‘দেশীয় গরুর খামারিদের রক্ষা করতেই হবে’
নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘নানা প্রতিকূল এবং অনিশ্চয়তার মধ্যেই আমাদের কৃষকরা বেঁচে থাকার চেষ্টা করেন। এদেশে গরুর খামারিরাও প্রতিকূল পরিস্থিতি সামলে আজকের বাজার তৈরি করেছেন। গরুর খামার তৈরি করা সহজ ছিল না। খামার কৃষি শিল্পের বিশাল জায়গা তৈরি করতে পারে, তা আজ প্রমাণ হয়েছে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতেই হবে। লকডাউন হোক আর যে কোনো পরিস্থিতি তৈরি করা হোক, গরুর খামারিদের রক্ষা করতেই হবে।’
বলছিলেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবিএম মির্জা আজিজুল ইসলাম। লকডাউন পরিস্থিতি এবং কোরবানির গরুর বাজার প্রসঙ্গ নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। একই প্রসঙ্গ নিয়ে মতামত জানতে চাওয়া হয় অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছেও।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ঈদকে ঘিরে বিশাল বাজার তৈরি হওয়ার রেওয়াজ দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সরকারী বিধিনিষেধের কারণে সে বাজারে ধস নেমেছে। মানুষের হাতে নগদ টাকার প্রবাহ কমে গেছে। নগদ টাকার প্রবাহ না থাকলে যে কোনো বাজারই বিপর্যের মুখে পড়ে।
তিনি বলেন, গত কোরবানির বাজার নিয়েও অস্থিরতা ছিল। প্রকৃত খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। শেষের দিকে রাজধানীর কোরবানির হাটে গরুই পাওয়া গেল না। অথচ দালাল মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভবান হলো। খামারিরা মার খেলেন। তার মানে করোনার বিশেষ সময় বিশেষ বাজার তৈরি করে যে খামারিদের রক্ষা করা যায়, তা নিয়ে সরকারের মধ্যে তাগিদ ছিল না। হুট করে হাটের সংখ্যা কমিয়ে দিলেই সমাধান হবে, তা নয়। বিকল্প হাট তৈরি করা সময়ের দাবি ছিল। তা হয়নি। এবারও তাই হচ্ছে।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, একজন খামারি শত কষ্ট করে বছর ধরে একটি বা দুটি গরু পালন করেন। উপলক্ষ কোরবানির বাজার। এমন খামার হাজার হাজার তৈরি হয়েছে। এসব খামার রক্ষা করা রাষ্ট্রের দায়। ভারতের গরু প্রবেশ করিয়ে বা অন্য কোনো পরিস্থিতি তৈরি করে খামারিদের ক্ষতি করা হলে হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসান গুনবে মানুষ।
মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, গত দুই বছরে ঈদ বাজার নিয়ে সঠিক বিকল্প উপায় বের করতে পারেনি সরকার। বেসরকারি প্রচেষ্টা আটকে দিলে সরকারি চেষ্টা যে অব্যাহত রাখা জরুরি, তা আমরা দেখতে পাইনি। বাজার বন্ধ করে দিলে, লকডাউন দিলে কৃষক, খামারি তাদের ফসল কীভাবে সরবারহ করবে তা নিয়ে সরকার পথ দেখাতে পারেনি। সরকার হয়তো ভেবেছে সব বন্ধ করে দিলেই সমাধান।
আজিজুল ইসলাম বলেন, আসন্ন কোরবানির বাজার রক্ষায় এখনও ভাবনার সময় আছে। অন্তত খামারিরা যেন বিগত বছরের মতো লোকসান না গোনেন, তার নিশ্চিয়তা রাখতে হবে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন