সড়ক মেরামত: পরিবহন ব্যয়ে আরোপ হচ্ছে চার্জ
নিজস্ব প্রতিবেদক: সড়ক এবং সড়কের অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণে আইনের অধীনে ‘সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ডের জন্য প্রণীত বিধিমালা-২০২১’ এর খসড়া তৈরি করা হয়েছে।
খসড়ায় বলা হয়েছে, সড়ক পথে চলাচলকারী মোটরযানে ব্যবহৃত জ্বালানি- পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, সিএনজি, এলএনজির মূল্য থেকে একক প্রতি লিটার বা ঘনমিটারে রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ ১ টাকা হারে নেওয়া হবে।
এই টাকা থেকেই সড়ক মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত খসড়া বিধিমালা পাঠানোর পর তা চূড়ান্তকরণে মতামত চাওয়া হয়। জনমত যাচাইয়ে মতামত চেয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মতামত দেওয়া যাবে।
সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ তহবিল বোর্ড আইন- ২০১৩ এর অধীনে এই নীতিমালা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
খসড়া নীতিমালায় সড়ক অর্থ- অধিদপ্তরের আওতাভুক্ত সড়ক, সড়কের ঢাল, সকড় বাঁধ, সড়ক নিরাপত্তা কাঠামো, সড়ক পেভমেন্ট, সড়ক শোল্ডার, সেতু, ফেরী, এক্সপ্রেসওয়ে, কজওয়ে, টানেল, ইন্টারচেঞ্জ, গ্রেডসেপারেটর, আধুনিক ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট অবকাঠামো, হাইওয়ে রেস্ট এরিয়া ও ফেরীঘাটসমূহ, বার্ম, বোরো পিট, ফুটওয়েজ, ফুট ওভারব্রিজ, আন্ডারপাস, ওভারপাস, বাস-বে, পার্কিং বে, ড্রেন, কালভার্ট, টোল প্লাজা, এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন, রাইট অফওয়ের মধ্যে বিদ্যমান সব ধরণের অবকাঠামো, ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ও বৃক্ষরাজি।
নীতিমালায় বলা হয়য়েছে, সড়ক পথে চলাচলকারী মোটরযানে ব্যবহৃত জ্বালানি যেমন পেট্রোল, অকটেন, ডিজেল, সিএনজি, এলএনজি বা অনুরূপ কোনো জ্বালানির মূল্য থেকে একক প্রতি (লিটার, ঘনমিটার ইত্যাদি) সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ চার্জ ১ টাকা হারে নেওয়া হবে।
সড়ক মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার, সড়ক অবকাঠামো ব্যবস্থাপনা ও পরিচালন; কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ও চাকুরি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দাবি পরিশোধ; বোর্ডের দৈনন্দিন খরচ ও পরিচালনা পরিষদের অনুমোদন সাপেক্ষে অত্যাবশকীয় অন্যান্য ব্যয়; প্রচার ও বিবিধ ব্যয়ে তহবিলের অর্থ ব্যবহার করতে পারবে।
মোটরযান ট্যাক্স অ্যাক্ট-১৯৩২ এর অধীনে রোড ট্যাক্স, মোটর ভেহিক্যাল রুলস-১৯৪০ এর অধীনে রুট পারমিট সংক্রান্ত ফি, মোটর ভেহিক্যাল অর্ডিন্যান্স-১৯৮৩ ও ভেহিক্যাল রুলস- ৯৮৪ এর অধীনে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন ফিসহ অন্যান্য সব ফি এবং পরবর্তীতে প্রতিস্থাপিত আইন, বিধি ও এর অধীন ফিসমূহ থেকে আদায়কৃত অর্থের শতভাগ ব্যয় করা হবে।
ওভারলোডিংয়ের জরিমানা মোটরযান থেকে প্রচলিত আইন বা বিধির অধীনে আদায়কৃত অন্যান্য সব জরিমানা; আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী মোটরযান থেকে আদায়কৃত ফি ও চার্জ; মোটরযানের সিসি, ধরন, ব্যবহার এবং ওজন অনুযায়ী আরোপিত চার্জ ইত্যাদি থেকে আদায়কৃত অর্থের শতভাগ ব্যয় হবে সড়কের কাজে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের আওতাধীন সড়ক, সেতু, ফেরি থেকে এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ কর্তৃক আদায়কৃত যাবতীয় টোল থেকে অধিদপ্তরের আদায়কৃত টোলের শতভাগ এবং সেতু কর্তৃপক্ষের টোলের ২৫ শতাংশ ব্যয় করা হবে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫ অনুযায়ী অধিদপ্তর কর্তৃক আদায়কৃত সকল রাজস্ব; অধিদপ্তরের অনুকূলে রোড কাটিং বাবদ সংগৃহীত অর্থ; অধিদপ্তরের টেন্ডার সিডিউল বিক্রি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ; অধিদপ্তরের পরিদর্শন বাংলো, নির্মাণ যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম ইত্যাদি থেকে প্রাপ্ত অর্থ; ভূমি অধিগ্রহণ অথবা হস্তান্তর বাবদ অধিদপ্তর কর্তৃক প্রাপ্ত অর্থ; ইউটিলিটি সংস্থা থেকে অধিদপ্তরের অনুকূলে প্রাপ্ত অর্থ; অধিদপ্তরের ল্যাবরেটরি ফি বাবদ প্রাপ্ত অর্থ ব্যয় করা যাবে।
সওজের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত অর্থ; অধিদপ্তরের সড়ক ব্যবহার বাবদ প্রাপ্ত অর্থ; অধিদপ্তরের নিলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থ; অধিদপ্তর কর্তৃক আদায়কৃত অন্যান্য সব নন-ট্যাক্স রাজস্ব; সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে কোনো ব্যাক্তি বা সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; তহবিলের বিপরীতে তফসিলি ব্যাংকে জমাকৃত অর্থ থেকে উপার্জিত লভ্যাংশ বা সুদ; বোর্ডের পক্ষে স্থাবর অথবা অস্থাবর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনালবদ্ধ অর্থ; মোটরযান ও সংশ্লিষ্ট যন্ত্রাংশ আমদানি শুল্ক; সরকার কর্তৃক সময় সময় নির্ধারিত অন্য যে কোনো উৎস থেকে প্রাপ্ত অর্থ ব্যয় করা যাবে।
বোর্ড পরিচালনায় একজন চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করবেন বলে নীতিমালায় বলা হয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন