দর্শনা চিনিকলে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু
চুয়াডাঙ্গা সংবাদাদাতা: ২০২১-২২ অর্থবছরে আখ মাড়াই মৌসুম শুরু করেছে দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল চুয়াডাঙ্গার দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। গতকাল শুক্রবার শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার উপস্থিত থেকে চিনিকলের কেইন কেরিয়ারে আখ নিক্ষেপের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের মাড়াই মৌসুম উদ্বোধন করেন।
১৯৩৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের সবচেয়ে বড় চিনিকল দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি। চিনি উৎপাদন কারখানা, ডিস্টিলারি, জৈব সার কারখানা এবং ওষুধ কারাখানার সমন্বয়ে গঠিত বৃহৎ এ শিল্প কমপ্লেক্সের চিনি কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে অব্যাহতভাবে লোকসান গুনে আসছিল। সরকারিভাবে চিনির মূল্যবৃদ্ধির কারণে কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে কারখানাটি।
তবে চিনির মূল্য বাড়লেও আশানুরূপ হারে আখের মূল্য সেভাবে বাড়েনি বলে অভিযোগ চাষিদের। বর্তমানে মিলে আখের মূল্য প্রতি মণ ১৪০ টাকা। তবে প্রতি মণ ২৫০ টাকা দাবি করেছে চাষিরা।
কেরু অ্যান্ড কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন জানান, মাড়াই মৌসুম শুরু করতে চিনিকলের সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। তবে চিনিকল এলাকায় আখের চাষ কম হয়েছে। এজন্য এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকে নেমে এসেছে। মিল চালু হলে চলতি বছর চিনিকল এলাকায় আখ চাষের পরিমাণ বেশি হবে।
চলতি মৌসুমে কেরু মিলজোনে দ-ায়মান আখ রয়েছে চার হাজার ৬২৭ একর জমিতে। এছাড়া পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়া চিনিকলের চার হাজার মেট্রিক টন আখ কেরু চিনিকলে মাড়াই করা হবে।
এ মৌসুমে ৩০ থেকে ৪০ মাড়াই দিবসে প্রতিদিন গড়ে ১১৫০ মোট্রিক টন আখ মাড়াই করবে চিনিকলটি। ৫৫ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে শতকরা ৬ ভাগ চিনি আহরণের মাধ্যমে তিন হাজার ৬০০ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক চললে মোটা অংকের লোকসান কমিয়ে এ বছর লাভের মুখ দেখবে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি, এমনটিই আশা করছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীন দেশের ১৫টি রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলের মধ্যে অব্যাহত লোকসানের কারণে সরকার গতবছর ছয়টি চিনিকল বন্ধ করে দেয়। চালু রাখে নয়টি।
চালু চিনিকলগুলো হলো-দর্শনা কেরু অ্যান্ড কোম্পানি, ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকল, ফরিদপুর চিনিকল, রাজশাহী চিনিকল, নাটোরের নর্থ বেঙ্গল চিনিকল, ঠাকুরগাঁও চিনিকল, জয়পুরহাট চিনিকল, জামালপুরের জিলবাংলা চিনিকল।
বন্ধ ছয়টি চিনিকলগুলো হলো-কুষ্টিয়া চিনিকল, পাবনা চিনিকল, পঞ্চগড় চিনিকল, রংপুর জেলার শ্যামপুর চিনিকল, গাইবান্ধা জেলার রংপুর চিনিকল ও দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ চিনিকল।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন