রাম নবমীতে মসজিদের ইমামের ছেলেকে হত্যা
সাস নিউজ ডেস্ক: গত রবিবার আসানসোলে রাম নবমীর দিনে ১৬ বছর বয়সী যুবক মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় হসপিটালের মর্গে। গতকাল মৃতের বাবা মাওলানা ইমদাদুল রসিদী বলেন আমার ছেলেকে দাঙ্গাকারিরা নৃশংস ভাবে হত্যা করে। ছেলেকে দাফনের আগ মুহুর্তে কয়েক হাজার মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন যদি আমার ছেলের মৃত্যুর প্রতিশোধ নেওয়া হয় তাহলে আমি এই শহর ছেড়ে চলে যাবো। তিনি আরও বলেন এই শহরে শান্তি চান।
আসানাসোলের রেল পার পাড়ায় গত সোমবার দাঙ্গা হয়।
মঙ্গলবার ইমদাদুল রসিদীর পুত্র সিবাতুল্লা রসিদী মাধ্যমিক পরিক্ষা জন্য বাড়ি ছাড়েন। সূএের খবর সন্ধ্যার সময় ভীড়ের মাঝে দাঙ্গাকারীরা তাকে হত্যা করে। পুলিশ দেরিতে পৌছে তার দেহ টিকে তুলে হসপিটালে পাঠান বৃহস্পতিবার পরিবার টি তাকে চিহ্নিত করেন।
ইমদাদুল রসিদী সাংবাদিক দের বলেন, যখন আমার ছেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন তখন বাইরে বিশৃঙ্খলা ছিল। তিনি দাঙ্গাকারীদের একটি গ্রুপ তাকে আটকায়, আমার বড় ছেলে পুলিশকে সতর্ক করে দেয়, কিন্তু পুলিশ স্টেশনে তাকে অপেক্ষা করতে হয়। পরে পুলিশ জানায় যে একটি শরীর উদ্ধার করা হয়েছে পুলিশ। তিনি সকালে সনাক্ত করা হয়েছে,
চালতাডাঙার নুরানী মসজিদের ইমাম ইমদাদুল রসিদী গতকাল সন্ধ্যায় ছেলে কে কবর দেয়ার সময় শান্তির জন্য আবেদন করেছিলেন, বিকালে দুপুরে ঈদগাহ ময়দানে হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। তিনি বলেন আমি শান্তি চাই ! আমার ছেলেের সময় হয়েছে বলেই তাকে আমার থেকে নিয়ে নিয়েছেন। কোনও পরিবার তাদের প্রিয়জনদের হারিয়ে ফেলুক আমি সেটা চাইনা । আমি চাইনা কোন বাড়ী জ্বলতে। ইতিমধ্যেই সমাবেশে বলেছি যে যদি কোনও ধরনের প্রতিশোধ নেওয়া হয় তবে আমি আসানসোল ছেড়ে যাব। আমি তাদের বলেছিলাম যে যদি আপনি আমাকে ভালোবাসেন তবে আপনি একটি আঙ্গুল উঁচু করবেন না।
শেষ দশবছর আমি ইমামতি করছি। এটা গুরুত্বপুর্ন আমি মানুষের কাছে সঠিক ভাবে শান্তির বার্তা দিতে পেরেছি। এটা আমার ব্যক্তিগত ক্ষতি হয়েছে। তিনি আরও বলেন আসানসোলের লোকেরা এমন নই। ষড়যন্ত্রে স্বিকার হয়েছে আসানসোল। ইমাম বিক্ষুদ্ধদের শান্ত হতে বলেন এবং পুলিশের সহযোগিতার কথা বলেন। আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন আমরা গর্বিত এমন একজন ইমাম কে নিয়ে। আমরা সত্যিই বুঝতে পারছি ছেলেটা হারানোর পরও শান্তিতে বিশ্বাসী। আমরা সর্বধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।
আসানসোলের ২৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মহঃ নাসিম আনসারি বলেন, আমরা এমন একজন বাবার থেকে এত টা আশা করেনি, ছেলে হারানোর পরেও, আসানসোল, রাজ্যে, দেশের শান্তির জন্য দোয়া করছেন। উপস্থিত প্রত্যেকটি মানুষ কেঁদেছেন। সিবাতুল্লার দেহ পাওয়ার পরে আসানসোল আবার উওেজিত হওয়ার আগ মুহুর্তে তিনি একাই শান্ত করেন। কমপক্ষে দশ হাজার মানুষ সমাবেত হন সবাই কে শান্তির বার্তা দেন।
সৌজন্যে টাইমস বাংলা
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন