বিশেষজ্ঞ মহলের মিশ্র প্রতিক্রিয়া: প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির চেষ্টায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সেমিনার
নিউজ ডেস্ক: প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির জন্য ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে আয়োজিত একটি প্রমোশনাল কার্যক্রম নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গত বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় ভারতীয় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিষয়ক উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনসহ ভারতীয় হাইকমিশনার রিভা গাঙ্গুলি দাসও বক্তব্য রাখে। ভারতীয় হাইকমিশন আয়োজিত সেমিনারে ভারতের ১২টি প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেয় বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ভারতীয় ঋণের আওতায় বাংলাদেশে সেখানকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির লক্ষ্য নিয়ে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
বাংলাদেশে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সফরের দুই সপ্তাহ আগে এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় সফরের চার সপ্তাহ আগে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হলো। এতে সামরিক ও বেসামরিক সিনিয়র কর্তকর্তারা অংশ নিয়েছে।
২ মার্চ ঢাকা আসার কথা রয়েছে শ্রিংলার। সে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সফরের ক্ষেত্র প্রস্তুত করবে। ১৬-১৮ মার্চ বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে নরেন্দ্র মোদির।
গত বছর ২০ আগস্ট ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বাংলাদেশকে অনুরোধ করে যেন বাংলাদেশ ভারতের দেয়া ঋণ ব্যবহার করে তাদের কাছ থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনে।
বৈঠকের পর মোমেন তার দফতরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বাংলাদেশকে প্রতিরক্ষা ক্রয়ের জন্য ভারত ৫০০ মিলিয়ন ডলার ‘লাইন অব ক্রেডিট’ দেবে বলে যে সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে তা ব্যবহার করার জন্য তারা [ভারত] আমাদেরকে অনুরোধ করেছে।
এ লক্ষ্যে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ কাজ করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, প্রতিরক্ষা এমওইউ’র আওতায় আমরা এখনো কিছু কিনিনি।
২০১৭ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে গেলে এই এমওইউ সই হয়। এতে বলা হয় যে বিক্রেতার ঋণ ব্যবস্থায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনতে বাংলাদেশকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার দেবে ভারত।
বিশেষজ্ঞ মহলের মতে, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম বিক্রির চেষ্টায় ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের এ ধরণের সেমিনার অনভিপ্রেত। যা বাংলাদেশের দায়িত্বশীল মহলকে বিশেষভাবে প্রভাবিক করার কৌশল। এর আগেও ভারত থেকে নিম্নমানের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম আনতে অপরাগতা জানায় সশস্ত্র বাহিনী। কিন্তু এবার তারা অনেকটাই কৌশল ও চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভারতীয় ‘নিম্নমানের’ অস্ত্রপাতি আনতে এ ধরণের সেমিনারের আয়োজন করছে বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন