কুয়েতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে ১ বিলিয়ন ডলার চাইবে ঢাকা
সাস নিউজ২৪ ডট কম : কুয়েতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরে তেল শোধনাগার নির্মাণবাবদ ১ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ সহায়তা চাইতে পারে বাংলাদেশ। এ নিয়ে সরকারের তরফে একটি প্রস্তাবনাও তৈরি করা হয়েছে। তবে ওই প্রস্তাবে প্রত্যাশিত কুয়েতি বিনিয়োগের খাত উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। এটি চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিকে বর্ধিতকরণের কাজে লাগানো হবে নাকি নতুন শোধনাগার নির্মাণে ব্যয় হবে-তা দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে চূড়ান্ত হবে। এদিকে কুয়েতে আরও শ্রমিক পাঠানোর বিষয়েও বাংলাদেশের অনুরোধ থাকছে। দেশটির তরফে বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যে আগ্রহ দেখানো হয়েছে। বাংলাদেশ এটাকে ইতিবাচকভাবে নিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের বন্ধুপ্রতিম ওই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিদ্যমান প্রতিরক্ষাবিষয়ক সম্পর্ক এগিয়ে নেয়া, তথ্যপ্রযুক্তি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত এবং কৃষিতে সহযোগিতাসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে দুই দেশের অভিন্ন স্বার্থ মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি, ওআইসি নিয়ে ঢাকার দ্বিপক্ষীয় শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে সফর প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা আভাস দিয়েছেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ওই সফরের প্রস্তুতি নিয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। ওই সভা শেষে সরকারের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা মানবজমিনের সঙ্গে আলাপে বলেন, অনেক দিন পরে কুয়েতের কোনো প্রধানমন্ত্রী ঢাকা সফরে আসছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালে কুয়েত সফর করেছিলেন। সেই সময়ে দেশটির শীর্ষ পর্যায়ে তা আলোচনা হয়েছিল। সেই সফরের ফিরতি সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ৩ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসছেন কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী জাবের আল মুবারক আল হামাদ আল সাবাহ। আগামী ৩রা মে বিকালে চার্টার্ড বিমানে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন তিনি। তার সফরটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে সরকারের দায়িত্বশীল ওই কর্মকর্তা বলেন, সফরের দ্বিতীয় দিনে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে তার সফরের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। ওই দিন বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। কুয়েতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির অর্থ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ৫০ সদস্যের প্রতিনিধিদল আসছে। সেখানে কুয়েত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (কেসিসিআই)’র প্রতিনিধিরা আসছেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী কেসিসিআই’র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র একটি জয়েন্ট সেমিনার হবে ঢাকায়। সেখানে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা এবং অঙ্গীকার পাওয়া যাবে বলে আশা করেন ওই কূটনীতিক। দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনায় বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতায় ৬-৭টি চুক্তি সইয়ের বিষয়ে কথা হবে জানিয়ে অপর এক কর্মকর্তা বলেন, কুয়েতে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক রয়েছে। উপসাগরীয় যুদ্ধের পর কুয়েতের পুনর্গঠন এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের কিছুটা হলেও অবদান রয়েছে। দেশটির চলমান সরকারি উন্নয়ন কার্যক্রমে বাংলাদেশের প্রায় ৪ হাজার দক্ষ জনশক্তি নিয়োজিত রয়েছে। কুয়েতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় সুদৃঢ় উল্লেখ করে তিনি বলেন, কুয়েতের সঙ্গে সহযোগিতা বিদ্যমান সম্পর্ক এগিয়ে নেয়া এবং আগামী দিনে এ সম্পর্কের সুফল বের করে আনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন আনুষ্ঠানিক বৈঠকে আলোচনা হবে। সেই বৈঠকে দুই দেশের সহযোগিতার বিষয়গুলো চিহ্নিত হবে। কেবল প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকই নয়, প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী। সফরের শেষ দিনে (৫ই মে) সাক্ষাৎটি হতে পারে। রাষ্ট্রীয় সফরের রীতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুয়েতের প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে নৈশভোজের আয়োজন করবেন। সফরের দ্বিতীয় দিনে ওই ভোজ হতে পারে। ঢাকা সফরকালে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত ৩২ নম্বরের জাদুঘরও পরিদর্শন করবেন কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন