পর্দানশীন মহিলাদের নাগরিক অধিকার হরণের ফন্দি-ফিকির বন্ধ করুন- জাসদকে মহিলা আনজুমান
নিজস্ব প্রতিবেদক: মহিলা আনজুমানের সংবাদ সম্মেলনের বিরোধীতা করে জাসদ (ইনু) ও জাতীয় নারী জোটের দেয়া বিবৃতির পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে মহিলা আনজুমান। এক বিবৃতিতে জাসদ (ইনু) ও জাতীয় নারী জোটকে পর্দানশীন মহিলাদের নাগরিক অধিকার হরণের ফন্দি-ফিকির বন্ধের আহবান জানায় তারা। উল্লেখ্য গত ২৫শে মার্চ জাসদ (ইনু) ও জাতীয় নারী জোট এক বিবৃতিতে, রাজারবাগ দরবার শরীফের মহিলা আনজুমান কর্তৃক নারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক একাউন্ট, ওএমএস কার্ড, বয়স্ক নারীদের ভাতা কার্ড, বিধবা/স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের ভাতাকার্ড ইত্যাদি ক্ষেত্রে নারীর ছবির বদলে ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যবহারের দাবিকে নারীদের অধিকার বঞ্চিত করার নোংরা ফন্দিফিকির বলে অভিহিত করেছিলো। সেই বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে আজ এই পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে মহিলা আনজুমান।
বিবৃতিতে মহিলা আনজুমানের সদস্যরা বলেন, বাংলাদেশের সাংবিধানিক রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। পাশাপাশি সংবিধান তার ৪১ (১) ক অনুচ্ছেদে একজন নাগরিককে ধর্ম পালনের পূর্ণ অধিকার দিয়েছে। সেই ধর্ম পালনের স্বাধীনতা থেকেই একজন মহিলা কোরআন-সুন্নাহ অনুসারে পর্দা করেন। কিন্তু সেই পর্দা করার কারণে অনেক মহিলাকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। দুঃখজনক বিষয় হলো, অনেক সংগঠন নারীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার দাবী করলেও এসব মা-বোনদের সমস্যার কথাগুলো কখনও জনসম্মুক্ষে নিয়ে আসেনি। আমরাই সর্বপ্রথম মহিলা আনজুমানের পক্ষ থেকে সেই সব পর্দানশীন মা-বোনদের সমস্যার কথাগুলো জনসম্মুক্ষে নিয়ে আসি এবং তাদের রাষ্ট্রীয় সুবিধা ও নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার দাবী তুলি। আশ্চর্জনক বিষয় হচ্ছে, একটি বিশেষ মহল পর্দানশীন মহিলাদেরকে অধিকার বঞ্চিত করে রাখতে সেই ন্যায্য দাবীর বিরোধীতা শুরু করেছে। তাদের সাথে তাল মিলিয়ে জাসদ (ইনু) এবং জাতীয় নারী জোট এ বিবৃতি দিয়েছে।
মহিলা আনজুমান সদস্যরা বলেন, জাসদ (ইনু) ও জাতীয় নারী জোটের বিবৃতিই বরং পর্দানশীন মহিলাদের নাগরিক অধিকার হরণের ফন্দি-ফিকির বলে প্রতীয়মান হয়। তারা এসব ফন্দি-ফিকির বন্ধ করতে জাসদ (ইনু) ও জাতীয় নারী জোটের প্রতি আহবান জানান।
মহিলা আনজুমান সদস্যরা বলেন, গত ২১ শে মার্চ ২০২২ তারিখে সংবাদ সম্মেলনে আমরা পর্দানশীন বোনদের বঞ্চিত অধিকার আদায়ের দাবীতে একটি তালিকা তুলে ধরি এবং উদাহরণস্বরূপ ৪ জন পর্দানশীন বোনের ঘটনা বর্ণনা করি। (বক্তব্যের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সংযুক্ত)। জাসদ ও নারী জোটের উদ্দেশ্যে তারা বলেন, আপনারা যদি পর্দানশীন মহিলাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করতে না চান, তবে না করেন। কিন্তু দয়া করে, তাদেরকে অধিকার বঞ্চিত করে রাখার পাঁয়তারা করবেন না।
মহিলা আনজুমান বিবৃতিতে জাসদ ও জাতীয় নারী জোটকে উদ্দেশ্য করে বলেন, বায়োমেট্রিক হচ্ছে বিজ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তিনির্ভর পদ্ধতি, যার নির্ভুলতা ও নির্ভরযোগ্যতা সারা বিশ্বে স্বীকৃত। উন্নত ও আধুনিক রাষ্ট্রগুলো তাই সনাক্তকরণে ছবির বদলে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিই গ্রহণ করছে। খোদ বাংলাদেশেও ‘জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন আইন ২০১০’ এ সনাক্তকরণে ছবির বদলে বায়োমেট্রিককেই গ্রহণ করা হয়েছে। বায়োমেট্রিকের মত অত্যাধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর পদ্ধতি গ্রহণ করলে নারীরা পশ্চাৎপদ ও অন্ধকারে যাবে, এমন বক্তব্য দিয়ে জাসদ (ইনু) বা জাতীয় নারী জোট প্রমাণ করেছে, তাদের প্রযুক্তি জ্ঞানের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। মহিলা আনজুমানের সদস্যরা তাই জাসদ (ইনু) ও জাতীয় নারী জোটের কর্মীদের প্রযুক্তি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে তারপর মন্তব্য করার উপদেশ দেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন