কেউ ফায়ার করলে বিজিবিও পাল্টা ফায়ার করবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘বিজিবি যদি দেখে কেউ ফায়ার করছে, তখন তারা পাল্টা ফায়ার করবে। নিরাপরাধ লোককে ফায়ার করা বিজিবির কাজ নয়। সীমান্ত রক্ষার জন্য যা যা প্রয়োজন, বিজিবিকে সেটা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বলপ্রয়োগে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত জাতীয় কমিটির সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এসব সিদ্ধান্ত জানান। তিনি সভায় সভাপতিত্ব করেন।
সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউসসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
পরারাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, মায়ানমার সীমান্তে এখন থেকে গুলি হবে, বিষয়টি আজকের সভায় এসেছিল কিনা-
এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘সীমান্তে গোলাগুলির কোনো উদ্দেশ্য আমাদের নেই। কেউ যদি সীমান্তের নিয়ম ভাঙে, তখন বিজিবি ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কেউ যদি ফায়ার ওপেন করে, বিজিবিও পাল্টা ফায়ার ওপেন করে।’
সন্ধ্যার পর ভাসানচর থেকে নোয়াখালী কিংবা হাতিয়ায় যাতায়াত বন্ধ থাকবে বলেও এ সময় জানান আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজার ও ভাসানচরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর ভেতরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। এসব এলাকায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি বাড়ানোরও ব্যবস্থা করা হবে। নিরাপত্তা বাড়াতে এপিবিএন কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট দেওয়া হবে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ক্যাম্পের ভেতরে পুলিশ, এপিবিএন, আনসার ও র্যাবের যৌথ টহল আরও বৃদ্ধি করা হবে। ক্যাম্পের বাইরে সেনবাহিনী, বিজিবি, র্যাব রয়েছে। তারা সবসময় সতর্ক অবস্থায় সবসময় রয়েছে ও থাকবে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মাদক প্রবেশ, মাদক ব্যবস্থা ও বিক্রয় রোধে মনিটরিং বাড়ানো হবে। মাদকের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক অভিযান চালানো হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্যাম্পগুলোতে কাটাতারের বেড়া নির্মাণ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বেশ কিছু ওয়াচ টাওয়ার হয়েছে, আরও হবে। অভ্যন্তরীণ রাস্তার কাজও শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। কোনো কোনো জায়গায় অনেকখানি হয়েছে। আর্মির ইঞ্জিনিয়ারিং কোর সেটা করছে। সেখানে ফায়ার সার্ভিসের সুবিধাও বাড়ানো হচ্ছে।’
এছাড়া মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে সীমান্তে টহল আরও বাড়ানো জানিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘নাফ নদীতে আইনশৃঙ্খলা বহিনীর তদরকি আরও জোরদার করা হবে। প্রয়োজনে উখিয়া ও টেকনাফে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে।’
রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে প্রতিনিয়ত চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা অব্যাহত থাকবে। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক ব্যবস্থা চলছে। দ্বিপাক্ষিক কথাবার্তা আরও জোরদার করা হবে।’
রোহিঙ্গাদের জন্মহার প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘লাগমহীনভাবে এদের ফ্যামিলির পরিসর বেড়ে যাচ্ছে। জন্মহার নিয়ন্ত্রণ ও নতুন জন্ম নেয়া রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্তিকরণের বিষয়টি আলোচনায় আসছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ভাসানচরে ডিসেম্বর থেকে স্বল্প সময়ের মধ্যে আমাদের টার্গেট, এক লাখ রোহিঙ্গা নিয়ে যাওয়ার। সেটা আমরা জোরদার করব। যাতে ডিসেম্বর থেকে শুরু করে এক লাখ রোহিঙ্গা তারপর আরও অবশিষ্ট অংশ সেখানে নেব। তাদের থাকা, নিরাপত্তা, আসা-যাওয়ার জন্য যা যা লজিস্টিক সাপোর্ট দরকার, সেগুলো সেখানে ব্যবস্থা করা হবে।’
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন