বাংলাদেশ সীমান্তে পুলিশ বাহিনীতে সেনা অফিসারদের বদলি করছে মিয়ানমার
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মিয়ানমার কথিত ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’গুলোকে মোকাবেলার জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া রাখাইন রাজ্যের বর্ডার পুলিশ বাহিনীতে ৫১ জন সেনা অফিসারকে বদলি করেছে। সরকারি মুখাপাত্র উ জাও তায় এ কথা জানিয়েছে।
মুখপাত্র জানান, আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান আর্মি (এএ)-কে মোকাবেলার জন্য রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত রক্ষা বাহিনী ‘বর্ডার পুলিশ’কে শক্তিশালী করতে দুটি নতুন পুলিশ ব্যাটালিয়ন গঠন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এসব অফিসারকে বদলি করা হয়।
উক্ত দুটি সংস্থাকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে সরকার। গ্রুপ দুটির কাছ থেকে এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করতে পারেনি এই সংবাদ মাধ্যম।
মুখপাত্র বলেন, প্রয়োজনের তাগিদে ক্যাপ্টেন থেকে লে. কর্নেল পর্যন্ত ৫১ জন অফিসারকে সীমান্ত রক্ষা বাহিনীতে বদলি করা হয়েছে। মন্ত্রিসভা এই বদলি অনুমোদর করেছে।
তিনি আরো বলেন, আরসা ও এএ’র মোকাবেলা করবে রাখাইন রাজ্যের সীমান্ত পুলিশ। এসব সংগঠন নিজেদের দাবি আদায়ে যুদ্ধ করতেই বদ্ধপরিকর।
পুলিশ বাহিনীতেও একই র্যাংকের অধিকারী হবেন বদলি হওয়া অফিসাররা।
তায় বলেন, মিলিটারির নিয়োগ দফতর থেকে এরই মধ্যে বদলির আদেশ দেয়া হয়েছে।
২০০৮ সালের সংবিধানে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে পুলিশ বাহিনী নিয়ন্ত্রণের পূর্ণ কর্তৃত্ব দেয়া হয়েছে।
আরেক মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রায়ই অভিযানে অভিজ্ঞ নিরাপত্তা সদস্যদের পুলিশ বাহিনীতে নিয়োগ দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, সিনিয়ার তাতমাদাও (মিলিটারি) নেতারা এ ব্যাপারে ঘনিষ্ঠ নজর রাখেন এবং তারাই নির্বাচন করেন। সামরিক বাহিনীতে যারা অভিযানে পারদর্শী, ভালো নৈতিক ও শৃঙ্খলাগত মান রয়েছে তাদেরকেই নির্বাচন করা হয়। সীমান্তে অঞ্চলের ব্যাপারে যাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদেরকেও বাছাই করা হয়।
জেনারেলের মতে, ওই এলাকায় এএ ও আরসা সক্রিয়। ফলে সেনা অফিসারদের সেখানে বদলি করায় নিরাপত্তা পরিস্থিতির উপর আরো জোরদার নজর দেয়া যাবে এবং অভিযান আরো কার্যকর হবে।
সংঘাত কবলিত রাখাইন রাজ্যে গত দুই বছর ধরে এএ’র সঙ্গে লড়াইয়ে বর্ডার পুলিশ প্রায়ই টার্গেট হচ্ছে।
গত বছর এই রাজ্যে অন্তত ২০ বর্ডার পুলিশ নিহত হয়। সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রেসিডেন্টের জরুরি তহবিল থেকে প্রায় ৫.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করা হয়। নিরাপত্তা সরঞ্জাম সংগ্রহ, সীমান্তে বেড়া নির্মাণ, রাখাইন রাজ্যের থানা ও পুলিশের চৌকিগুলো ঘিরে বেড়া নির্মাণের জন্য এই অর্থ দেয়া হয়।
তুন আরো বলেন: শুধু অফিসার নয় সেনাবাহিনী থেকে অনেক কর্পোরাল ও সার্জেন্টকেও সীমান্ত পুলিশে বদলি করা হয়েছে।
সীমান্ত পুলিশ হলো সেনা নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
মিয়ানমারের পুলিশ বাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল অং উইন ও নিজেও ডিফেন্স সার্ভিস একাডেমি থেকে গ্রাজুয়েট। তিনি ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্টে পুলিশের কর্নেল হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন।
তার ডেপুটি পুলিশ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অং অংও সেনা অফিসার।
এই সংবাদ মাধ্যম খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছে যে সীমান্ত পুলিশের ক্যাপ্টেন থেকে শুরু করে উপরের দিকে র্যাংকের সবাই সাবেক সামরিক অফিসার।
সূত্র: দ্য ইরাবতি
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন