বিমানবন্দরে অশুভ আচরণ, ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানী ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসেই প্রবাসীদের পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। বিমানবন্দরের কর্মরত কর্মকর্তাদের অশুভ আচরণে ক্ষুব্ধ প্রবাসীরা। তাদের অভিযোগ, বেল্ট থেকে মালামাল অগোছালো ভাবে নিচে ফেলে রাখা হচ্ছে। যারা বেল্টের দায়িত্বে রয়েছেন তাদের আন্তরিকতার অনেক অভাব রয়েছে। তাঁদের কাছে কিছু জানতে চাইলে ধমকের স্বরে কথা বলেন।
সরেজমিনে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল -১ ও ক্যানপি-১ এর গেটের সামনে প্রবাসীদের সাথে কথা বললে, তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন হুমায়ুন। বিমানবন্দরের টার্মিনালে-১ এর (ক্যানপি-১) স্বজনদের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। যাবেন কুমিল্লা। তিনি বলেন, চার মাস আগে গিয়েছিলাম সৌদি আরব। অসুস্থতার কারণে দেশে ফিরে এসেছি।
তিনি বলেন, প্লেন থেকে নেমেছি দুপুর দুইটায়। কাস্টমস হয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে এয়ারপোর্ট থেকে বের হতে আমার সময় লেগেছে দেড় ঘন্টা। বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের কথা কি বলবো? বাঙালি আসলে খুব খারাপ। এই দেশের মানুষ যদি কোনভাবে উচ্চ পর্যায়ে চলে যায় তারা মানুষকে মানুষ মনে করে না। আমি যদি ওদের মারতে পারতাম, তাও আমার রাগ কমত না।
রিয়াদ থেকে শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে টার্মিনাল-১ এর (ক্যানপি-১) গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন আলাউদ্দিন। যাবেন ফেনী। তিনি বলেন, সিডিউলের থেকেও দেড় ঘণ্টা আগে বিমান ঢাকায় ল্যান্ড করেছে। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে দুই ঘন্টারও বেশি সময় লেগেছে লাগেজ পাইতে।
অভিযোগ করে তিনি বলেন, বেল্ট থেকে সকলের মালামাল অগোছালো ভাবে নিচে ফেলে দিয়েছে। তাই আমার লাগেজ খুঁজে বের করতে অনেক সময় নষ্ট হয়েছে। ৩৫ থেকে ৪০ জন্য লোক দেখলাম বেল্টের সামনে তাদের লাগেজ খুঁজে পাচ্ছে না। মালামালের জন্য দুশ্চিন্তা ও পেরেশানিতে রয়েছেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় টার্মিনাল-১ থেকে বের হন শাফিকুল হক। তিনি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটে রিয়াদ থেকে এসেছেন যাবেন সাভার। শফিকুল বলেন, আমার অনেক দেরি হয়ে গেছে লাগেজ খুঁজে পেতে। ভাবছিলাম এবার বুঝি মালামাল পাবনা। আল্লাহর রহমতে খুঁজে বের করেছি। আমরা যারা যাত্রী রয়েছি আমাদেরও ভূল থাকতে পারে। অনেকেই বিমানবন্দরের নিয়ম-কানুন জানেনা। আর যাত্রীদের একটি বড় সমস্যা হচ্ছে তারা সব কিছুতে তাড়াহুড়া করেন। বেল্টের যারা দায়িত্বে রয়েছেন তাদের আন্তরিকতার অনেক অভাব রয়েছে। কাজ করে যাচ্ছেন ঠিকই কিন্তু তাদের আন্তরিকতার সাথে কাউকে কাজ করতে দেখিনি। তাদের কাছে কিছু জানতে চাইলে ধমকের স্বরে কথা বলেন।
শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ-উল আহসান বলেন, হতে পারে অনেকক্ষণ যাবৎ লাগেজ বেল্টে পড়ে ছিল। যাত্রীরা লাগেজ নিতে না আসায় ফেলে রাখা হয়ে থাকতে পারে। এছাড়া অন্য এয়ারক্রাফটের ফ্লাইট চলে আসায় লাগেজ ফেলে রাখা হতে পারে। নতুন ফ্লাইটে আসা যাত্রীদেরও তো লাগেজ বেল্ট দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, অনেক সময় যাত্রীরা একটুতেই ক্ষব্ধ হয়ে যায়। তারা তো বোঝেনা আমরা কিভাবে ম্যানেজ করি। আমাদের লাগেজ বেল্ট ৮ টি। একসাথে যদি দশটা এয়ারক্রাফট চলে আসে, মাঝেমধ্যে লাগেজ বেল্ট থেকে সরিয়ে রেখে, নতুন আসা ফ্লাইটের যাত্রীদের লাগেজ গুলো বেল্টে রাখা হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক বলেন, লাগেজ বেল্ট মেইনটেইন করে এয়ারলাইন্স ও বিমানের কর্মচারীরা। যদি যাত্রীদের সাথে কেউ দুর্ব্যবহার করে থাকে তা করা উচিত না। বিষয়টি আমরা দেখবো।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন