রূপপুরে অনিয়মের সত্যতা, ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্রিন সিটি প্রকল্পে সরকারি জিনিসপত্র কেনাকাটায় দুর্নীতি বিষয়ে তদন্তে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি। এতে প্রকল্প এলাকার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিছানা, বালিশ ও আসবাবপত্র কিনতে অস্বাভাবিক মূল্যে ধরার অভিযোগের সত্যতা রয়েছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানান। সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমরা তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়েছি। বিভিন্ন জনের বিষয়ে সুপারিশ রয়েছে। তবে যেহেতু এটি আদালতে জমা দেব, তাই প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়ার আগে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
সূত্রে জানা গেছে, কেনাকাটার হিসাবে মালামালের প্রকৃত মূল্য থেকে ৩৬ কোটি ৪০ লাখ ৯ হাজার টাকা বেশি দেখানো হয়েছে। এ অনিয়মের সাথে জড়িত নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ আলমসহ অর্ধশত কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে অতিরিক্ত টাকা সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
এর আগে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে এ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
গত ২ জুলাই প্রকল্পের কেনাকাটার অনিয়ম হয়েছে কি না -এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে দুই সপ্তাহ সময় বেঁধে দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে রুল জারি করেন আদালত। রুলে সরকারি জিনিসপত্র কেনাকাটায় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে সংশ্লিষ্টদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না -তা জানতে চাওয়া হয়।
চার সপ্তাহের মধ্যে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব, গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী, রাজশাহীর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলী এবং রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
জনস্বার্থে দায়ের করা -এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোরওয়ার্দীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে আজ (১৫ জুলাই, সোমবার) সংশ্লিষ্টদের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
আদালতে ওইদিন রিটের পক্ষে শুনানি করেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। এছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।
আদেশের পর রিটকারী আইনজীবী সুমন সাংবাদিকদের বলেন, ‘রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় নির্মাণাধীন ভবনে আসবাবপত্র বিশ্বস্ততার সঙ্গে কেনা ও উত্তোলনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না -তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় করা দুটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল এবং প্রতিবেদন অনুসারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সেই বিষয়টি দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন