‘ঢাকার ৭১ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে ধূমপান হয়’
নিজস্ব প্রতিবেদক: তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইনে হাসপাতালগুলো সম্পূর্ণ তামাকমুক্ত হওয়ার কথা বলা হলেও ঢাকার ৯৪ শতাংশ হাসপাতালে এ আইন লঙ্ঘন হচ্ছে। রাজধানীর ৫১টি হাসপাতালে পরিচালিত এক জরিপ করে এ তথ্য জানিয়েছে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ। সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এ উপলক্ষে এক প্রচারণামূলক সেমিনারের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের অ্যান্টি টোবাকো প্রোগ্রামের অফিসার ডা. আহমাদ খায়রুল আবরার বলেন, বাস্তবতা হচ্ছে ঢাকার মাত্র ছয় শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়। তিনি বলেন, ঢাকার ৮০ শতাংশ সরকারি হাসপাতালের ১০০ মিটারের মধ্যে তামাক পণ্য বিক্রি হয়। ১৮ শতাংশ হাসপাতালের সীমানার মধ্যেই এমন দোকান রয়েছে।
জরিপে ঢাকার ৭১ শতাংশ সরকারি হাসপাতালে ধূমপান হয়। এর প্রমাণ হিসেবে সরকারি হাসপাতালে সিগারেটের ফিল্টার, ধোঁয়ার গন্ধ ইত্যাদি পাওয়া গেছে। অন্যদিকে, এক তৃতীয়াংশ হাসপাতালে কাউকে না কাউকে সরাসরি ধূমপান করতে দেখা গেছে।
একই পরিস্থিতি ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহারের ক্ষেত্রেও। ঢাকার প্রায় দুই তৃতীয়াংশ হাসপাতালে ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার হয়।
এর প্রমাণ হিসেবে পানের পিক, চুনের দাগ দেখা গেছে। আর সরাসরি ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করতে দেখা গেছে প্রায় ৪৫ শতাংশ হাসপাতালে। অপরদিকে হাসপাতালগুলোতে আসা রোগী ও দর্শনার্থীদের তামাক ছাড়ার ব্যাপারে সহায়তা দিতে তামাক নিবৃত্তকরণ ক্লিনিক থাকা অত্যাবশ্যক বলা হলেও রাজধানীর মাত্র ২ শতাংশ হাসপাতালে এই সুবিধা রয়েছে।
সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তারা বলেন, তামাকজাত মধ্যে সিগারেট, বিড়ির মতো ধোঁয়াযুক্ত পণ্যগুলো শুধু সেবনকারীর স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি করে না বরং আশপাশের মানুষেরও সমান ক্ষতি করে। পরোক্ষ ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা, স্ট্রোক ও প্রজনন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) ২০১৭ এর উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তারা বলেন, হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও প্রায় ১৩ ভাগ মানুষ পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়। হাসপাতাল তামাকমুক্ত করতে কর্তৃপক্ষের সচেতন হওয়া জরুরি বলে মত দেন বক্তারা।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন