স্টিলের মূল্য কমাতে ৪ দফা সুপারিশ
নিজস্ব প্রতিবেদক: স্টিলের কাঁচামাল ও কেমিক্যালের জন্য বাংলাদেশ প্রধানত আমদানি নির্ভর। বর্তমানে স্টিলের কাঁচামাল ও স্টিল উৎপাদনের কেমিক্যাল দুষ্প্রাপ্যতায় আন্তর্জাতিকভাবে স্টিলের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে নির্মাণকাজ ও অবকাঠামো উন্নয়নেও। তাই স্টিলের মূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে এ দাবি জানান বাংলাদেশ স্টিল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শহিদউল্লাহ।
আমদানি ব্যয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কাঁচামাল মেল্টিং ক্র্যাপের টনপ্রতি মূল্য ২০২০ সালের মার্চ-এপ্রিলে মাসে ছিল ৩০০-৩২০ ইউএস ডলার। বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫০-৫৯০ ইউএস ডলারে দাঁড়িয়েছে। অর্থাৎ, এই সময়ের ব্যবধানে স্ক্র্যাপের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৩ হাজার ৪৯০ টাকা। অন্যদিকে স্টিল উৎপাদনের প্রধান কেমিক্যাল ফেরো এ্যালয়েজ টনপ্রতি মূল্য ছিল ৮০০ থেকে ৮৫০ ইউএস ডলার। এটির বর্তমানে মূল্য ১ হাজার ৪২০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ ইউএস ডলার। অর্থাৎ, এই সময়ের ব্যবধানে মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৫২ হাজার ২০০ টাকা। এছাড়া কাঁচামাল সরবরাহকারী কন্টেইনার সংকটের কারণে কন্টেইনার ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় চার গুণ।
সুপারিশগুলো হলো:
> এম এস প্রডাক্ট উৎপাদন/সরবরাহ পর্যায়ে নিম্নোক্ত হারে ভ্যাট নির্ধারণের ক্ষেত্রে মেন্টেবল স্ক্যাপ থেকে প্রস্তুত সব বিলেটের দাম প্রতি মেট্রিক টন এক হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকা করা; বিলেট থেকে প্রস্তুত এমএস পণ্যের দাম প্রতি মেট্রিক টন এক হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ২৫০ টাকা করা; মেল্টেবল স্ক্র্যাপ থেকে প্রস্তুত বিলেট এবং বিলেট থেকে প্রস্তুত এম এস পণ্যের দাম প্রতি মেট্রিক টন ২ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫০০ টাকা করা।
> আমদানি পর্যায়ে সিডি/এআইটি/আরডি নির্ধারণের ক্ষেত্রে কাঁচামাল স্ক্র্যাপের উপর আরোপিত সিডি ১ হাজার ৫০০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা ও এআইটি ৫০০ টাকার পরিবর্তে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা; স্পঞ্জ আয়রনের উপর আরোপিত সিডি ৮০০ টাকা প্রত্যাহার করা ও এআইটি ৫০০ টাকা থেকে কমিয়ে ১০০ টাকা নির্ধারণ করা; কেমিক্যাল ফেরো এ্যালয়েসের উপর আরোপিত আরডি প্রত্যাহার করা।
> এছাড়া বিক্রয় পর্যায়ে কর এমএস রডের বিক্রয়ের ক্ষত্রে উৎসে কর কর্তন ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ নির্ধারণ করা; স্টিল সেক্টরে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা।
> চট্টগ্রাম বন্দর হতে পানগাঁও বন্দর পর্যন্ত নদী পথের পরিবহন খরচসহ পানগাঁও বন্দরের খরচ কমিয়ে আনা, চট্টগ্রাম থেকে পানগাঁও আগামী ৬ মাসের মধ্যে সার্ভিস চালু করা ও কন্টেইনার জাহাজসহ বাল্ক পণ্যবহনকারী ৫ হাজার টনের ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ আমদানির ব্যবস্থা করা; কমলাপুর আইসিডি গাজীপুরে স্থানান্তর করা অথবা কমলাপুর আইসিডির ন্যায় অনুরূপ আইসিডি গাজীপুরে স্থাপন করা এবং চট্টগ্রাম বন্দর ও ঢাকার মধ্যে কন্টেইনার ট্রেন সার্ভিস বৃদ্ধি করা।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন