পশ্চিমবঙ্গে রাস্তার কুকুর খুনের অভিযোগে পুলিশের দ্বারস্থ কুকুরপ্রেমীরা
সাস নিউজ ডেস্ক: একটি কুকুরের মৃত্যুতে দিনভর তোলপাড় বর্ধমান শহর। বন দপ্তর, প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন দপ্তর তো বটেই, থানাতেও ছুটলেন একদল পশুপ্রেমী তরুণ-তরুণী। তাঁদের দাবি, কুকুরটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। দোষীদের শাস্তি দিতে হবে। তবে সুরাহা কিছুই হয়নি। কিন্তু হাল ছাড়তে নারাজ পশুপ্রেমীরা। আপাতত সারমেয়র মৃতদেহটি নিজেদের কাছে রেখে দিয়েছেন তাঁরা।
বর্ধমান শহরের জোড়ামন্দির এলাকার বাসিন্দা রমা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্ধমান উইমেনস কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী রমা। আর তাঁর ভাই অয়ন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এলাকায় দু’জনেই পশুপ্রেমী বলে পরিচিত। রোজ সকালে নিয়ম করে রাস্তার কুকুরদের খাবার দেন ভাই-বোন। শুক্রবার সকালে খাবার দিতে গিয়ে তাঁরা খেয়াল করেন, একটি কুকুর নেই। শুরু হয় খোঁজ। রাস্তার পাশেই ওই কুকুরটির রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান রমা ও অয়না। আশেপাশের লোকজনকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, গাড়ির ধাক্কায় মারা গিয়েছে সারমেয়। কুকুরটির দেহের পাশে একটি লাঠি পড়েছিল। তাতে রক্তের দাগও ছিল। রমা ও অয়নের দাবি, পথ দুর্ঘটনায় নয়, কুকুরটি পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। ছবি-সহ গোটা ঘটনাটি ফেসবুকে পোস্ট করে দেন অয়ন। আর তাতেই শোরগোল পড়ে যায়। বর্ধমান শহরের জোড়ামন্দির এলাকায় যান পশুপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা। কুকুরের মৃতদেহটি নিয়ে প্রথমে বর্ধমান থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করতে যান পশুপ্রেমীরা। কিন্তু কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়ে দেন, পশু সংক্রান্ত বিষয়টি দেখে বন দপ্তর। এক্ষেত্রে পুলিশের কিছু করার নেই। কিন্তু তাতেও হাল ছাড়েননি অয়ন, রমা ও তাঁদের সঙ্গীরা। থানা থেকে সোজা বন দপ্তরের অফিসে হাজির হন তাঁরা। কিন্তু বনকর্মীদের কাছ থেকেও কোনও সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ। শেষপর্যন্ত কুকুরের মৃত্যুর সুবিচারের আশায় প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের দ্বারস্থ হন পশুপ্রেমীরা। কিন্তু সেখানেও নিরাশ হতে হয় তাঁদের। শুক্রবার ছিল গুড ফ্রাইডে। তাই বর্ধমানে প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের অফিস বন্ধ ছিল।
দিনভর বিস্তর ছোটাছুটি করেও লাভ হয়নি। কিন্তু, তাতে কী! অয়ন, রমারা জানিয়েছেন, শনিবার থেকে ফের কুকুরের মৃত্যুর ঘটনায় সুবিচারের জন্য লড়াই শুরু করবেন তাঁরা। বস্তুত মৃতদেহটি কবর দেননি তাঁরা। নিজেদের কাছেই রেখে দিয়েছেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন