নববর্ষ ও পূজা-পার্বনের নানা অপসংস্কৃতি সমাজকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে- সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ নববর্ষ উদযাপনের নামে অপসংস্কৃতির ভয়াবহ বিস্তারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনই বাংলাদেশের সার্বভৌম অস্তিত্বের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। এখন আর ভৌগোলিক আগ্রাসনের প্রয়োজন পড়ে না। একটি জাতিকে পদানত করার জন্য সাংস্কৃতিক আগ্রাসনই যথেষ্ট। ফলে ভিনদেশী সাংস্কৃতির আগ্রামন মোকাবিলা করা না গেলে আমাদের নতুন প্রজন্ম ভয়াবহ অবক্ষয়ের শিকার হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অবস্থিত ইউনিয়ন কার্যালয়ে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে নেতৃবৃন্দ একথা বলেন।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে’র সহসভাপতি মুনশী আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজে সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজে’র সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সর্বশেষ নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমদ, ডিইউজে’র সহসভাপতি সৈয়দ আলী আসফার, বিএনপি নেতা প্রকৌশলী মনিরুজ্জমান মানিক, সাংবাদিক নেতা জাকির হোসেন, কামার ফরিদ, আসাদুজ্জমান আসাদ, এস এম আলমগীর, শামসুল হক বসুনিয়া, জসিম মেহেদী, সরদার শাহাদাত হোসেন, মো. বোরহান উদ্দিন, মতিউর রহমান সরদার, জেসমিন জুই প্রমুখ।
বিএফইউজে মহাসচিব এম আবদুল্লাহ বলেন, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন বাংলাদেশের সমাজ ও মূল্যবোধকে ভয়াবহ হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশের আকাশ সাংস্কৃতি এবং নববর্ষ ও পূজা-পার্বনের নামে নানা অপসংস্কৃতি নতুন প্রজন্মকে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য থেকে অনেক দূরে যাচ্ছে। ফলে সমাজে খুন-খারাবি মহামারি রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, আমার দেশ এর নির্ভিক সম্পাদক গ্রেফতার হওয়ার আগে সাংস্কৃতিক বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, যুব সমাজকে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন থেকে রক্ষা করা না গেলে দেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকবে না।
কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, সম্রাট আকবরের আগ্রহে আমীর ফতেউল্লাহ শিরাজী বাঙলা সন প্রবর্তন করেন। পরবর্তিতে বাংলা বর্ষপঞ্জী সংস্কার এটা ত্রুটিমুক্ত করা হয়। এখন ১৪ এপ্রিলই পয়লা বৈশাখ হচ্ছে। এর কোন ব্যাত্যয় হচ্ছে না। তিনি বলেন, বাংলা নতুন বছরের সত্যিকারের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের অজানা। ফলে আমাদের গৌরবময় ঐতিহ্যের পরিবর্তে বিকৃত নানা আয়োজনে নববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে। বঙ্গাব্দের প্রবর্তক আমীর ফতেউল্লাহ শিরাজীর মাজার নারায়নগঞ্জের ফতুল্লায় থাকলেও নববর্ষে সেখানে কেউ জিয়ারত করতে যায় না। বঙ্গাব্দের সঙ্গে ময়ূর বা পেচার কোন সম্পর্ক নেই। ময়ূর ভারতে জাতীয় পাখি বলে সেখানকার কালচার আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
মুনশী আবদুল মান্নান বলেন, অপসংস্কৃতির আগ্রাসন দিন দিন অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠছে। এটা আমাদের গোটা সমাজকে কুলুষিত করছে। এ থেকে মুক্তির জন্য নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের গৌরবময় ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে হবে।
এ এ আজিজ বলেন, বাংলা নববর্ষ যেভাবে এখন পালিত হচ্ছে তা এক দশক আগেও ছিলনা। তিনি নববর্ষে ইলিশ প্রচলনের ইতিবৃত্ত বর্ণনা করে বলেন, স্রেফ ব্যবসায়িক কারণে পান্তা ভাতের সাথে ইলিশ ভাজা খাওয়ার প্রথা চালু হয়। এর সাথে বাংলা নববর্ষের কোনো সম্পর্ক নেই।
জাহাঙ্গীর আলম প্রধান বলেন, বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিয়ে নতুন বাংলা বছরে সাংবাদিকদের বেকারত্ব থেকে মুক্তি দেয়া এখন সময়ের দাবী। নবম ওয়েজবোর্ড গঠন ও অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন না করলে সাংবাদিকরা স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করতে পারবে না। বিজ্ঞপ্তি।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন