শিক্ষাকের মৃত্যু: ছাত্রলীগ নেতাসহ ৪ শিক্ষার্থী আজীবন বহিষ্কার
খুলনা সংবাদাদাতা: অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ চার শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে ৭৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আনিছুর রহমান ভুঁঞা জানান, অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদনে নাম আসা ৪৪ শিক্ষার্থীকেই বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে চার জনকে চিরতরে বহিষ্কার করা হয়েছে। সাত জনকে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার এবং হল থেকে চিরতরে বহিষ্কার করা হয়েছে। ১ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার এবং হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ২২ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়ে তা স্থগিত করে রাখা হয়েছে। তারা ভবিষ্যতে শৃঙ্খলাভঙ্গ করলে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। পাশাপাশি আরও ১০ জনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
সভায় কুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করা না হলেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ছাত্রদের কোনও প্রোগ্রাম নিতে হলে আগে ছাত্র কল্যাণ পরিষদ থেকে অনুমতি নিতে হবে। এ পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থাকা সব রাজনৈতিক ব্যানার-পোস্টার অপসারণ করা হবে।
সভায় অধ্যাপক সেলিম হোসেনের চাকরিকালীন পাওনাদি দ্রুত পরিবারকে বুঝিয়ে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একইসঙ্গে তার স্ত্রীর চাকরির বিষয়ে আগামী সিন্ডিকেট সভায় আলোচনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অধ্যাপক সেলিমের মৃত্যুর পর অভিযোগ ওঠে, কুয়েটে শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ কয়েকজন ছাত্র তাদের মনোনীত প্রার্থীকে ডাইনিং ম্যানেজার করার জন্য হল প্রভোস্ট ড. সেলিম হোসেনকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায়, ৩০ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বাধীন ছাত্ররা ক্যাম্পাসের রাস্তা থেকে ড. সেলিম হোসেনকে জেরা করা শুরু করেন।
পরবর্তী সময়ে তারা শিক্ষককে ধরে নিয়ে তার ব্যক্তিগত কক্ষে (তড়িৎ প্রকৌশল ভবন) প্রবেশ করেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তারা আনুমানিক আধঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। এরপর শিক্ষক সেলিম দুপুরে খাবার খেতে ক্যাম্পাস সংলগ্ন বাসায় যান। বিকাল ৩টার দিকে স্ত্রী লক্ষ করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
৩২
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন