নিউজ ডেস্ক: কৃষিখাতে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ সহজলভ্য নয় বলে মনে করেন বাংলাদেশ ডেইরী ডেভেলপমেন্ট ফোরামের (বিডিডিএফ) নেতারা। এক অনলাইন সভায় সংগঠনের ২০২০-২১ অর্থবছরের কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নকালে তারা এমন মন্তব্য করেন।
রোববার (২৯ নভেম্বর) অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিডিডিএফ সভাপতি মাননীয় সাংসদ অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি।
সভায় চট্টগ্রাম ডেইরী ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মালিক মোহাম্মদ ওমর বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগের প্রায় ২০ হাজার খামারির মধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ নিয়েছেন মাত্র ২০০ থেকে ২৫০ জন। আর চট্টগ্রাম জেলার ১৮০০ খামারির মধ্যে ঋণ পেয়েছেন মাত্র ৬ জন।
তিনি বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে প্রকৃতপক্ষে যেসব খামারির ঋণ বেশি প্রয়োজন ব্যাংকগুলো তাদেরকে ঋণ দিচ্ছে না। এক্ষেত্রে প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী যারা ব্যাংকের নিয়মিত গ্রাহক তারাই কেবল এই সুবিধা পাচ্ছেন। ব্যাংকগুলো সাধারণ খামারিদের ক্ষেত্রে জামানতসহ অন্যান্য কঠিন শর্ত আরোপ করায় ক্ষুদ্র খামারিরা এ ঋণের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
মোহাম্মদ ওমর আরও বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ঋণ পরিশোধের সময়সীমা মাত্র এক বছর। যা এই কোভিড-১৯ মহামারীতে ছোট, বড় কোনো খামারির পক্ষেই বহন করা সম্ভব নয়।
চট্টগ্রাম ডেইরী ফার্মারস অ্যাসোসিয়োশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন বলেন, মাত্র গুটিকয়েক খামারি ঋণ পেলেও প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণের জন্য দরখাস্ত করেছেন প্রায় চার থেকে পাঁচ
হাজার খামারি।
এজন্য সহজ শর্তে প্রণোদনা প্যাকেজের পাশাপাশি ডেইরি খাতে ভর্তূকি দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান তারা।
আলোচনা সভায় মিল্কভিটার সহকারী ব্যবস্থাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি মিল্কভিটা রুপালি
ব্যাংক লিমিটেডের সাথে একটি স্বারকলিপি স্বাক্ষর করে যার মাধ্যমে প্রায় এক হাজার ডেইরি খামারিকে
প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১০ কোটি টাকা ঋণ দেয়া সম্ভব হবে।
ব্র্যাক ডেইরির সহকারী মহাব্যবস্থাপক ডা.মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, ব্র্যাক ডেইরির মোট খামারির সংখ্যা
২৮ হাজার। কিন্তু এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক খামারি প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে ঋণ নিতে পারেননি।
এক্ষেত্রে ব্র্যাক ডেইরি ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে।
আলোচনা সভায় বিডিডিএফ’র ২০২০-২১ অর্থবছরের কর্মপরিকল্পনার মধ্যে অ্যাডভোকেসি ইস্যু হিসেবে
নিন্মলিখিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়-
১. ক্ষুদ্র ডেইরি খামারিদের প্রণোদনা প্যাকেজে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
২. পাউডার দুধের আমদানি শুল্ক সমন্বয় ও ডেইরি উন্নয়ন নীতিমালা প্রনয়ণ করা।
৩. দেশীয় পাউডার দুধ উৎপানের জন্য বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ তৈরি করা।
৪. দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য গ্রহণ ও নিরাপদ দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি করা।
বিডিডিএফ সভাপতি অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি বলেন, বিডিডিএফ’র প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা আরও বাড়ানো উচিত। অর্থের অভাবে সংগঠনের ভালো কাজ বন্ধ হওয়া ঠিক নয়।
আলোচনা সভায় বিডিডিএফ সহসভাপতি কাজী মো. ইমদাদুল হক ডেইরি খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে খামারের উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন