হাইব্রিড নেতারা খারাপ সময়ে সরে যায়: শামীম ওসমান
সাস নিউজঃ হাইব্রিড নেতাদের কাজই হলো খারাপ সময়ে দল থেকে সরে যাওয়া বলে মন্তব্য করেছেন নারায়ণগঞ্জ চার আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তিনি বলেন, ‘যেসব নেতারা গরিব মানুষের কষ্ট বোঝেন, মাটি ও মানুষের ভাষা বোঝেন; স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেন এবং সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠে রাজনীতি করেন— ওই সব নেতাদের মূল্যায়ন করতে পারছি না। আর পারছিনা বলেই ওই শকুনের দল বারবার এসে ছোবল মারার চেষ্টা করছে।’
বুধবার বিকালে নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত এক স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জসীম উদ্দিন কবীর স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়। ২৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠন বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জ এলাকায় এই সভার আয়োজন করে।
শামীম ওসমান বলেন, ‘নতুন নতুন বড় নেতা গজিয়েছে। ওই নেতাদের ঠেলায় অরজিনাল নেতাদের অবস্থা খারাপ। আর কিছুদিন পর থেকে নদীর এপারে (বন্দরে) সময় দেবো। অরজিনাল নেতারাই সম্মানে থাকবে। ওই সমস্ত হাইবব্রিড-চাইব্রিড নেতারা এমনিতেই সময় খারাপ হলে পেছনের দরজা দিয়ে ভাইগা যাবে। এদের কাজ হচ্ছে মধু খাওয়া। সময় মতো সরে যাওয়া। আমাদের কাজ হচ্ছে রক্ত ঝরানো। রক্ত দিয়ে দলকে শক্তিশালী করা।’
শামীম ওসমান বলেন, ‘খালেদা জিয়ার দুর্নীতির মামলার বিচার হবে না কেন? চার বছর আগে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এবং নির্দেশে এতগুলো মানুষকে হত্যা করা হলো। এই হত্যার বিচার হবে না কেন? এই হত্যার দায়দায়িত্ব তাকেই বহন করতে হবে। রাস্তার পাশে থামানো গাড়িতে গানপাউডার ছিটিয়ে ঘুমন্ত নিরীহ ড্রাইভারকে হত্যা করা হলো, এটা কোন ধরনের রাজনীতি। ৮৫ জন মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হবে— এটার বিচার হবে না।’
শামীম ওসমান আরও বলেন, ‘বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে নিয়াজুলের বড় ভাই নজরুল ইসলাম সুইটকে দিবালোকে কোনও অপরাধ ছাড়াই জেলখানা থেকে বের করে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। জেল হত্যার পর এটাই প্রথম জেলখানা থেকে বের করে এনে হত্যাকাণ্ড। দুঃখ হয়, যখন দেখি আওয়ামী লীগের নেতাই বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে তার গায়ে হাত দেন; তখন কষ্ট হয়।
শামীম ওসমান প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আমাদেরর রক্ত কি রক্ত না। আমরা মরলে কি আমাদের পরিবার কষ্ট পায় না। আমাদের রক্ত কি নর্দমার পানি। আপনাদের কাছেই এই বিচারের রায় দিলাম। ’
শামীম ওসমান বলেন, ‘এই সমাজে দুই শ্রেণির মানুষ আছে। একটা ভালো মানুষ, আরেকটা খারাপ মানুষ। ভালো মানুষগুলো আজ খুব অবহেলিত এবং পেছনের দিকে চলে যাচ্ছে। আর খারাপ মানুষের সংখ্যা অল্প। ৯৫ ভাগ ভালো মানুষকে পাঁচ ভাগ খারাপ মানুষ শোষণ করছে। সব সেক্টরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। তাই আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। তবে এই দায়িত্ব যুবসমাজের, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের। তাদের দায়িত্ব নিতে হবে— খারাপ মানুষদের পেছনে ফেলে ভালো মানুষদের সামনে এগিয়ে আনতে হবে।’
জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এম.এ রশীদ, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহিদ মোহাম্মদ বাদল, বন্দর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী অফিসার পিন্টু বেপারী ও জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক আবুল জাহের।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন