সমালোচনা করা অনেক সহজ, কাজ করা কঠিন : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, করোনার সময় বিরোধী দলের কাউকেই মানুষের পাশে দেখিনি। শুধু টেলিভিশনে বসে সমালোচনা করতে দেখেছি। সমালোচনা করা অনেক সহজ, কাজ করা কঠিন।
বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) দুপুরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সিডিসি ও বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিন আয়োজিত ‘করোনা ও ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ক সভায়’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, দেশে ভ্যাকসিনের ব্যাপক চাহিদার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে জানালে তিনি দ্রুতই চীনের সিনোফার্মের ৬ কোটি ভ্যাকসিন কেনার ব্যাপারে নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সেই ৬ কোটি ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সময়মতো টাকা ছাড় দিয়ে অনুমোদন দিয়েছে। এখন ধাপে ধাপে এ টিকা দেশে আসতে থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য মাধ্যমেও আমাদের আশানুরূপ কার্যক্রম চলমান। আশা করা যাচ্ছে, দেশে চলমান টিকা কার্যক্রমের গতি চলমানই থাকবে।
এ সময় করোনা নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে, কর্মহীন লোকের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এ কারণে এখনই আমাদের করোনা নিয়ন্ত্রণ করা খুব জরুরি।
করোনার দুঃসময়ও দেশের স্বাস্থ্যখাত নিয়ে ‘মিথ্যা’ সমালোচনা করা প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা মাঝে মাঝে অনেক সমালোচনার মুখে পড়ি। সমালোচকরা অসুস্থ হলে কোথায় চিকিৎসা নিতে আসেন? যে ডাক্তার চিকিৎসা দেন তাদেরই আপনারা সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, আজ স্বাস্থ্য বিভাগের ডাক্তাররা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। শুধু করোনার চিকিৎসা নয়, অন্য রোগীর চিকিৎসাও দিচ্ছেন তারা।
সরকারের এ মন্ত্রী বলেন, সংক্রমণ কিছুটা কমে এসেছে। মৃত্যু একটু বেশি আছে। এ সংক্রমণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বাস-ট্রেন গণপরিবহনে গাদাগাদি করে চললে হবে না।
জাহিদ মালেক বলেন, পৌনে দুই কোটি মানুষকে টিকা দেয়া হয়েছে। কোটি কোটি লোক নিবন্ধন করেছে। আমরা সবাইকে একবার টিকা দিতে পারব না। পর্যায়ক্রমে ধারাবাহিকভাবে টিকা দেয়া হবে।
ডেঙ্গু যেন না হয় সে বিষয়ে সজাগ থাকতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ডেঙ্গু হলে নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগ সেবা দেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। ডেঙ্গু যেন না হয় সেজন্য সবাইকে কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আলী নূর বলেন, হাসপাতালে শয্যা বাড়িয়ে লাভ হবে না যদি সংক্রমণের মূল উৎস চিহ্নিত না করে কমানোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল বাশার খুরশীদ আলম বলেন, মহামারি করোনাভাইরাস যেন আর না বাড়ে সেজন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনা বেড়ে গেলে সামাল দেয়া যাবে না। রাতারাতি হাসপাতাল বাড়ানো যাবে না। হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো হয়েছে। এটার একটা সীমাবদ্ধতা রয়েছে। ডিএনসিসি এক হাজার শয্যার হাসপাতাল তৈরি করেছে। সম্প্রতি বঙ্গমাতা ফিল্ড হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। হাসপাতালে শয্যা বাড়ানো সম্ভব হবে না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটি অব মেডিসিনের সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ বিল্লাল। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ, বিএসএমএমইউয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শরফুদ্দিন আহমেদ, স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল আর্সলান, মহাসচিব এম এ আজিজসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক আহমেদুল কবীর
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন