ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার পরও প্রশাসনিক ভবন অবরোধ
নিউজ ডেস্ক: সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।
তবে ওই শিক্ষিকাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্তের দাবিতে এখনো আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে উপাচার্যসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (০১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আন্দোলনরত একাধিক শিক্ষার্থী, বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী সোহাগ হোসাইন বলেন, আমরা চার বছর হলো শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সহ্য করছি। তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কিন্তু আমরা সেটি মানি না। তার স্থায়ী বরখাস্ত চেয়ে আমাদের এই আন্দোলন চলছে। তবে আমরা তদন্ত কমিটির ওপরে আস্থা রেখে আমাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছি। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের বিপক্ষে গেলে আমরা আমাদের আন্দোলন আরও বেগবান করবো।
রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রধান লায়লা ফেরদৌস হিমেল বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষিকাকে সাময়িক বরখাস্ত ও ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণার পরও শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষিকার স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও তারা গতকাল থেকে ভেতরে প্রশাসনিক ভবনে উপাচার্যসহ কয়েকজনকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গতকাল শুধু তদন্ত কমিটির পাঁচ শিক্ষককে তারা বের হতে দিয়েছে। তারা হয়তো ভাবছে- যেহেতু ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, তাহলে হয়তো এই প্রতিবেদন আর জমা হবে না বা ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের বুঝিয়েছি আন্দোলন না করার জন্য। বলেছি আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেই, যদি সেটা তোমাদের পছন্দ না হয় প্রয়োজনে তখন তোমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিও। আগামী রোববার বা সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হতে পারে বলেও জানান লায়লা ফেরদৌস হিমেল।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্রেজারার আব্দুল লতিফ বলেন, শিক্ষার্থীরা এখনো বাইরে অবস্থান নিয়ে আছে। তবে আমি যখন নামাজে গেলাম তখন তারা গেট খুলে দিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা আপাতত অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে একটা ব্যবস্থা নিয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসও বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরপরও তাদের এই আন্দোলন ছেলে মানুষি ছাড়া আর কিছু না।
আব্দুল লতিফ বলেন, এভাবে বেশি দিন তো চলতে পারে না। যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে আমাদের শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে হবে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন