রাজবাড়ীর গ্রাহকদের প্রশ্ন: রমাদ্বান শরীফ মাস আসলেই কেন বাড়ে লোডশেডিং?
রাজবাড়ী সংবাদদাতা: রমাদ্বান শরীফ সিয়াম সাধনার মাস। এ সময় রোজা রাখা ও নামাজ আদায় করেন সকল শ্রেণীর মানুষ। কিন্তু রমাদ্বান শরীফের শুরু থেকে তারাবীহ নামাজ ও ইফতারের সময় বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন রাজবাড়ীর বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
রাজবাড়ী পৌর এলাকার তুলনায় ইউনিয়ন বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ বেশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের শিকার হচ্ছেন। ফলে তারা বিদ্যুতের আলোয় সেহেরি ও ইফতার করতে পারছেন না। এমনকি অন্ধকারেই তীব্র গরমে তারাবিসহ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হচ্ছে মুসলমানদের।
এদিকে ইফতার, সেহরি ও তারাবীহ সময় বিদ্যুৎ না থাকায় রমাদ্বান শরীফের প্রথম দিন থেকে জেলার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ফেসবুকে নানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন।
আল মামুন নামের একজন লিখেছেন, ‘রাজবাড়ীর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের আর, ই, কি ইহুদি? যদি তাই না হয় ইফতারের সময়ই কেন প্রতিদিন কারেন্ট যাবে??’
শাহিন নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘হায়রে পল্লী বিদ্যুৎ তুমি কি দেখাইলা, শুধু নামাজের সময় থাকো না।’
মোকলেছুর রহমান লিখেছেন, ‘রমাদ্বান শরীফের আগে পরে বিদ্যুৎ থাকে মোটামোটিভাবে, রমাদ্বান শরীফ এলে বিদ্যুৎ কেন যে হয় নড়বড়ে বলতে পারেন আপনারা সবে? এমন খেলা তাহলে কে খেলে!’
মীর সৌরভ লিখেছেন, ‘রাজবাড়ীতে ১৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র করে কি লাভ হলো..? যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতই না থাকে।
জেলা শহরের বেশ কয়েকজন বলেন, যে দেশে ৯০ ভাগের বেশি মানুষ মুসলিম, সে দেশে ইফতার-সেহরি ও তারাবীহ মতো সময় অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে। রমাদ্বান শরীফের শুরু থেকে কোনো না কোনো সময় আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না। এ সময় চার্জার লাইট ব্যবহার করলেও গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়তে হচ্ছে। গরমে নামাজ পড়তেও কষ্ট হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, শহরের তুলনায় গ্রাম অঞ্চলের মানুষ আরও বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সেহরি, ইফতার ও নামাজের সময় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজবাড়ীর বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, রাজবাড়ীতে বর্তমানে ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকদের দিনে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। চাহিদার তুলনায় সেন্ট্রালি কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় কিছুটা লোডশেডিং হচ্ছে। তবে সেটা সামান্য। বিশেষ করে রাজবাড়ীতে পিক আওয়ারে ৫০ থেকে ৫৫ মেগাওয়াটের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু রাজবাড়ীর ১৫০ মেগাওয়াট ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র পাচ্ছে ৪৫ মেগাওয়াট। যে কারণে জেলার বিভিন্নস্থানে লোডশেডিং থাকছে।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ওজোপাডিকো) রাজবাড়ীর নির্বাহী প্রকৌশলী আমিনুর রহমান বলেন, চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ পাচ্ছি, যার কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। পিক আওয়ারে চাহিদা থাকে ২১-২২ মেগাওয়াট। কিন্তু গ্রিড থেকে পাই ১৬-১৭ ওয়াট। কোনো কোনো সময় এর থেকেও কম পাই। বিশেষ করে পিক আওয়ারে ইফতার, তারাবীহ নামাজ রয়েছে। এ সময়টাতে এমনি বিদ্যুৎ বেশি প্রয়োজন হয়।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন