প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র বিক্রি করতে চায় যুক্তরাজ্যের এমবিডিএ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, এমবিডিএ মিসাইল সিস্টেম্বের উপর এক ব্রিফিংকালে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা রিয়ার এডমিরাল চার্লিয়ার ও সেখানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও সশস্ত্র বাহিনীর অন্যান্য শাখার কাছে বিক্রির জন্য যুক্তরাজ্যের এমবিডিএ বাংলাদেশের একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন প্রতিনিধিদলের কাছে নিজেদের পণসম্ভারের পোর্টফোলিও উপস্থাপন করেছে ।
এসময় ইউরোপিয়ান ডিফেন্স সিস্টেম জায়ান্টটি সিএএমএম (কমন অ্যান্টি-এয়ার মডুলার মিসাইল)-এর সি সেপ্টর ভ্যারিয়েন্ট সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়। এটা হলো সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল পরিবারের একটি সিরিজ।
সহযোগিতার ধারা প্রতিষ্ঠার জন্য ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রশিদ ১৬ সেপ্টেম্বর এমবিডিএ সিস্টেম অফিস পরিদর্শন করেন।
এমবিডিএ’র দাবি, সিএএমএম’র বিশাল টার্গেট রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ছোট যুদ্ধজাহাজ ধ্বংসের সক্ষমতা। এটি সীমিত আকারে ক্ষেপণাস্ত্রটিকে ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপের ভূমিকা দেবে।
সিএএমএমের পাল্লা ১-২৫ কিলোমিটারের মধ্যে। এর গতি ৩ ম্যাচ। এটি দুটি ডাটা লিঙ্ক দ্বারা পরিচালিত ও অ্যাক্টিভ আরএফ (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি) সিকার। অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার জন্য এটি মাঝারি ও বৃহৎ রণতরীতে মোতায়েনের উপযোগী। এটি সুপারসনিক অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ মিসাইল, বিমান ও অন্যান্য উচ্চ ক্ষমতার হামলা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সক্ষম।
এটি কাজ করে মাল্টিপল চ্যানেল অব ফায়ারের মাধ্যমে। একই সঙ্গে ৩৬০ ডিগ্রি কভারেজ ও উচ্চ-মানের ম্যানুভারেবিলিটি প্রদান করে। এমবিডিএ জানায় যে একই সঙ্গে বহুসংখ্যক টার্গেটের বিরুদ্ধে এর ফায়ার করার হার খুব বেশি, যার ফলে একে এ্যাস্টার ১৫ মিসাইলের সঙ্গে তুলনা করা যায়।
ডিজাইনে অনন্যতার কারণে এর দামও কম।
যদিও বলা হচ্ছে, এর পাল্লা ২৫ কিলোমিটার, কিন্তু ট্রায়ালে এটি ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে বলে দেখা গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত যেকোনো বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেমের চেয়ে এটি অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।
সিএএমএমের ওজন ৯৯ কেজি, দৈর্ঘ্য ৩.২ মিটার, ব্যস ১৬৬ মিলিমিটার।
এতে অ্যাক্টিভ আরএফ সিকার গাইডেন্স থাকায় এখানে জটিল ও উচ্চমানের ফায়ার কন্ট্রোল/ইলুমিনেশন রাডারের কোনো প্রয়োজন নেই।
একটি সফট ভার্টিক্যাল লঞ্চ (এসভিএল) সিস্টেম ৩৬০ ডিগ্রি কভারেজ দিয়ে থাকে। ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য এটি গ্যাস জেনারেটর ব্যবহার করে।
বর্তমানে ব্রিটেনের নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনী সিএএমএম ব্যবহার করে। সি সেপ্টর ভ্যারিয়েন্ট ২০১৮ সালের মে মাস থেকে ব্রিটিশ নৌবাহিনীতে ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি টাইপ ২৩, টাইপ ২৬ ও টাইপ ৩১ ফ্রিগেটে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
ধারণা করা হচ্ছে, সিএএমএম (সি সেপ্টর) বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের ফ্রিগেটে সংযোজন করা হবে। এই ফ্রিগেট বাংলাদেশেই নির্মিত হবে।
একইভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মাঝারি পাল্লার বিমান প্রতিরক্ষা সিস্টেম সংগ্রহ করতে চাচ্ছে। হিসার-ও ক্ষেপনাস্ত্রের সক্ষমতা যাচাইয়ের জন্য সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই তুরস্ক সফর করেছে। হিসার-ও’র সাথে প্রতিযোগিতায় ভালোভাবেই এগিয়ে থাকবে সিএএমএম।
বাংলাদেশ বিমান বাহিনীও ইউরোফাইটার টাইফুন মাল্টি-রোল ক্যাপাবেল জঙ্গিবিমান সংগ্রহ করতে ব্রিটেনের সহায়তা কামনা করছে। এই বাহিনী এর মধ্যেই যুক্তরাজ্য থেকে ৫টি সি-১৩০জে কিনেছে।
সূত্র: ডিফেন্স পাক
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন