হাজী ইকবালের সাথে বিরোধেই যুবলীগ কর্মী মহিউদ্দিন খুন
সাস নিউজ ডেস্ক: হালিশহর মেহের আফজল স্কুলে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে চলছিল প্রাক্তন ছাত্রদের নৌবিহারের প্রস্তুতি সভা, এ সময় কুপিয়ে খুন করা হয় এই যুবককে
আবারো ফেসবুকের স্ট্যাটাস নিয়ে নগরীতে খুনের ঘটনা ঘটলো। ইতোপূর্বে ছাত্রলীগ নেতা সুদীপ্ত খুনের পেছনে এক আওয়ামীলীগ নেতার বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকেই মূল কারণ বলে পুলিশ জানিয়েছিল। গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের দিনে নগরবাসী যখন উৎসব করছে তখন দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে মহিউদ্দিন (৩৫) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে খুন করলো বিতর্কিত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবাল ও তার অনুসারীরা। মাত্র ৭/৮ মাস আগেও এ দুজনের মধ্যকার সম্পর্ক ছিল পিতা পুত্রের। পিতার মতো শ্রদ্ধা করতেন যে মানুষটিকে, মতের অমিলে সেই মানুষটির হাতেই খুন হতে হলো মহিউদ্দিনকে। মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে বৈঠক চলাকালে বর্বরোচিত হামলায় খুন করা হয় যুবলীগ কর্মী মো. মহিউদ্দিনকে (৩৫)। প্রকাশ্য দিবালোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপানোর দৃশ্য দেখে প্রত্য দর্শীরাও আঁৎকে উঠেছেন। হাজী ইকবাল ও তার অনুসারীরা সোমবার (২৬ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টার দিকে নগরীর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর এলাকায় এ ঘটনা ঘটিয়ে সকলের সামনে দিয়ে অস্ত্র উঁচিয়ে চলে যায়। নিহত মহিউদ্দিনের জানাজায় রাজনৈতিক বিভেদ ভুলে অংশ নিয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। তাদের মতে এভাবে পৈশাচিক কায়দায় মানুষ খুনের ঘটনা মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানায়। জানাজা থেকেই তাই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছে। এ ঘটনায় মহিউদ্দিনের মা নূর ছেহরা বেগম বাদী হয়ে হাজী ইকবালকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের বিরুদ্ধে বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ ঘটনায় জড়িত দু’জনকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করেছে। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ময়নুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ওই এলাকার মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে প্রাক্তন ছাত্রদের একটি সভায় হামলা চালিয়ে মহিউদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। এ মামলায় ইতোমধ্যে তানভীর হোসেন বাপ্পী ও মো. মুছা নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল তাদের চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মাসুদ পারভেজের আদালতে হাজির করে দশ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন এবং আগামি ২৯ মার্চ শুনানির দিন ধার্য করেছেন। কারাগারে পাঠানো বাপ্পী মামলার অন্যতম আসামি হাজী ইকবালের জামাতা ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ১ নাম্বার নেভী গেইট এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে এবং মুছা হালিশহর মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী। নিহত মহিউদ্দিন দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর নতুন দুই নম্বর সাইটের মঈনু মাস্টারের বাড়ির মৃত আবু ইব্রাহিমের ছেলে। তিনি বিবাহিত এবং পাঁচ বছর বয়সী এক পুত্র সন্তানের জনক।
যেভাবে ঘটলো ঘটনা : প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ জানায়, ২৬ মার্চ স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের নৌ বিহার উপলক্ষে একটি বৈঠক চলছিল প্রধান শিক্ষকের কক্ষে । স্কুলটির পরিচালনা কমিটির সভাপতি ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হাসান মুরাদ। নিহত মহিউদ্দিন প্রাক্তন ছাত্র–ছাত্রী পুনর্মিলন উদযাপন পরিষদ কমিটির সদস্য। আগামী ৩১ মার্চ প্রীতি সমাবেশ, বনভোজন ও নৌ বিহারের আয়োজন করেছে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র–ছাত্রী পুনর্মিলন উদযাপন পরিষদ। সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় ভবনের দ্বিতীয় তলায় প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে এ নিয়ে প্রস্তুতি সভা চলছিল। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হাজী ইকবাল আলী আকবর ও তার ছোট ভাই মুরাদ আলী আকবর সভায় উপস্থিত হয়ে একটি বিষয় নিয়ে আপত্তি তোলেন। এ নিয়ে মহিউদ্দিনের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চলে যায় মুরাদ। এর কিছুক্ষণ পর মুরাদ এসে মহিউদ্দিনকে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় থেকে বের হতে বলে।এসময় মহিউদ্দিন মুরাদকে বলেন, যা বলার সভায় সবার সামনে বলুন। মহিউদ্দিনকে বের করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যায় মুরাদ। পরে দলবল নিয়ে হাজী ইকবাল প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে ঢুকে মহিউদ্দিনকে জাপটে ধরে ফেলে। প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে উপস্থিত থাকা প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা তাদের ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এ সময় মহিউদ্দিনকে পেছন থেকে হাতের বাহু দিয়ে গলার টুঁটি চেপে ধরে হাজী ইকবাল। হাতে থাকা কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে তার ভাই মুরাদ আলী আকবর ও ভাতিজা জয়নুল আলম বিপ্লব। পরে মহিউদ্দিনের নিথর দেহ প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে ফেলে দলবল নিয়ে চলে যায় হাজী ইকবাল।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (বন্দর) হারুন উর রশিদ হাজারী জানান, মেহের আফজল স্কুলের কর্তৃত্ব নিতে চায় হাজী ইকবাল। তবে তার বিভিন্ন কার্যকলাপের কারণে তাকে কেউ মানে না। সোমবার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের একটি কর্মসূচি ছিল এখানে। এ সময় দলবল নিয়ে এসে হাজী ইকবাল অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করে। সবাই বাধা দিলে হাজী ইকবাল মহিউদ্দিনের টুঁটি চেপে ধরে। তার সহযোগীরা ছুরিকাঘাত করে। পরে তারা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় হাজী ইকবাল ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।
মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহফুজুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ‘স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র পরিষদের একটি নৌবিহার আছে আগামী ৩১ মার্চ। প্রাক্তন ছাত্ররা ওটার প্রস্তুতি সভা করছিল অন্য একটি রুমে। বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র কিছু বয়স্ক লোক আমার রুমে আসেন দেখা করতে। ওখানে মহিউদ্দিনও ছিল। এসময় ওরা (হামলকারীরা) এসে মহিউদ্দিনকে বের হতে বলে। ও বের হয়নি। এরপর ওরা এসে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে তাকে। এঘটনায় আগামী ৩১ তারিখের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।
ফেসবুকে সাট্যাটাসই কাল হলো : নিহত মহিউদ্দিনের ভাগিনা নাইম আজাদীকে জানান, আমার মামা মহিউদ্দিন। কিন্তু সম্পর্কটা ছিল বন্ধুর মতোই। যে স্কুলে ঘটনা, তার পেছনেই আমাদের বাড়ি। ঘটনার দিন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে এসে কিছুটা চোখ লেগে এসেছিল দুপুরে। হঠাৎ স্কুল থেকে চিৎকার চ্যাঁচামেচি শুনে লুঙ্গি পরেই ছুটে যাই। দেখি প্রধান শিক্ষকের রুমে মামা পড়ে আছেন। রক্তে ভেসে যাচ্ছে পুরো মেঝে। কেউ ধরছে না। পরে আমার ভাইদের ডাক দেই। আমার দুই ভাই দ্রুত ছুটে আসে। মামা অস্ফস্ট স্বরে শুধু বললেন, ‘আমায় মেডিকেল নিয়ে চল’। একটা খালি পিকআপ পেয়ে তারা দু’জন মামাকে তুলে মেডিকেল রওনা দেয়। আমি বাসায় গিয়ে প্যান্ট পড়ে সিএনজি টেক্সি নিয়ে রওনা দেই। এর মধ্যে ভাইয়াদের সাথে কথা হচ্ছিল মোবাইল ফোনে। আমার মেঝ ভাই জানালেন দেওয়ান হাট পার হওয়ার সময় তাকে বোতল থেকে পানি খাওয়াতে চাইছেন, কিন্তু তিনি খাচ্ছেন না। একপর্যায়ে ভাইয়া বোতলের পুরো পানি তার মাথায় ঢেলে দেয়। তখনো সেন্স ছিল তার। হঠাৎ তিনি উঠে বসেন এ অবস্থাতেও। ভাইয়াকে বলেন, ‘আমাকে জোরে চেপে ধরে রাখ। ভাইয়া তা–ই করে। এরই মধ্যে মামা হাত পা ছেড়ে দেন। হাসপাতালে নিলে ডাক্তার বলেন, মামা রাস্তায় নাকি মারা গেছেন। মামার সমস্ত শরীরে ৩২ টা কোপ ছিল। মাথায় ছিল অন্ত:ত ৪/৫ টা। বাম চোখ খুলে বেরিয়ে আসছিল। মগজ বের হয়ে গেছিল এক সাইডে। হাতের রগ, পায়ের রগ কেটে দিয়েছিল তারা।’ হাজী ইকবালকে বাবার মতো সম্মান করতো জানিয়ে নাইম আরো বলেন, দু’জনের মধ্যে একসময় ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল। কিন্তু মামা হাজী ইকবালের বিতর্কিত বিভিন্ন কর্মকান্ড মানতে পারতো না। প্রতিবাদ করতো। এই নিয়ে বিরোধ। এক পর্যায়ে তার সাথে মেলামেশা বন্ধ করে দেন মামা। ফেসবুকে হাজী ইকবাল ও তার ভাইয়ের বিতর্কিত নানা কর্মকান্ডের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মহিউদ্দিন। এসব বিষয় নিয়ে মহিউদ্দিনের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল হাজী ইকবাল। ঐ স্ট্যাটাসই কাল হলো তার জন্য।
শোকের মাতম মহির বাড়িতে : গত ২৬ মার্চ বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে সিঁড়ি পর্যন্ত ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। স্কুলের পেছনেই মহিউদ্দিনের বাড়ি। তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। তার স্ত্রী সানজিনা আক্তার পিংকি স্বামীর মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর থেকে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। আদহাম নামে তাদের পাঁচ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। মানুষের ভিড় দেখে সে নিজেই ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে। বুঝতে পারছে না, তার বাবা যে আর কখনো ফিরবে না।
নিহত মহিউদ্দিনের লাশ গতকাল দক্ষিণ মধ্যম হালিশহরে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিকেলে মেহের আফজল স্কুলের মাঠে জানাজা শেষে নিউমুরিং এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয় বলে মহিউদ্দিনের ভাই আবু ইউসুফ জানান। তার জানাজায় কয়েক হাজার মানুষ অংশ নেয়।
কে এই হাজী ইকবাল : ৩৮ নম্বর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর ওয়ার্ডের হাজী আবদুল মালুম বাড়ির বাসিন্দা হাজী ইকবাল আলী আকবর। তিনি বেশ কয়েক বছর আগে বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। বন্দর থানা আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি নুরুল আলম বলেন, কখনও নিজেকে বন্দর থানা সভাপতি, কখনও সাধারণ সম্পাদক দাবি করে মানুষকে বিভ্রান্ত এবং দলীয় পদবি ব্যবহার করে সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করায় আট বছর আগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট শোক দিবসে নগরের জামালখানে মিছিল বের করে হাজী ইকবাল। মিছিলে ‘হায় মুজিব’, ’হায় মুজিব’ রব তুলে হাতের জিঞ্জির চাকু (ধারালো ছুরি ও ব্লেডের গুচ্ছ) দিয়ে নিজের শরীরে আঘাত করে মাতম করে। মিছিলের ভিডিওটি ফেসবুকেও ভাইরাল হয়ে যায়। বঙ্গবন্ধুর জন্য শোক প্রকাশের নামে এমন বিকৃত আচরণ করে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল হাজি ইকবাল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর যুবলীগের এক যুগ্ম আহ্বায়ক বলেন, হাজী ইকবাল কয়েকটি মামলা দিয়ে মহিউদ্দিনকে হয়রানি করেছিলেন। সর্বশেষ তাকে হত্যায়ও হাজী ইকবাল ও তার ঘনিষ্ঠরা অংশ নিয়েছেন।
শিক্ষক পিটিয়েছে ইকবালের ভাই মুরাদ : মেহের আফজল উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক হাজী মো. আলী মঈনু দৈনিক আজাদীকে বলেন, মহিউদ্দিনের সঙ্গে এলাকার কারোর রাজনৈতিক, সামাজিক বিরোধ ছিল না। তার অপরাধ সে আমার বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছিল। ২০১৬ সালের ১০ জানুয়ারি হাজী ইকবালের ভাই মুরাদ আমাকে মেরেছিল। ওটার প্রতিবাদ করেছিল মহিউদ্দিন। আসলে ওই ঘটনার পর থেকে হাজী ইকবালদের সবাই এড়িয়ে চলত। সামাজিকভাবে তাকে বয়কট করেছে সবাই। এরপর থেকেই ক্ষিপ্ত সে। তিনি আরো বলেন, হাজী ইকবালের উপস্থিতিতে কুপিয়ে মহিউদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে। হাজী ইকবাল গলা টিপে ধরেছিল। তার অনুসারিরা এলোপাথাড়ি কুপিয়েছে। সারা শরীরে ৩২টা কোপের দাগ আছে। সবার সামনে ঘটেছে এই হত্যাকাণ্ড, সবাই দেখেছে এটা। মৃত্যু নিশ্চিত করে ওরা যে রক্তাক্ত অবস্থায় চলে গেছে সেটা সিসিটিভি ফুটেজ দেখলে প্রমাণ মিলবে।
হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা হাজী ইকবালকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না’ দাবি করে হাজী মো. আলী মঈনু বলেন, ‘হত্যার দিন গভীর রাতেও সে অনলাইনে ছিল। সাংবাদিকরা তাকে মোবাইলে পায়। কিন্তু পুলিশ পায় না। কেন?’ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের ফাঁসি দাবি করেন এ শিক্ষক।
ইকবাল ও তার আপনজনরাই জড়িত : নিহত মহিউদ্দিনের ভাগিনা নাইম আজাদীকে বলেন, ঘটনা কারা ঘটিয়েছে তা দিবালোকের মতো স্পষ্ট। মামলায়ও তাদেরকেই আসামি করা হয়েছে। হাজী ইকবাল ছাড়া এজাহারভুক্ত অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছে তার ভাই মুরাদ, ভাতিজা বিপহ্মব, ছেলে আলী, মেয়ের জামাই বাপ্পী। এছাড়াও হারুণ তার ফাই ফরমাশ খাটে, সাগর, প্রিন্স, আজাদ তার অনুসারী। এছাড়া আরো কয়েকজন ছিল ঘটনায়।
খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি : গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে নিহত মহিউদ্দিনের জানাজায় অংশ নিয়ে খুনিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেন আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন প্রশ্ন রেখেছেন, সে এমন কী অপরাধ করেছে তাকে দিনে দুপুরে কুপিয়ে মারতে হবে? তিনি বলেন, যারা অপরাধী তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। যারা এ হত্যাকান্ডে জড়িত সবাইকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। দ্রুত গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের আহ্বান জানাচ্ছি পুলিশ প্রশাসনের প্রতি।
যুবলীগ নেতা ফরিদ মাহমুদ এ প্রসঙ্গে আজাদীকে বলেন, একজন মানুষকে কীভাবে বর্বরোচিত কায়দায় এভাবে খুন করা যায়, তা আমি ভেবে পাই না। তিনি বলেন, জানাজায় অসংখ্য মানুষকে কাঁদতে দেখেছি। একই দৃশ্য দেখা গেছে মেডিকেলে তার লাশ দেখতে গিয়ে। একটা ছেলে খারাপ হলে এভাবে মানুষের ঢল নামতো না। বুক ফেটে কান্নাও আসতো না। আমার একটাই অনুরোধ প্রশাসনের প্রতি, তারা যেন দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করেন। কারণ এখানে খুনি কে , তা অনুমানের কিছু নেই। সবাই দেখেছে কারা খুন করেছে।
জানাজায় অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন সাংসদ এম এ লতিফ, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সহ–সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন, আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল আলম, কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা এম হাসান মুরাদ, মো. হাসান প্রমুখ। জানাজা শেষে আওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন