উচ্চগতির ইন্টারনেটে ‘তার বিহীন’ নেটওয়ারর্কের চ্যালেঞ্জ
নিউজ ডেস্ক: দেশের তৃণমূল পর্যায়ের কাছে নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দিতে তার বিহীন নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে এক আলোচনায় মতামত এসেছে। ফাইভজিসহ অন্যান্য নতুন প্রযুক্তি তার বিহীন করতে পারলেই তৃণমূল পর্যায়ের গ্রাহকদের এর সুবিধা পেতে সহজ হবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখে পলিসি নেওয়া প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) গুলশানে হুয়াওয়ের কাস্টমার সল্যুশন ইনোভেশন অ্যান্ড ইন্টিগ্রেশন এক্সপেরিয়েন্স সেন্টারে (সিএসআইসি) টেলিকম রিপোর্টার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ (টিআরএনবি) এবং হুয়াওয়ের আয়োজিত নলেজ শেয়ারিং সেশনে এমন পরামর্শ এসেছে।
জিএসএমএ মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের আদলে হুয়াওয়ে সিএসআইসি’তে সাত থেকে ১১ এপ্রিল এক মিনি কংগ্রেস আয়োজন করতে যাচ্ছে। এই আয়োজনের নানা প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে নলেজ শেয়ারিং সেশনের আয়োজন করা হয়।
বিভিন্ন দেশে প্রযুক্তির বিস্তারের অভিজ্ঞতা নিয়ে হুয়াওয়ে বাংলাদেশের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা জেরি ওয়াং বলেন, দিন দিন স্মার্ট টেকনোলজির বিস্তার বাড়ছে। এখন স্মার্ট সল্যুশন্স যেমন- স্মার্ট হসপিটাল, স্মার্ট ইউনিভার্সিটি, স্মার্ট সিটির ওপর নির্ভরতা তৈরি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ভিন্ন ভিন্ন অপারেটর এবং বিভন্ন ভিন্ন পলিসির কারণে বাংলাদেশে প্রযুক্তি সেবায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। টেলিযোগাযোগ শিল্প সম্প্রসারণের জন্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে খোলা মন নিয়ে আলোচনা করতে হবে। নতুন নতুন প্রযুক্তি যতো তাড়াতাড়ি ব্যবহার করা যাবে ততো নেটওয়ার্ক সম্প্রসারিত হবে।
হুয়াওয়ে বাংলাদেশের পরিচালক (মার্কেটিং) এসএম নাজমুল হাসান বলেন, উচ্চ গতির ইন্টারনেট থাকলেও গ্রাহক পর্যায়ে না যাওয়াটাই এখন চ্যালেঞ্জ। তৃণমূল পর্যায়ের গ্রাহকের কাছে ইন্টারনেট সেবা নিরবিচ্ছিন্ন করতে হলে তার বিহীন যোগাযোগ গড়ে তুলতে হবে। নতুন প্রযুক্তি তার বিহীন করতে পারলেই তৃণমূল পর্যায়ের গ্রাহকরা এর সুবিধা পাবে। এক্ষেত্রে লাইসেন্স সংক্রান্ত পলিসির ওপর নজর দিতে হবে।
ওয়্যার লেস বা তার বিহীন নেটওয়ার্ক আলোচনায় ‘এয়ার ফাইবার টেকনোলজি’ নিয়ে ধারণা দেন নাজমুল হাসান। তিনি বলেন, এই প্রযুক্তি মোবাইল টেকনোলজির মতই। এশিয়ার দেশ শ্রীলংকা ২০১৩ সাল থেকে এয়ার ফাইবার টেকনোলজি ব্যবহার করছে। ৪ এমবিপিএস দিয়ে শুরু করলেও এখন তারা ১০ এমবিপিএস গতি দিচ্ছে। পলিসিগত কারণে তারা বেশি গতি পাচ্ছে।
নাজমুল হাসান আরও বলেন, প্রযুক্তি ব্যবস্থায় প্রতিষ্ঠান এবং বাসা-বাড়িতে অটোমেশন করা গেলে ১০ জনের কাজ দুই/তিনজনকে দিয়ে করা সম্ভব। এতে উৎপাদন খরচ কমে আসবে এবং বেশি উৎপাদন হবে।
অনুষ্ঠানে টিআরএনবি সভাপতি মুজিব মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল আনোয়ার শিপু বক্তব্য রাখেন।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে ফাইভজি আনতে বিলম্ব নেই। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও ফাইভজি চালু হবে। গত বছরের জুলাইয়ে বিশ্বের অন্যতম তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের সঙ্গে রবি ও বিটিআরসি মিলে ফাইভজি’র সফল পরীক্ষা চালানো হয়।
হওয়াওয়ে বলছে, সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলাই হুয়াওয়ের উদ্দেশ্য। গ্রাহক-কেন্দ্রিক নতুনত্ব এবং উন্মুক্ত অংশীদারিত্বের দ্বারা পরিচালিত হয়ে হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সমাধান পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে; যা গ্রাহকদের টেলিকম ও এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, ডিভাইস এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এর সুবিধাসমূহ প্রদান করে।
প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে। এক লাখ ৮০ হাজার কর্মী নিয়ে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে কাজ করে চলেছে। এই বিশাল সংখ্যক কর্মীরা বিশ্বব্যাপী টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের সর্বোচ্চ মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন