সীমান্তে বিএসএফ এর হত্যাকাণ্ড বেড়েই চলেছে
নিউজ ডেস্ক: অনেক বছর ধরেই ভারত প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে যে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা করা শূন্যে নামিয়ে আনা হবে। কিন্তু বাস্তবে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের হাতে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বেড়েই চলেছে।
আগামী ১৩-১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী বিজিবির সদরদফতর পিলখানায় দুই বাহিনীর মধ্যে মহাপরিচালক পর্যায়ে বার্ষিক বৈঠক হবে। এসময় বিএসএফকে তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার অনুরোধ আবারো জানাবে বিজিবি।
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. শাফিনুল ইসলাম বাংলাদেশ পক্ষের নেতৃত্ব দেবেন। আর ভারতীয় দলের নেতৃত্বে থাকবেন সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত বিএসএফের ডিজি রাকেশ আস্তানা।
বিজিপি কর্মকর্তারা বলছে, সীমান্ত হত্যাকাণ্ড হবে প্রধান আলোচ্য বিষয়। ভারতীয় পররাষ্ট্রসচিবের সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরের সময় সচিব পর্যায়ের বৈঠকের সময়ও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, আখাউড়ার একটি খাল দিয়েগৃহস্থালী, শিল্প, চিকিৎসা বজ্য বাংলাদেশে প্রবেশের বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে।
আইন ও সালিস কেন্দ্রের তথ্যে দেখা যায়, ২০১৮ সালে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ১৫ জন নিহত হয়েছে। গত বছর সংখ্যাটি বেড়ে হয় ৪৩। আর চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে বেড়ে হয়েছে ২৯।
বেশির ভাগ ভিক্টিমই ছিল নিরস্ত্র ও গুলিতে নিহত। এমনকি বৃহস্পতিরবার (১০ সেপ্টেম্বর) ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গিতে মাছ ধরার সময় বিএসএফ ৩০ বছর বয়স্ক এক বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অনেককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। বিএসএফ এক ভিক্টিমের মুখ ও পায়ুপথে পেট্রোল ঢেলে দিলে ওই লোক মারা যায়।
আরেক ভিক্টিমের সব নখ তুলে নেয়া হয়েছে। তার অপরাধ ছিল, সে অবৈধভাবে ভারতীয় এলাকায় প্রবেশ করেছিলেন।
২০০০ সাল থেকে সীমান্ত এলাকায় এক হাজারের বেশি বাংলাদেশী নিহত হয়েছে। ফলে অধিকারকর্মীরা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকে কিলিং ফিল্ড হিসেবে অভিহিত করেছে।
জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্রবিষযক কমিটির বৈঠকেও সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশকে ভারত আশ্বাস দিয়েছে যে এখনো সীমান্তে কেন লোকজন নিহত হয়, সে ব্যাপারে তারা তদন্ত করবেন।
তিনি কমিটিকে বলেন যে পররাষ্ট্রসচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা তাকে আশ্বস্ত করেছে যে তিনি ভারত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড নিয়ে আলোচনা করবেন।
বিজিবির পরিচালক (অপারেশন্স) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, সীমান্ত সংশ্লিষ্ট সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। আর অন্যতম বিষয় হবে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন