লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের ৪ কোটি শিক্ষার্থী
নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকারী বিধিনিষেধ আর লকডাউনে লম্বা সময় ধরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষার স্তর পর্যন্ত বাংলাদেশে চার কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের শিশু তহবিলের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, যত বেশি সময় শিশুরা স্কুলের বাইরে থাকবে- সহিংসতা, শিশুশ্রম ও বাল্যবিয়ের ঝুঁকির কারণে তাদের স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা তত কমে যাবে।
গত বছরের মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। কয়েকদফা উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় গত প্রায় দেড় বছরে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরানো যায়নি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ নানা পর্যায় থেকে সরকারের উপর চাপ বাড়ছে।
লকডাউনে যেসব দেশে দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে তার মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।
দীর্ঘ সময় সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলে পড়াশোনার পাশাপাশি শিশুদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও মনস্তাত্ত্বিক সুস্থতার উপর ‘অত্যন্ত গুরুতর প্রভাব ফেলে’ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
“প্রান্তিক শিশুরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, যা তাদেরকে অধিক দারিদ্র্য এবং অসমতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে।
সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকলেও সরকার অনলাইনে ডিজিটালি শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার কথা বললেও বাস্তবতায় দেখা গেছে ইন্টারনেট ও ডিভাইস না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী যে এর বাইরে থাকছে। সেটিও বিভিন্ন জরিপে উঠে এসেছে।
এই প্রতিবেদনে ইউনিসেফ জানিয়েছে, প্রথমবার স্কুলে যাবে বিশ্বের এমন প্রায় ১৪ কোটি শিশুর পাঠচক্রে ঢোকার সুযোগ পিছিয়ে যাচ্ছে, যাদের প্রায় ৪০ লাখ শিশু বাংলাদেশের।
এই শিক্ষার্থীদের প্রায় ৮০ লাখ এমন স্থানে বাস করে, যেখানে পুরো সময় স্কুল বন্ধ রয়েছে। এ কারণে সশরীরে শিক্ষা গ্রহণের প্রথম দিনটির জন্য তারা এক বছরের বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছে, যা বেড়েই চলেছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটো ফোর বলেন, “যখন বিশ্বের অনেক জায়গায় ক্লাস পুনরায় শুরু হয়েছে, তখন প্রথম শ্রেণির লাখ লাখ শিক্ষার্থী এক বছরেরও বেশি সময় পর সশরীরে ক্লাসরুমে যাওয়ার অপেক্ষায় আছে। আরও লাখ লাখ শিশুর হয়তো এই মেয়াদেও স্কুলে একেবারেই যাওয়া হবে না।
“যারা সবচেয়ে ঝুঁকির মুখে রয়েছে তাদের জীবনে আর কখনোই স্কুলে ফিরতে না পারার ঝুঁকি প্রবল বেগে বাড়ছে।”
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন