নিজস্ব প্রতিবেদক:অতীতে কয়েক দফায় সংস্কারের আলোচনা হলেও প্রথমবারের মতো জামায়াতে ইসলামীকে নতুন অবয়বে আনার প্রস্তাব করেছেন দলটির কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্যরা। মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করে বিতর্কে থাকা জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক ভবিষ্যত ও গত ১০ বছরের পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শূরা সদস্যরা এ প্রস্তাব করেন। দলের বর্তমান সংগঠন ও কাঠামো ঠিক রেখে নতুন নামে নতুন সংগঠন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার পুরো দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদকে। এই সংগঠনের নাম, কাঠামো, ধরন নিয়ে এ কমিটি কাজ শুরু করেছে। মঙ্গলবার (১২) ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোকপাত হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ সব দলেই সব সময় চিন্তা-ভাবনা থাকে। আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করছি। তবে এখনও মৌলিক কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি জামায়াতে ইসলামী।’
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার কয়েকজন সদস্য জানান, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক অবস্থান, উপমহাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর আচরণ এবং সর্বশেষ বিগত ১০-১২ বছর ধরে রাজনৈতিক যে বাস্তবতার মধ্য দিয়ে জামায়াতকে যেতে হয়েছে, সেসব দিক বিবেচনা করে ‘জামায়াত’ হিসেবে রাজনৈতিক সাফল্য অনেকটাই সুদূরপরাহত। এক্ষেত্রে গত জানুয়ারির মাঝামাঝিতে কেন্দ্রীয় শূরা সদস্যদের পৃথক-পৃথক বৈঠক থেকে প্রস্তাব আসে, দলের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে। এ বিষয়ে দলের নির্বাহী কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের। আজ মঙ্গলবার দিনে অনুষ্ঠিত নির্বাহী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার একাধিক সদস্য জানান, জামায়াতে ইসলামী নামে যে দল আছে, তা ঠিক থাকবে। নতুন সংগঠন হবে প্রাথমিকভাবে অরাজনৈতিক। ইতোমধ্যে দলের গঠনতন্ত্রের ৬ ধারার ৪ উপধারা স্থগিত করা হয়েছে। নতুন এই সংগঠনের সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবিরের নেতাকর্মীদের যুক্ত করা হবে। এছাড়া অন্যান্য দল থেকে আগ্রহী হলে তাদেরকেও যুক্ত করা হবে। গঠনতান্ত্রিকভাবে ৬ ধারার ৪ উপধারা স্থগিত করায় এই সংগঠনের মূল পরিচয় হবে সামাজিক, সাংস্কৃতিক। নতুন এই সংগঠনে বর্তমান জামায়াতের পরিচিত কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে না।
জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার একজন সদস্য বলেন, ‘সব বিষয়ে জিনিয়াসরা নিশ্চয়ই থাকবেন। নিশ্চয়ই দ্রুততার সঙ্গে কাজ করবেন। নাম কী হবে, তা নির্বাহী পরিষদ ঠিক করবে।’একাধিক শূরা সদস্য বলেন, ‘নতুন সংগঠন করতে মজলিসে শূরার সদস্যরা নির্ধারিত সময়সীমা বেঁধে দেননি। তারা প্রস্তাব করেছেন দ্রুততার সঙ্গে করতে।’ছাত্র শিবিরের সাবেক একজন কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, ‘আশা করছি চলতি বছরের মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ করে আনা হবে।’
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন