হল্যান্ডের মসজিদে মৌলবাদীদের হামলা
সাস নিউজ ডেস্ক : হল্যান্ডের একটি মসজিদে হামলা চালিয়েছে ইসলাম-বিদ্বেষী উগ্রবাদীরা। সম্প্রতি দেশটির রাজধানী আমস্টারডামের আমির সুলতান মসজিদ ওই হামলার শিকার হয়।
তাদের একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘ইসলাম প্রচার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে এবং আমরা মসজিদ চাই না’।
মসজিদটির পরিচালনা কমিটি এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। মুসলমানদের উত্তেজিত করাই ওই হামলার উদ্দেশ্য ছিল বলে মসজিদ-কমিটি এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে। বর্ণবাদীদের উস্কানিমূলক তৎপরতার ফাঁদ এড়িয়ে চলতে মুসলমানদের পরামর্শ দিয়েছে হল্যান্ডের ওই মসজিদ। হল্যান্ডের পুলিশ এ ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চালাবে বলে ঘোষণা করেছে।
হল্যান্ডের জনসংখ্যা এক কোটি ৭০ লাখ। দেশটির মুসলমানের সংখ্যা প্রায় নয় লাখ তথা মোট জনসংখ্যার মাত্র পাঁচ শতাংশ।
নানা পরিসংখ্যানে দেখা গেছে গত দুই বছরে হল্যান্ডে ইসলাম-বিদ্বেষী তৎপরতা লক্ষণীয় মাত্রায় বেড়েছে।
এর আগে তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় অবস্থিত হল্যান্ডের দূতাবাস এবং ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেট ভবন সিলগালা করে দিয়েছিল তুর্কি সরকার। দূতাবাস ও কনস্যুলেট ভবনে কাউকে ঢুকতে ও বের হতে দেয়া হচ্ছে না।
তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসওগ্লুকে বহনকারী বিমান নেদারল্যান্ডে নামতে না দেয়ার পর এ ব্যবস্থা নিয়েছিল আংকারা সরকার।
চাভুসওগ্লুকে রটেরডাম শহরে নামতে না দেয়ার কয়েক ঘণ্টা পর তুরস্কে নিযুক্ত হল্যান্ডের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্সকে তলব করা হয় এবং তারপরই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
তুরস্কের পররাষ্ট্র দফতর বলেছিল, নিরাপত্তার কারণে আঙ্কারায় হল্যান্ডের দূতাবাস এবং ইস্তাম্বুলের কনস্যুলেটে ঢোকার ওপর বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দূতাবাসের চার্জ দ্যা অ্যাফেয়ার্স এবং কনস্যুলেট প্রধান এ বিধি নিষেধের আওতায় পড়বেন বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে, হল্যান্ডের দূতাবাসের বাইরে তুর্কি বিক্ষোভকারীরা সমবেত হয়েছে। তারা তুর্কি জাতীয় সংগীত গাইছে এবং নেদারল্যান্ড-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছে তারা। ‘নেদারল্যান্ড অবাক হওয়ার কিছু নেই কিন্তু তুর্কি নাগরিকদের ধৈর্য পরীক্ষা করো না’, ‘বর্বর ইউরোপ’ এবং ‘স্বৈরাচার নেদারল্যান্ডকে চড়া মূল্য দিতে হবে’ প্রভৃতি শ্লোগান দিচ্ছে বিক্ষোভকারীরা।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানের হাতে ব্যাপক পরিমাণ ক্ষমতা দেয়ার জন্য দেশটির সংবিধানে পরিবর্তন আনতে আগামী ১৬ এপ্রিল গণভোট হতে যাচ্ছে। এজন্য নেদারল্যান্ডে বসবাসকারী তুর্কি নাগরিকদের সমর্থন আদায়ে চাভুসওগ্লু শনিবার রটেরডাম শহর সফরে যান। সেখানে রবিবার একটি সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে -এমন অজুহাত দেখিয়ে নেদারল্যান্ডের সরকার চাভুসওগ্লুর বিমান নামার অনুমতি প্রত্যাহার করে নেয়।
ডাচ সরকারের এ সিদ্ধান্তকে তুর্কি প্রেসিডেন্ট এরদোগান ‘নাৎসি মনোভাব’ বলে মন্তব্য করেন।
এছাড়া, সিএনএন টেলিভিশনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে চাভুসওগ্লু বলেছিলেন, ডাচ সরকার তাকে নামার অনুমতি না দিলে দেশটির বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে আঙ্কারা।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন