এশিয়ার দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির তালিকায় ভুটান: এডিবি
সাস নিউজ ডেস্ক: ২০১৭ সালের ভুটানের প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭.৫ শতাংশ। সেই হিসেবে উন্নয়নশীল এশিয়া অঞ্চলে ভুটান এখন সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্যাংকের এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আউটলুক ২০১৮ ইনডেক্সে অনুমান করা হয়েছে যে, ভুটানের শক্তিশালী, স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় থাকবে। কিন্তু দুটো বড় ধরনের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণে সম্ভাব্য দেরির কারণে তাদের প্রবৃদ্ধির উচ্চগতির ধারাটি কিছুটা থমকে যেতে পারে।
এর অর্থ হলো, আগামী দুই বছরের জন্য একই মাত্রার প্রবৃদ্ধি আশা করতে পারে ভুটান। ২০১৮ সালে দেশের জিডিপি ৭.১ শতাংশ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের (৭.৩ শতাংশ) পর এটা এ অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে ভারতের প্রবৃদ্ধি ৭.৬ শতাংশ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর পরেই ৭.৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে থাকবে ভুটান।
তবে, এডিবি বলেছে, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্বেও যুবসমাজের কর্মসংস্থানের বিষয়টি ভুটানে একটি সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, যদিও ভুটান উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, কিন্তু শ্রমবাজারে নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারেনি ভুটান।
একদিকে চাকরির চাহিদার সাথে যোগ্যতার পার্থক্য রয়েছে। তাছাড়া চাকরির বাজারে ম্যানুয়াল বা অন্যান্য কাজের বিপরীতে সীমিত সংখ্যা অফিসিয়াল কাজের ব্যাপারে আগ্রহ বেশি, সে কারণেই চাকরিহীন সময়টাতে পরিবার থেকে সাপোর্ট পেয়ে থাকে তরুণরা। তাছাড়া চাকরি করার জন্য তরুণদের মধ্যে আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে বলেও বলা হয়ে থাকে।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় পাঁচজনকে নিয়োগ করা হয়। ২০১৭ সালে, এই খাতে ৯২,৩২২ জন কর্মী কাজ করেছে। পুরো কর্মশক্তির ২৬ শতাংশ এই কুটির শিল্পের কর্মীরা। সরকার ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে যেখান থেকে তরুণদের কর্মসংস্থান হতে পারে।
চ্যালেঞ্জ সত্বেও সেবা খাতকে অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি মনে করা হচ্ছে। যেহেতু পাইকারি ও খুচরা ব্যবসার পাশাপাশি পর্যটনও সম্প্রসারিত হচ্ছে। শিল্পখাতে প্রবৃদ্ধি মাঝামাঝি থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে কারণ পুনাতসাংচু এক ও দুই – এ দুটো বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের শেষ দিকের নির্মাণ কাজ ধীর গতিতে এগুবে। ২০১৯ সালে শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা বাড়বে কারণ ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর নাগাদ মাংদেচ্চু জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি চালু হয়ে যাবে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং রফতানির পরিমাণও বাড়বে।
কৃষিখাত ভুটানে খুব বেশি বড় নয়। তবে ২০১৮ সালে এই খাতে প্রবৃদ্ধি আগের বছরের তুলনায় বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাছাড়া সরকার নতুন শস্য চাষ শুরু করা, উৎপাদন বাড়ানো, কৃষি খাতকে আর্থিক খাতের সাথে যুক্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের ফলে প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে এডিবির রিপোর্টে বলা হয়েছে।
ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের বিকাশের জন্য অর্থায়নের সুবিধা, কর্মসূচি ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে এই খাতেও সুফল পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়নে বহু সরকারী সংস্থা এর বিভিন্ন দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করে। এই সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করার জন্য এবং নতুন সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নের জন্য অর্থনৈতিক অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়কে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে”।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন