সাড়ে ৬ কোটির রাস্তা ভেঙে গেল ৫ মাসেই
টাঙ্গাইল সংবাদদাতা: টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রায় সাড়ে ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাথরঘাটা-তক্তারচালার বাজার সংযোগ রাস্তা নির্মাণের পাঁচ মাসেই গাইডওয়ালসহ ভেঙে পড়েছে। সড়কের খলিয়াজানী গ্রামের মাতব্বর, অনিলের বাড়ির সামনে ও ব্রিজের কাছে চারটি স্থানে প্রায় ১০০ মিটার পাকা রাস্তা দেবে ও ভেঙে পড়েছে। এছাড়া সড়কের পাশে প্রায় ১০ বছর আগে নির্মিত গাইডওয়ালও ভেঙে পড়েছে। এতে ওই সড়কে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে।
এদিকে সড়ক নির্মাণের পাঁচ মাসেই ভেঙে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর এ নিয়ে ‘নিম্নমানের রাস্তা তৈরির প্রতিবাদ করায় এলাকাবাসীর ওপর হামলা’ শিরোনামে একটি সংবাদ ভাইরাল হয়। স্থানীয় প্রকৌশলী বিভাগের সমন্বয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে ওই রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ ছিল স্থানীয়দের।
জানা গেছে, গত বছরের শুরুতে ছয় কোটি ৪০ লাখ ৭৫ হাজার ৪২৯ টাকা ব্যয়ে ১২ ফুট প্রস্থ ও ৯ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য পাথরঘাটা-তক্তারচালা সড়কটি রাস্তাটি বাস্তবায়ন করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর। রাস্তাটি বাস্তবায়নের কাজ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সৈয়দ মজিবুর রহমান অ্যান্ড অরনি এন্টারপ্রাইজ (জেভি)। রাস্তার কাজ শুরু হলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। নিম্নমানের ইট, বালু, খোয়া, বিটুমিন কম ব্যবহারসহ রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক কারচুপির আশ্রয় নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
এছাড়া প্রায় ১০ বছর আগে রাস্তার পাশে নির্মিত গাইডওয়ালের পাশ থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সড়কে দেয়া হয়। তাছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক রাস্তার পাশে স্থানীয় কৃষকের জমির মাটি কেটে রাস্তার পাশে দেয়। রাস্তার উভয় পাশে তিন ফুট করে সোলডার এবং সিমেন্ট ও বালু মিশিয়ে জিও ব্যাগ ভরে সোলডারের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দেয়ার কথা থাকলেও মাটি ও বালুভর্তি করে ফেলে তারা।
আর এসব অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারের লোকজন ওই সময় তাদের মারধর করে এবং স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইজ্জত আলী জনির বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ আনেন। রাস্তা নির্মাণের পাঁচ মাসেই কার্পেটিং দেবে ও ভেঙে যাওয়ায় যেন সাক্ষ্য দিল স্থানীয়দের পূর্বের সব অভিযোগের।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন