নিষেধাজ্ঞা আর লকডাউনে দিশেহারা জেলেরা
ভোলা সংবাদদাতা: সরকার থেকে কথিত মৎস্য সম্পদ রক্ষার অজুহাতে সাগরে টানা ৬৫ দিনব্যাপী মৎস্য আহরণ নিষিদ্ধ করেছে। যদিও বিভিন্ন সময়ে মৎস্যখাত বিশেষজ্ঞরা এই নিষেধাজ্ঞার সিংহভাগ সময়কেই মৎস্য আহরণের ভরা মৌসুম হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। অপরদিকে, এই নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারের তরফ থেকে জেলেদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি থাকলেও জেলেদের অভিযোগ, তারা কখনই সরকারি সহায়তা পায়না।
বর্তমানে চলমান ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শুরু হলেও এখনও অনেক জেলে সরকারিভাবে বরাদ্দকৃত চাল না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। একদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে মাছ শিকার বন্ধ অন্যদিকে লকডাউনের কারণে বিকল্প কাজও করতে পারছেন না তারা। যার কারণে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে অর্ধাহার ও অনাহারে দিন কাটাচ্ছেন ভোলার জেলেরা।
এই নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের জন্য ভোলার মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌ পুলিশ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। তবে একের পর এক মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞায় দিশেহারা জেলেরা। এছাড়াও একদিকে নিষেধাজ্ঞা অন্যদিকে লকডাউন পরিস্থিতির কারণে অন্য কাজ না করতে পেরেও বিপাকে রয়েছেন জেলেরা। দ্রুত সরকারি সহযোগিতার দাবি জেলেদের।
চরফ্যাশন উপজেলার সামরাজ ঘাট এলাকার জেলে কয়েকজন জেলে জানান, গত ৩০ এপ্রিল নদীতে মাছ শিকার বন্ধের দুই মাসের অভিযান শেষ হয়েছে। ওই সময় মাছ বেচা-বিক্রি বন্ধ ছিল। তাই সাগরে মাছ শিকার করে বিক্রি করতে না পারায় মাছ শিকার করতে যায়নি। কিন্তু ২০ মে থেকে আবার সাগরে মাছ শিকার বন্ধ হয়েছে। এতে স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি।
তারা আরও বলেন, আমরা সাগরে মাছ শিকার করে জীবনযাপন করি। এখন মাছ ধরা বন্ধ ও বিধিনিষেধের কারণে অন্য কাজও করতে পারছি না।
মনপুরা উপজেলার চর নিজাম এলাকার জেলে সামছুদ্দিন ও আলী মিয়া জানান, গত বছর অভিযানের সময় আমরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে সাগরে মাছ শিকার করতে যাইনি। কিন্তু সরকার আমাদের জন্য যে চাল বরাদ্দ করেছে সেটাও আমরা পাইনি। তারা আরো বলেন, আমরা যারা প্রকৃত জেলে তাদের অনেকের জেলে কার্ড নেই। আবার যাদের জেলে কার্ড আছে তারাও অনেকেই চাল পাননা। জেলেরা জানান, সকল কষ্ট শিকার করে সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে সাগরে মাছ শিকার করতে যাচ্ছেন না। অথচ ভারতীয় জেলেরা বড় ট্রলার নিয়ে নিষেধাজ্ঞার সময় সাগরে মাছ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে।
দৌলতখান উপজেলার ভবানীপুর এলাকার ট্রলার মালিক সিরাজ মাঝি ও আড়ৎদার জাকির জানান, সরকারের একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে মৎস্য ব্যবসা নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। জেলেরা দাদনের টাকা নিচ্ছে। আর অভিযান আসলেই পালিয়ে যাচ্ছেন জেলেরা। যার কারণে প্রতি বছর গুনতে হচ্ছে লোকসান।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন