সবজির দাম চড়া
নিজস্ব প্রতিবেদক: চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুনের সঙ্গে রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সবজি। আলু, পটল, বেগুন বরবটি, ঢেঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙ্গা, করলা, পেঁপেসহ প্রায় সব ধরনের সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট আরও বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের পর প্রথম দিকে সবজি চাহিদা কম ছিল। তবে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ার পর থেকেই সবজির দাম বাড়তে থাকে। কয়েক দফা দাম বেড়ে এখন বেশিরভাগ সবজির কেজি ৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। একাধিক সবজির কেজি একশ টাকাও ছুঁয়েছে।
সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, লকডাউনর প্রেক্ষিতে ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মে পর্যন্ত টানা ৬৬ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। এ সময় সবজির চাহিদা তুলনামূলক কম ছিল। তবে সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ার পর সবজির চাহিদা বেড়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। এসব কারণেই সবজির দাম বেড়েছে।
শুক্রবার বিভিন্ন কাঁচাবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মান ও বাজার ভেদে বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০-১০০ টাকা। রোজার শুরুতেও বেগুনের কেজি একশ টাকা ছুঁয়েছিল। তবে ঈদের পর কয়েক দফা দাম কমে বেগুনের কেজি ৩০-৪০ টাকার মধ্যে চলে আসে।
একশ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আর এক সবজি গাজর। লকডাউনর শুরুতে গাজরের কেজি ছিল ১০-২০ টাকার মধ্যে। এমনকি রোজার মধ্যেও গাজরের কেজি ১০-২০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু ঈদের পর থেকেই গাজরের দাম বাড়তে থাকে। কয়েক দফা দাম বেড়ে এখন গাজরের কেজি মানভেদে ৮০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঈদের পর অস্বাভাবিক দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটোও। গাজরের মতো লকডাউনর শুরুতে এবং রোজায় পাকা টমেটোর কেজি ছিল ১০-১৫ টাকার মধ্যে। এখন পাকা টমেটোর দাম বেড়ে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা।
একশ টাকা কেজি ছুঁই ছুঁই করছে বরবটিও। বাজার ভেদে বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা। অবশ্য দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বরবটির কেজি ৫০ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। সে হিসেবে সবজির চড়া বাজারে বরবটির দাম তুলনামূলক কম বেড়েছে।
রামপুরার বাসিন্দা আশরাফুল বলেন, কিছুদিন আগে নতুন ধান উঠেছে। এরপরও বেড়েছে চালের দাম। এর সঙ্গে ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুনসহ প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। আর এখন সবজির দামে তো রীতিমত আগুন লেগেছে। পরিস্থিতি এমন সবজিতে হাত দেয়ার অবস্থা নেই। লকডাউনের কারণে এমনিতেই কষ্টে আছি, এখন সবজির যে দাম তাতে আমাদের অবস্থান খারাপ।
রিকশা চালক মতিন বলেন, পেটের দায়ে লকডাউনের মধ্যেও রিকশা নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু আয় তেমন হয়নি। জমানো যে টাকা ছিল তা শেষ। এখন লকডাউন উঠলেও ভাড়া তেমন হচ্ছে না। আমরা কী কষ্টে আছি বলে বোঝানো যাবে না। একদিকে আয় নেই, অন্যদিকে সব কিছুর দাম চড়া। আস্তে আস্তে অবস্থা এমন দাঁড়াচ্ছে লকডাউনে না মরলেও, না খেয়ে মরতে হবে।
তিনি বলেন, পরিবার নিয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছি। বেশিরভাগ দিন দুপুরে ভাত খাই না। সকাল রাতেও ঠিকমতো খাওয়া হয় না। চিন্তায় চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতেও পারি না। সংসারেও নানা অশান্তি লেগে আছে।
সবজির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আলামিন বলেন, গত এক সপ্তাহে সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। সাধারণ ছুটি তুলে নেয়ায় রাজধানীতে মানুষের সংখ্যা বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে কেনাকাটাও। সব মিলিয়ে সবজির দাম বেড়েছে। আমাদের ধারণা সামনে সবজির দাম আরও বাড়বে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন