‘সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে আইএস সন্ত্রাসীরা’
সাস নিউজ ডেস্ক: রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর চিফ অব দ্যা জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরামিসভ বলেছেন, সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে প্রশিক্ষণের সুযোগ পাচ্ছে উগ্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস-সহ অন্য সন্ত্রাসীরা। সিরিয়াকে অস্থিতিশীল করে তোলার জন্য মার্কিন সেনারা এসব সন্ত্রাসীদের নির্দেশনা দিচ্ছে।
রাশিয়ার কমোসমোলস্কায়া প্রাভদা পত্রিকাকে দেয়া সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রুশ সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সিরিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় আত-থানফ শহরের কাছে একটি মার্কিন ঘাঁটিকে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে।
মার্কিন সেনা পরিচালিত আত-থানফ ঘাঁটির পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে রুশ সেনাপ্রধান বলেন, ‘স্যাটেলাইট চিত্র ও অন্যান্য তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে, সন্ত্রাসীরা ওই ঘাঁটিতে অবস্থান করছে এবং তারা সক্রিয়ভাবে সেখানে প্রশক্ষিণ নিচ্ছে।’
তিনি আরো অভিযোগ করেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় হাসাকা প্রদেশের শাদ্দাদাহ শহরের কাছে একটি শরণার্থী শিবিরকে সন্ত্রাসীদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
জেনারেল ভ্যালেরি বলেন, যেসব সন্ত্রাসী প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তারা আইএসের সদস্য; শুধুমাত্র তারা রং পাল্টেছে এবং এ অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করার জন্য ‘নিউ সিরিয়ান আর্মি’ এবং অন্য নামে সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করছে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জোর দিয়ে বলেছেন, সিরিয়ায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে রাশিয়া। ২৫ ডিসেম্বর রাতে রুশ জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে এই ঘোষণা দেন পুতিন।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধে এখন আর সিরিয়ার আগের মতো ব্যাপক সহায়তার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তারপরও সন্ত্রাস নির্মূল অভিযানে সিরিয়ার সেনাবাহিনীর পাশে থাকবে রাশিয়া।
সিরিয়া থেকে রাশিয়া তার বেশিরভাগ সেনা সরিয়ে নিলেও এখনো দেশটিতে রাশিয়ার দু’টি সামরিক ঘাঁটি বহাল রয়েছে। হামিমিমে রয়েছে রাশিয়ার বিমান ঘাঁটি এবং তারতুস বন্দরে রয়েছে একটি নৌঘাঁটি।
২০১১ সালে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র দেশগুলোর সমর্থনপুষ্ট উগ্র সন্ত্রাসীগোষ্ঠীগুলো সিরিয়ায় আগ্রাসন চালায়। মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতিকে ইহুদিবাদী ইসরাইলের অনুকূলে নেয়ার লক্ষ্যে ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছিল।
সিরিয়া সরকার তখনই সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা দেয়ার জন্য ইরান ও রাশিয়ার প্রতি অনুরোধ জানায়।
সম্প্রতি সিরিয়ার সেনাবাহিনী রাশিয়ার প্রত্যক্ষ সামরিক সহযোগিতা এবং ইরানের সামরিক উপদেষ্টাদের সহায়তায় উগ্র জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসকে পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছে। বর্তমানে সিরিয়ার কোনো শহর বা এলাকা আইএসের নিয়ন্ত্রণে নেই। কিন্তু তারপরও দেশটির দেইর আজ-জোর ও হোমস প্রদেশের মরুভূমিতে কিছু আইএস জঙ্গি ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন