বাড়ছে চীনা পণ্যের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক: চীনে প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের অজুহাতে দাম বাড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশেও। যোগাযোগ অনেকটা বিচ্ছিন্ন থাকায় বন্দরে আসছে না চীনা পণ্য। যার প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের স্থানীয় বাজারে।
গত রোববার থেকে বাংলাদেশে চীনা নাগরিকদের অন অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করা হয়েছে। যদিও স্বাস্থ্যগত রিপোর্ট দেখানো সাপেক্ষে নিয়মিত ভিসায় আসা-যাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এরপর চীন থেকে কয়েকজন বাংলাদেশে ফেরত এলেও সংক্রমণের আশঙ্কায় অধিকাংশই সেদেশে রয়ে গেছে।
জানা যায়, চীনে করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে দেশের বড় বড় ব্যবসায়ীরা চীন যাচ্ছে না। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চীনের পণ্যও আসতে পারছে না। ফলে আগে যেসব পণ্য ১০০ থেকে ১১০ টাকায় পাওয়া যেতে সেগুলো এখন খুচরা বিক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে ১৫০-১৮০ টাকায়। আবার যেসব পণ্য ২০০ টাকায় পাওয়া যেতে সেগুলো কিনতে হচ্ছে ২৫০ টাকায়। আর এর প্রভাব পড়ছে সাধারণ ক্রেতাদের উপর।
শুক্রবার রাজধানীর অন্তত ১০টি মার্কেট ঘুরে এমন তথ্যই পাওয়া যায়।
রাজধানীর নবাবপুর এলাকার অধিকাংশ পণ্য আসে চীন থেকে। বিশেষ করে ইলেক্ট্রনিক্স, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও মেসিনারিজ জিনিসপত্র পাওয়া যায় এখানে। নবাবপুরে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছেন হাসান মাহমুদ। তিনি সিনোড এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের খবরের পর থেকে চীন থেকে পণ্য আসা বন্ধ রয়েছ। এখন বড় বড় মজুতদারদের কাছে কিছু পণ্য আছে। আবার কিছু পণ্য কারো কাছেই পাওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, যাদের কাছে পণ্য আছে, তারা পণ্যের দাম ১০ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে দিয়েছেন। যার কারণে গ্রাহক পর্যায়ে সেগুলো বিক্রি করতে কষ্ট হচ্ছে। কারণ, গ্রাহক আগের দামেই পণ্য পেতে চান। আশা করছি আগামী এপ্রিল নাগাদ এ সমস্যা অনেকাংশে কেটে যাবে।
ফার্মগেটের চৌরাঙ্গী সুপার মার্কেটে নিউ অ্যানটিক টেলিকমের সত্ত্বাধিকারী মহসিন বলেন, ‘আমরা আগে যে এলসিডি ৯০ থেকে ১০০টাকা দিয়ে কিনেছি সেটি এখন কিনতে হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। একই সঙ্গে মোবাইল একসেসরিসেও পণ্য প্রতি ১০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। এখন যেটি বেশি দামে কিনছি সেটি গ্রাহক পর্যায়ে বেশি দামে বিক্রি করছি। যেটি কমে কিনতে পারছি সেটি কমেই বিক্রি করছি। তবে দাম বৃদ্ধিতে গ্রাহকে কিছু ভাটা পড়েছে।’
মোবাইল ফোন, ঘড়িসহ বিভিন্ন মোবাইল ও ল্যাপটপ একসেসরিস বিক্রি করেন মাহবুব প্লাজার প্রাইমা ইলেক্ট্রনিক্সের সত্ত্বাধিকারী খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ‘এ ফাঁকে কিছু মজুতদার কোটিপতি হয়ে যাবে। কম দামে এনে সুযোগ বুঝে বেশি দাম দিয়ে রেখেছে। আমাদেরতো তাদের থেকে কিনতেই হবে। আর দাম বেশি হওয়াতে সাধারণ গ্রাহক পর্যায়েও বিক্রিতে ভাটা পড়ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
মিরপুর ১০ নম্বরে হাজী আলী শপিং কমপ্লেক্সে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের দোকান ইমরানের। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, গত ১০ দিন ধরে মোবাইল একসেসরিজের সকল পণ্েযর মূল্য প্রায় ২০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। আগে মোবাইলে যে ডিসপ্লে কেনা হতো ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, এখন সেটি সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। শুনেছি পাইকারি বাজারে দাম আরো বাড়বে।
‘চায়না থেকে এখন আর মালামাল আসছে না। পাইকারি বাজারে মজুত থাকা মালামাল দিয়ে আপাতত চালানো হচ্ছে। তবে এ মজুত শেষ হয়ে গেলে এসব পণ্যের দাম আকাশচুম্বি হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন