‘ওরা আগে কখনও হাত পাতেনি’
নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণ ছুটি শেষ হতে চললেও রাস্তায় হাত পেতে থাকা মানুষের সংখ্যা কমেনি। বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে। রাজধানীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে সাহায্যপ্রার্থীরা সাহায্যের আশায় বসে রয়েছে। তবে যেসব সাহায্যপ্রার্থীরা ত্রানের আশা করছিলো তারা তা না পেয়ে এখন সরাসরি হাত পাততে বাধ্য হচ্ছে মানুষের কাছে।
একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় জানা গেলো সেই ঘটনা। তিনি জানান ‘রাস্তার মোড়টা ঘুরতে গাড়ি একটু স্লো হয়েছে। কোথা থেকে সাত আটজন একই বয়সের শিশু এসে গাড়ির আশেপাশে হাত পাতলো। ওদের চোখ মুখ বলছে তারা পথশিশু না। তাদের টাকা চাওয়ার ধরণ বলছে তারা চাইতে শিখেছে নতুন। কথা হয় এই শিশুদের সঙ্গে। প্রায় সবার বাবা মা কাজ করতো, এখন বেকার। যা চেয়ে পাওয়া যায় তাই দিয়ে বাজার হয়। বড় নোট একজনের হাতে দিলে ভাগাভাগি করে নিবে এই নীতিতে তারা বিশ্বাসী। তবে ছোট নোট হলে একাই নিবে। সহদোরও আছে অনেক এই জটলাতে।
সাহায্যের আশায় রাস্তায় বসে থাকা এক বৃদ্ধ বলেন বলেন, এখন মায়া করলে মায়া, নাইলে নাই। মানুষতো সত্যি শুরু থেকেই অনেক দিতেসে। আমি শুরুতে হাত পাতবো কীভাবে তাই ভাবতাম। কিন্তু উপায়তো নাই।
সাহায্যের জন্য রাস্তা নেমেছেন কয়েকজনশিশু অধিকার বিশ্লেষক আবদুল্লাহ আল মামুনের মতে, এই সময়ে যেসব শিশুদের পথে ভিক্ষাবৃত্তিতে দেখা যাচ্ছে তাদের অনেকেই পথশিশু বা নিয়মিতভাবে ভিক্ষা করত না।
মূলত নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর অনেক শিশু লকডাউনে বাবা-মায়ের রোজগার কমে আসাতে এখন কিছু রোজগারের আশায় পথে নেমেছে। এই শিশুদের অনেকেই আগে থেকেই স্কুলে ভর্তি আছে, যা এখন বন্ধ আছে। কিন্তু সামনের দিনগুলোতে এই শিশুরা যেন ঝরে গিয়ে শ্রমে বা ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়মিতভাবে নিয়োজিত না হয় সেজন্য এখন থেকেই স্কুলগুলোকে বিশেষ ব্যবস্থার পরিকল্পনা করতে হবে। স্কুল খোলার পরপরই অনুপস্থিত শিশুদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবক ও শিশুদের বুঝিয়ে তাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনের তার জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে বাড়তি জনবল নিয়োগ করতে হবে। তা নাহলে সামনের দিনগুলোতে স্কুল থেকে ঝরে পড়া ও শিশুশ্রমে শিশুর আগমণ বাড়তে পারে। পাশাপাশি, আগামী বাজেটে এই শিশুদের কথা মাথায় রেখে স্কুলকেন্দ্রিক এই শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ভাতা বা আর্থিক প্রনোদনার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন