বোরো পরবর্তী কৃষিতে ব্যাপক গুরুত্ব সরকারের
নিজস্ব প্রতিবেদক: বোরো পরবর্তী কৃষিকে ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এ জন্য আউশ ধান, হাইব্রিড ধান, পাট, শাক-সবজি, ডালজাতীয় শস্য ও ফলমূল আবাদে বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়। কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে কৃষির যান্ত্রিকীকরণ, বাজারজাতকরণ ও বিপণনে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
লকডাউনের কারণে যেন খাদ্য সংকট না হয়, দেশে যেন দুর্ভিক্ষের মতো কোনো অবস্থা সৃষ্টি না হয়, সেজন্যই এসব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি ও কৃষি উদ্যোগে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ করে থাকে বাংলাদেশ পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)। সংস্থাটির পক্ষ থেকে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে দেশে কৃষি খাতে লকডাউন পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে ইতোমধ্যে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। সেখানে মার্চ-এপ্রিল মাসের কৃষি খাতের সংকটের চিত্র তুলে ধরে বলা হয়, ‘আগামী জুন থেকে আগস্ট এই সময়ে কৃষির বিপদের প্রভাব আরও স্পষ্ট হবে। দেশের সামগ্রিক খাদ্য সরবরাহব্যবস্থার ওপর এর প্রভাব পড়তে শুরু করবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলছেন, এক ইঞ্চি জমি যেন পড়ে না থাকে। যে যেভাবেই পারেন প্রতিটি ইঞ্চি জায়গার সদ্ব্যবহার করবেন। বাড়ি উঠানে, আশপাশে তরিতরকারি, ফল-মূলের গাছ লাগালেও পরিবারের কাজে লাগবে। অনেকে বিক্রি করে কিছু পয়সার মুখ দেখবেন। এ ছাড়া কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য প্রধানমন্ত্রী কৃষিমন্ত্রীকেও বিশেষভাবে নজরদারি করতে বলেছেন।
কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, বোরো ধানের পর প্রতিবারই আউশ ধান উৎপাদনের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়। এবার সেই পদক্ষেপ আরও জোরোশোরে নেয়া হয়েছে। আউশ ধানের বিষয়ে সাধারণত প্রতিবছর ৩০ লাখ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এবার আসন্ন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা হলো ৩৫ লাখ টন। সেজন্য আসন্ন আউশ মৌসুমে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সেচের রেট ৫০ শতাংশ হ্রাসের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে এবং ৬ হাজার ৫০০ টন হাইব্রিড ও উফশি জাতের বীজ ইতোমধ্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার চরপাড়া গ্রামের কৃষক আকিমুদ্দিন শেখ জানান, বোরো ধান কাটার পরপরই আউশ ধান আবাদ করার জন্য অনেকেই বীজতলা তৈরি করে বীজ ফেলেছেন। ধান কাটা শেষ হওয়ার পর জমি চাষ দিয়ে সাথে সাথে আউশ ধান চাষ করা হবে। আউশ ধানসহ পাট, গ্রীষ্মকালীন টমেটো, সবজি ও অন্যান্য ফসল আবাদ করার জন্য স্থানীয় কৃষি অফিস থেকে তাগাদা দেয়া হচ্ছে।
কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাষযোগ্য প্রতি ইঞ্চি জমিতে ফসল ফলানোর প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ৬ হাজার ৫০০ টন হাইব্রিড ও উফশি জাতের বীজ ইতোমধ্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। করোনাকালীন সাধারণ ছুটির সময় কৃষি কার্যক্রম সক্রিয় রাখতে কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন