ঋণের চাপে আত্মহত্যা বাড়ছে দেশে
নিজস্ব প্রতিবেদক: চলমান লকডাউন পরিস্থিতির কারণে প্রান্তিক জনগণ চরম অর্থকষ্টে ভুগছেন। আর এমনই পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানকারী বিভিন্ন এনজিওগুলো। এই লকডাউনের সময়ও তারা প্রান্তিক জনগনের কাছ থেকে কিস্তি আদায়ে নেমে পড়েছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে গত কয়েকদিন আগেই এই লকডাউন পরিস্থিতিতে কিস্তি আদায়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই এনজিওগুলো সরকারের নিষেধাজ্ঞা মানছেনা। হুমকি ও মামলা ভয় দেখানোর কারণে গত কয়েকদিনে বেশ কয়েকজন মানুষ এনজিওগুলোর কিস্তির চাপে আত্মহত্যা করেছে।
এর মধ্যে-
নওগাঁর রাণীনগরে ব্র্যাকের ঋণের কিস্তির চাপের কারণে এক দিনমজুর আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত রোববার রাতে গ্যাসের ট্যাবলেট খেয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যান। ছাইদুল ইসলামের ভাই রহিদুল ইসলাম জানান, ব্র্যাক থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ছাইদুল। সারা দেশ লকডাউন থাকার কারণে তাকে কয়েক মাস কোনো কিস্তি দিতে হয়নি। গত শনিবার ব্র্যাক কর্মীরা এসে ছাইদুলকে রোববারে কিস্তি দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে যায়। তিনি বলেন, লকডাউনের কারণে আমার ভাইয়ের তেমন কোনো কাজকর্ম না থাকায় পরিবার-পরিজন নিয়ে তার দিনকাল খুব ভালো যাচ্ছিলো না।
অন্যদিকে, নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পরিবার চালাতে গিয়ে হিমশিমের পাশাপাশি ঋণ ও এনজিওয়ের কিস্তি পরিশোধের চাপে আত্মহত্যা করেছে তিন সন্তানের এক জননী। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গোপালদী পৌরসভার রামচন্দ্রাদী গ্রামের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন তিনি। ১৪ বছর আগে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় নিপার। গত ৫ বছর আগে তার স্বামী জীবিকার তাগিদে মালয়শিয়া চলে যায়। বর্তমানে সেখানে লকডাউন থাকায় গ্রাম থেকে বিদেশে অর্থ পাঠাতে হতো। পাশাপাশি পরিবার চালাতে ও ঋণ এবং এনজিওয়ের কিস্তি পরিশোধ করতে হতো। গত কয়েকমাস ধরে কিস্তি ও ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় চাপে পড়ে নিপা। সেই চাপ সামলাতে না পেরে তিন সন্তাদের জননী নিপা আত্মহত্যা করে। শুধু আত্মহত্যাই শেষ নয়, পাশাপাশি কিস্তি না পেয়ে ঋণ গ্রহিতার ১২৫ বস্তা ধান ও গবাদি পশু ও ছাগল নিয়ে গেছে ঋণদাতা সমিতির লোকজন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন