দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা পঞ্চগড়ে
পঞ্চগড় সংবাদদাতা: দেশের সর্ব উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ে দিন দিন বেড়েই চলেছে শীতের দাপট। উত্তর দিক থেকে বয়ে আসা হিমালয়ের হিম বাতাসের কারণে গত কয়েক দিন ধরে এ জেলায় তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে। ফলে মাঘ মাসের কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া ও সাধারণ মানুষ।
শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ বিহার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এ জেলায় সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিক থেকে হিমেল হাওয়া বইতে শুরু করে। পাশাপাশি রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘন কুয়াশায় আচ্ছাদিত হয়ে পড়ে পুরো জেলা, যা পরদিন সকাল পর্যন্ত কনকনে শীত ও কুয়াশায় মোড়ানো থাকে। এ ছাড়া বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছুটা সূর্যের আলো পরিলক্ষিত হলেও সূর্যের তেমন উত্তাপ থাকে না। এ মাঘের শীতে মানুষ কাজকর্ম তেমন করতে পারে না। কনকনে শীতের কারণে সময় মতো কাজে যেতে পারছে না। অন্যদিকে দিন দিন জেলার আধুনিক সদর হাসপাতালসহ বাকি চার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেড়েছে রোগীর চাপ সামলাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। এ ছাড়া কৃষি ক্ষেত্রেও শীতের কারণে শ্রমিকসংকট দেখা দিয়েছে। শীত ও কুয়াশার কারণে বোরো বীজতলা, গম খেত ও আলু খেতের ক্ষতির আতঙ্কে কৃষকরা।
এদিকে জেলা প্রশাসন বলছে, জেলার ৫ উপজেলার ৪৩টি ইউনিয়ন ও ৩টি পৌরসভায় গরিব, অসহায় ও শীতার্ত মানুষদের জন্য ৩৩ হাজার ৬শ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর এলাকার বাসিন্দা জহুরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে কনকনে শীত অনূভুত হওয়ায় আমরা কাজকর্ম করতে পারছি না। কাজ না করলে চলার উপায়ও নেই, ফলে শীতের মধ্যেও কাজ করতে হচ্ছে। আমরা গরিব মানুষ, কিন্ত কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।
তেঁতুলিয়া মহানন্দা নদীতে পাথর উত্তোলনের শ্রমিক হিসেবে কাজ করা রবিউল ইসলাম বলেন, কনকনে শীতের কারণে নদীর পানি অনেক ঠান্ডা, ফলে আমরা নদীতে নামতে পারছি না, পাথরও তেমন উত্তোলন করতে পারছি না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন পার করছি।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, শনিবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে তাপমাত্রা আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন