গরু জবাই নয় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নিষিদ্ধ করতে হবে : আওয়ামী ওলামা লীগ
২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, সাস নিউজ : গরু জবাই নিষিদ্ধ নয় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নিষিদ্ধ করতে হবে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ কর্তৃক ‘বাংলাদেশে গরু জবাই নিষিদ্ধ করার’ সাম্প্রদায়িক দাবির তীব্র প্রতিবাদে রোববার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে ওলামা লীগের সভাপতি পীরজাদা পীর আখতার হোসেন বুখারী, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ক্বাজী মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী, সহসভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবীবুল্লাহ রুপগঞ্জী ও দফতর সম্পাদক মাওলানা শওকত আলী শেখ এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, অদ্য দৈনিক মানবজমিনসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, গত শুক্রবার কট্টর সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা নিউ ইয়র্কে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘বাংলাদেশে অবিলম্বে আইন করে গরু জবাই বন্ধে’র দাবি জানিয়েছে।
প্রতিবাদে বলা হয়, হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত বিশ্বের শীর্ষ গরুর গোশত রপ্তানিকারক দেশ (টাইমস অব ইন্ডিয়া)। বর্তমান সরকার বিরোধী, সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কর্তৃক সেখানে গরু গোশত ব্যবসা বন্ধ করার কথা না বলে এদেশে গরু জবাই নিষিদ্ধের বলা মানে চরম সাম্প্রদায়িক উস্কানী দেয়া।
এ সাম্প্রদায়িক সংগঠন ধর্মের নামে মুসলমানদের ধর্মীয় অধিকার হরণে লিপ্ত। তারা কট্টর মুসলিম বিদ্বেষী। তারা দেশে পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াতে ভারতের আরএসএস, শিবসেনা, বজরং এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর মতবাদ ছড়াতে এদেশীয় মৌলবাদী হিন্দু সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা করছে।
এরা দেশে সরকারকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। গয়েশ্বর মার্কা জামাত জোটের এজেন্ট মৌলবাদী হিন্দুরা এসব মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সরকারের সাথে ভারতের সাথে দ্বন্ধ বাধাতে চায়। এসব মিথ্যা কথা বললে ভারতের সহানুভূতি পাবে। এসব কুচক্রিরা সরকারের সাথে ভারতের সুসম্পর্ক নষ্ট করার চক্রান্তে লিপ্ত।
বর্তমান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সরকারের সময় স্বর্গে বাস করলেও তারা অনবরত সরকার বিরোধী প্রোপাগান্ডায় চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদে বক্তারা বলেন, সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ বাংলাদেশে মুসলমান ও ইসলাম ধর্মের বিষোদগার করতেই ১৯৮৮ সালের জুন মাসে জন্ম হয়।
সুরঞ্জিতের নেতৃত্বেই তাদের সাম্প্রদায়িক কার্যক্রম শুরু হয়। অসাম্প্রদায়িক আওয়ামী লীগে সাম্প্রদায়িক সুরঞ্জিত সম্পূর্ণই বেমানান। তাও আবার উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য। অথচ তার সর্ম্পুণ কার্যক্রম ইসলাম বিদ্বেষ ও সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে। তার নেতৃত্বেই বর্তমানে সাম্প্রদায়িক সংগঠনটি পরিচালিত হচ্ছে। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে তার কিছু চিত্র দেখা গেছে।
এ সাম্প্রদায়িক সংগঠনটি মিথ্যাচার সংবাদ সম্মেলনে বলেছে, রমনাকালী মন্দির দখল করে নাকি পার্ক বানানো হয়েছে। অথচ ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে মুসলমানদের বদন্যতায় হিন্দুরা অতি ক্ষুদ্রপরিসরে একটি মন্দির তৈরী করেছিলো। মূলত মোঘল বাদশাহ’র পৃষ্ঠপোষকতায়, মোঘল সেনাপতি মান সিংহের সহযোগিতা শাহবাজ মসজিদের উত্তর দিকে হরিচরণ গিরি অতিক্ষুদ্র পরিসরে ভিত্তি স্থাপন করেছিলো ‘কৃপা সিদ্ধির আখড়া’ যা পরবর্তীতে ‘ভদ্রাকালী বাড়ী’ এবং পর্যায়ক্রমে নামকরণ করা হয় ‘রমনা কালী মন্দির’ হিসেবে। তারা মুসলমানদের অবদান অস্বীকার করতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেছে, ‘বাংলাদেশে সম্প্রদায়ের ওপর নজিরবিহীন নিপীড়ন চলছে এবং তাদের বেদখল হয়ে যাওয়া সম্পত্তির মধ্যে চার ভাগের তিন ভাগ দখল করে নিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।’
তারা বলেছে, ‘সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের বর্তমানে ভয়ে সম্পাদক ও সংবাদকর্মীরা স্বাধীনভাবে সংবাদ পরিবেশন করতে পারছেন না।’তাছাড়া মৌলবাদী হিন্দুদের মিথ্যাচার এই প্রথম নয়। এর আগেও সাম্প্রদায়িক সংগঠন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সেক্রেটারী রানা দাশগুপ্ত গং বলেছে, পাকিস্তানীদের মতো বর্তমান সরকারও হিন্দুদের উপর নির্যাতন করছে।
নাউযুবিল্লাহ! সে আরো বলেছে, জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের এমপিরা হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করছে। হিন্দু মহাজোট নেতা মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেছে, “হিন্দুদের বাড়ি দখল আর তাদের মেয়েদের ধর্ষণ করা এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর জন্য মৌলিক অধিকার হয়ে গেছে।”
এ সাম্প্রদায়িক সংগঠন গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার’, প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই খন্দকার মোশাররফ হুসাইন, সংসদ সদস্য দবিরুলসহ ঢালাওভাবে সরকারের মন্ত্রী এমপিদের হিন্দুদের জমি দখলের অভিযোগ করেছে।
অথচ গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, “আমার কোনো সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ কেউ হাজির করতে পারলে আমি নিজেকেই আইনের হাতে সঁপে দেব। একইভাবে এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হুসাইন সংবাদ সম্মেলন করে সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদকে চ্যালেঞ্জ করেছেন । কিন্তু কেউ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ না করে দেশ বিরোধী ভাড়াটিয়া সুলতানা কামাল চক্রবর্তীদের নিয়ে মাধ্যমে সরকার বিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে।
মূলত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার হিন্দুদের চরম-পরম সুযোগ সুবিধা প্রদান করার পরও গয়েশ্বর মার্কা জামাত জোটের এজেন্ট তথা উগ্রবাদী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক হিন্দুরা সরকারের বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। গয়েশ্বর মার্কা জামাত জোটের এজেন্ট তথা উগ্রবাদী, মৌলবাদী ও সাম্প্রদায়িক উগ্র হিন্দুদের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়েছে যে, হিন্দু মানেই আওয়ামী লীগ নয় বা হিন্দু মানেই আওয়ামী লীগ বান্ধব নয়।
তাই এ সাম্প্রদায়িক সংগঠন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদকে অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। উগ্রবাদী মৌলবাদী হিন্দুদের সাম্প্রদায়িক উস্কানীসহ সব ষড়যন্ত্র কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন