ফুলের চারা বিক্রি করে লাভবান চাষিরা
কুষ্টিয়া সংবাদদাতা: কুষ্টিয়ার নার্সারিগুলোতে শীতকালীন ফুলের চারা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে চাষিরা। শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নার্সারিগুলোতে ফুলের চারা বেচা-বিক্রি বেড়ে গেছে। ফুলের চারা পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা।
নার্সারিগুলোতে শীতকালীন বিভিন্ন ফুলের চারা বিক্রি করা হচ্ছে। এরমধ্যে গোলাপ, ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, সিলভিয়া, ক্যালেন্ডুলা, পাপিয়া, সূর্যমুখী, জারবেরা, গ্ল্যাডিওলাস, দেশি গাঁদা, রক্ত গাঁদা, হলুদে লাল মিশানো জাম্বো গাঁদা, বড় ইনকা গাঁদা, ছোট চায়না গাঁদা প্রভৃতি।
নার্সারির মালিক পারভেজ হাসান জয় বলেন, এইসব ফুলের চারা ও বীজ যশোর গদখালী, ঝুমঝুমপুর, বাসুদেবপুর, বগুড়ার মহেস্থান গড় ও বরিশাল থেকে সংগ্রহ করা হয়। এ বছর মোকাম থেকে প্রায় দেড় লাখ টাকার চারা কেনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াই লাখ টাকার ফুলের চারা বিক্রি হয়েছে। এখনও ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফুলের চারা বিক্রি হবে। আশা করছি ভালো বেচাকেনা হবে।
তিনি আরও বলেন, বছরের অন্য সময় ফুলের চারা তেমন বিক্রি হয় না। তবে শীত মৌসুমে ফুলের চারা বিক্রি বেশি হয়। অক্টোবর থেকে ফুলের চারার জন্য জায়গা প্রস্তুত শুরু করেছি। এরপর চার মাস শীতকালীন ফুল বিক্রি হয়। ফুল চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছি। সেখান থেকে সরকারিভাবে কোনও বীজ পাইনি। বীজ পেলে ফুলের চারা বিক্রি করে আরও লাভবান হাওয়া যেত।
মিরপুর জিয়া সড়কে অবস্থিত এসআর গার্ডেন সেন্টারের মালিক এ রহমান জানান, এবার আড়াই বিঘা জমিতে প্রায় ২০ প্রজাতির ফুলের চারা রোপণ করা হয়েছে। এসব ফুলের চারা ও বীজ বাইরে থেকে সংগ্রহ করতে হবে। এরপর সেগুলো নার্সারিতে রোপণের পর পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করা হয়।
তিনি আরও জানান, প্রায় চার মাস শীতকালীন ফুলের চারার ব্যাবসা হয়। এবছর ফুলের চারার বেশ চাহিদা রয়েছে। আমার নার্সারিতে প্রতিদিন চারজন শ্রমিক কাজ করে। ফুলের চারা বিক্রি করতে কষ্ট করতে হয় না। নার্সারিতে এসে ব্যাপারিরা ফুলের চারা কিনে নিয়ে যায়। আবার খুচরাও বিক্রি হয়।
ফুলের চারার খুচরা বিক্রেতা আমজাদ হোসেন বলেন, আমরা নার্সারি থেকে পাইকারি ফুলের চারা সংগ্রহ করে শহর এলাকায় বিক্রি করি। বিক্রি ভালো হলে লাভ বেশি হয়। বিক্রি খারাপ হলে লাভ কম হয়। তবে প্রতিদিন চারা বিক্রি করে দুইশ’ থেকে পাঁচশ’ টাকা পর্যন্ত লাভ থাকে। এতে আমাদের সংসার ভালোই চলে।
জেলা নার্সারি মালিক সমিতির সেক্রেটারি আশরাফুল গণি সান্টু বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় প্রায় ৪১টি নার্সারি রয়েছে। এসব নার্সারিতে বিভিন্ন ফুল, কাঠ ও ফলের চারা উৎপাদন করা হয়। তবে নার্সারি মালিকরা সরকারি কোনও সুযোগ-সুবিধা পায় না। এমনকি কোনও ঋণ সুবিধাও পায় না। সব কিছুই নিজেদের অর্থায়নে করতে হয়।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক জানায়, কুষ্টিয়ায় অনেক বেসরকারি নার্সারি রয়েছে। তবে সেগুলো কৃষি বিভাগের আওতার বাইরে। এছাড়াও জেলার একটি সরকারি নার্সারি রয়েছে। সেখানে বিভিন্ন জাতের চারা উৎপাদন করা হয়। তবে সেটি আকারে অনেক ছোট। সরকারিভাবে এখনও বড় কোনও নার্সারি গড়ে উঠেনি।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন