বর্ষের শুরুতে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম বলেন, প্রধান বিচারপতির অনুমতিক্রমে ভাস্কর্যটির স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। কাজ সম্পন্ন করতে আরো কিছু দিন লাগবে।
সরেজমিন দেখা যায়, নারী ভাস্কর্যটি দাঁড়িয়ে আছে; তবে চোখ দুটি বাঁধা, তার ডান হাতে তলোয়ার, বাম হাতে দাঁড়িপাল্লা। তলোয়ারটি নিচের দিকে নামানো। দাঁড়িপাল্লা উপরে ধারণ করে আছেন। ভাস্কর্যটি শাড়ি পরানো হয়েছে। তবে কোনো নাম দেয়া হয়নি। নামফলক এখনও দেয়া হয়নি। ভাস্কর্যটির কাজ প্রায় শতকরা ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে।
একজন আইনজীবী জানালেন, দেশের আদালত প্রাঙ্গণে এটি প্রথম কোনো ভাস্কর্য। এই ধরনের একটি ভাস্কর্য ইংল্যান্ডের ওল্ড বেইলি ক্রিমিনাল কোর্ট ভবনের সামনে স্থাপিত রয়েছে। এটি হলো গ্রিকদের ন্যায় বিচারের প্রতিকৃতি। তার আদলে দেশের আদালত প্রাঙ্গণে এই ভাস্কর্য স্থাপন করা হয়েছে।
সুপ্রিমকোর্ট রেজিস্টার অফিস সূত্রে জানা যায়, বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের ফুল কোর্টে আলোচনাও হয়েছে বলে একটি সূত্রে জানা যায়। সেখানেও ভাস্কর্য স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত আসে। এরপর ভাস্কর্যটি নির্মাণে মৃণাল হককে দায়িত্ব দেয়া হয়। চলতি বছর শুরুর দিকে ভাস্কর্যটির নমুনা সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনকে দেখান ভাস্কর মৃণাল হক। সুপ্রিমকোর্ট বিষয়টি দেখে অনুমোদন দেয়ার পর গত ১৮ ডিসেম্বর কোর্টে মূল ভবনের সামনে ফোয়ারার মধ্যে এটি স্থাপন করা হয়। গত ২৪ ডিসেম্বর বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে মূল মঞ্চের দু’পাশে দুটি ভাস্কর্য বসানো হয়।
ভাস্কর্যটি বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। স্টেইলনেস স্টিলের বিভিন্ন আকারে পাইপ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ভাস্কর্যটির রাতের অন্ধকারে আলোকসজ্জার ব্যবস্থা করা হবে। সম্পূর্ণ কাজ শেষ হলে ভাস্কর্যটি সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনকে বুঝিয়ে দিলে এর একটি নাম দেয়া হবে। এরপর আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। জানা যায়, আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ভাস্কর্য এই প্রথম। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সুপ্রিমকোর্টের সামনে নেই কোনো ভাস্কর্য।
এই প্রতিকৃতির ভাস্কর মৃণাল হক বলেন, সারা বিশ্বেই এটি বিচার বিভাগের প্রতীক। অন্যান্য দেশে স্থাপিত ভাস্কর্যের সাথে আমাদের দেশের ভাস্কর্যের একটু পার্থক্য রয়েছে। ভাস্কর্যের গায়ে স্কার্ফ পরা থাকলেও এখানে শাড়ি পরানো হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য দেশে পায়ের নিচে সাপ থাকলেও এখানে এটি বাদ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ বলেন, ভাস্কর্যটি ন্যায় বিচারের প্রতীক হিসেবে করা হয়েছে।
উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, রোমানদের কাছে এই ‘লেডি জাস্টিস’ ন্যায় বিচারের দেবী। গ্রিক মিথ অনুযায়ী সারা বিশ্বেই এটি বিচার বিভাগের প্রতীক রূপে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রতিকৃতির চোখ বাঁধা রয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন