হিজড়াদের চাঁদাবাজি-অশ্লীলতায় বিপন্ন যাত্রীরা
নিউজ ডেস্ক: বিমানে যেমন ‘বিমানবালা’ থাকেন, ট্রেনে কিন্তু তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। যাত্রীদের জন্য রেলের কোচগুলোতে অ্যাটেন্ডেন্ট থাকে। যদিও তারা যাত্রীদের কোনো উপকারে আসে না। এই সুযোগে ট্রেনে চলে ‘ট্রেনবালা’ তথা হিজড়াদের অত্যাচার। রেলযাত্রীরা মজা করে তাদের নাম দিয়েছেন ‘ট্রেনবালা’; কিন্তু বিষয়টা মোটেও মজার নয়। এদের চাঁদাবাজি, অশ্লীল কথাবার্তা এবং অঙ্গভঙ্গিতে যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের ট্রেনগুলোতে ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে হিজড়াদের চাঁদাবাজি।
রেলের জনপ্রিয় একটি ফেসবুক গ্রুপ ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে ফ্যান গ্রুপ’ – এ প্রতিদিন হিজড়াদের এসব বেআইনী কাজের সচিত্র ঘটনা পোস্ট করেন রেলযাত্রীরা। সারিয়া তামব্রিন নামের এক যাত্রী ভয়ানক অভিযোগ করে লিখেছেন যে, দাবিকৃত ১০০ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় এক ‘ট্রেনবালা’ তার সামনে কাপড় খুলে ফেলে! যাত্রীরা কেউ কিছু বলছিল না। কারণ যে কথা বলবে, তার উদ্দেশ্যেই ছুটে আসবে অশ্লীল গালাগাল। সেই নারী যাত্রী এখনো মানসিকভাবে ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত। আল-আমিন শুভ লিখেছেন, ‘রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ যখন ব্যবস্থা নেবেই না, তখন টিকিটের মূল্যের সঙ্গে হিজড়াদের জন্য চাঁদা কেটে রাখুক। তাদের এই অশ্লীল অত্যাচার থেকে মুক্তি চাই।’
ফেরদৌস পায়েল ‘ট্রেনবালা’দের চাঁদাবাজির ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘ আজ চট্টলায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে কমলাপুর আসার পথে।’ সরেজমিনে দেখা যায়, এইসব হিজড়ারা আগে ‘যে যা দেন’ টাইপ চাঁদাবাজি করত। এরপর তাদের ডিমান্ড হয়ে দাঁড়ায় দশ টাকা। আর ট্রেনে কোনো দম্পতি বা কাপল দেখলেই সেই রেট বেড়ে দাঁড়ায় একশ টাকা। কেউ দিতে না চাইলে অশ্লীল গালাগাল, অঙ্গভঙ্গি এমনকী কাপড় খুলে প্রদর্শন করার মতো ঘটনা ঘটে। এই প্রতিবেদকের কাছে চাঁদা চাইতে আসলে প্রতিবাদ করা হয়। এরপর হিজড়া চাঁদাবাজারা অশ্লীল কথাবার্তা শুরু করলে ট্রেনের অনেক যাত্রীও প্রতিবাদে যোগ দেয়।
প্রতিবেদনের শুরুতেই বলা হয়েছিল, ট্রেনের অ্যাটেন্ডেন্টরা যাত্রীদের কোনো উপকারে আসে না। বাস্তবেই তাই। তাদের কাছে ‘ট্রেনবালা’দের বিরুদ্ধে নালিশ করা হলে ঘাড় ঘুরিয়ে চলে যায়। এছাড়া পুলিশ সেই ‘ট্রেনবালা’দের সামান্য ধমক দিয়ে সরিয়ে দিলেও তারা আবার ফিরে আসে। যাত্রীদের অভিযোগ, ‘ট্রেনবালা’দের তোলা চাঁদা দায়িত্বরত প্রায় সবার মাঝেই ভাগাভাগি হয়। দেশে অনেক নতুন কোচ এসেছে, নতুন ইঞ্জিন এসেছে। সেই ট্রেনগুলো দেখলে চোখ ফেরানো যায় না। কিন্তু এমন বাহ্যিক সৌন্দর্যের ভেতরেই আছে কদাকার রূপ। কেউ ফুরফুরে মন নিয়ে ট্রেন ভ্রমণে বের হলে তার সব আনন্দ মাটি করে দিতে পারে ‘ট্রেনবালা’।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন