শরীয়তপুর সংবাদদাতা: দুই বছরের ব্যবধানে বেবি তরমুজ চাষে আগ্রহ বেড়েছে জাজিরা উপজেলার চাষিদের। তরমুজ চাষ করে সফল হয়েছেন উপজেলার প্রায় ৬০ চাষি। কোনো পোকার আক্রমণ না থাকায় সফল হয়েছেন তারা।
জানা গেছে, শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মূলনা ইউনিয়নের মিরাশা গ্রামের মামুন শেখ পরিত্যক্ত আট শতাংশ জমিতে পরীক্ষামূলক চাষ করেন বেবি তরমুজ। ৭০ দিনে ফল বড় হতে শুরু করে। প্রথমে ভয় থাকলেও ফলন আসার পর মুখে হাসি ফোটে তার। তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর, তেমন খেতেও সুস্বাদু। তাই এ তরমুজের চাহিদা অনেক। ইতিমধ্যে একেকটি তরমুজের ওজন দুই থেকে আড়াই কেজি হয়েছে। বর্তমানে ক্ষেতে রয়েছে প্রায় এক হাজার তরমুজ। বাজারে প্রতিকেজি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
তিনি জানান, এক সময় ধান চাষ করতাম। ধানে তেমন লাভ না হওয়ায় বিকল্প চিন্তা শুরু করি। এক পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তারা তরমুজ চাষে উৎসাহ দেন। পরে প্রশিক্ষণ ও বিনামূল্যে বীজ পেয়ে চাষ শুরু করি।
তিনি আরও জানান, প্রথমে পরিবারের সদস্যরা বাধা দেয়। কিন্তু সব বাধা পেছনে ফেলে মাত্র ৭০ দিনে সফলতা পান। এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি। আরও ৬০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
স্থানীয় কৃষকরা বলেন, কম খরচ ও পরিশ্রমে এত লাভ হয়, আগে জানতাম না। আগামীতে আমরা ব্যাপকভাবে এ তরমুজ চাষ করবো।
এসডিএস এনজিওর কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ খাজি আলম জানান, শরীয়তপুরের এসডিএসের বাস্তবায়িত এবং পল্লীকর্ম সহায়ক অর্থায়নে দুই বছর ধরে অত্র অঞ্চলের কৃষকদের বেবি তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। ফসলটি দ্রুত বর্ধনশীল। অল্প সময় চাষাবাদ সম্ভব। জাজিরা উপজেলায় প্রায় ৪০-৫০ কৃষক তরমুজ চাষ করে লাভবান হয়েছেন। আগামীতে এর চাষ আরও বাড়বে।
জাজিরা উপজেলা কৃষি অফিসার জামাল হোসেন বলেন, উপজেলায় এ বছর ৮ হেক্টর জমিতে প্রায় ৬০ কৃষক বেবি তরমুজ চাষ করেছেন। ভলো ফলনও পাচ্ছেন তারা। এছাড়া ভেদরগঞ্জ উপজেলায় ৯ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ করা হয়েছে। আমরা প্রদর্শনের মাধ্যমে বারমাসি বেবি তরমুজের উদ্যোগ নিয়েছি। তাছাড়া কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করছি। দুই বছরেই এ ফসল বিস্তার লাভ করেছে।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আমির হামজা জানান, এ তরমুজের চাষ বেড়েছে। মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় বেবি তরমুজ চাষে কৃষকরা সফল হয়েছেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন