অঙ্কুরিত মেথির উপকার
স্বাস্থ্য ডেস্ক: সুন্নতী উপাদান ‘মেথি’ দীর্ঘদিন ধরে উদ্ভিদজগতের ‘ডাক্তার’ হিসেবে পরিচিত। মূলত এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে চাষ করা মেথিগুলো উপমহাদেশের খাবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আমাদের এ অঞ্চলের রান্নাঘরের সঙ্গে আয়ুবের্দিক ঐতিহ্যেও এটিকে খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা হয়। মেথি যেমন স্বাদ ও স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ত্বক ও চুলের যতেœও বেশ উপকারী। জেনে নিন স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যে মেথির উপকার সম্পর্কে।
ঔষধি গুণ: যে কোনও রূপেই মেথি ঔষধি গুণাবলীর ভা-ার। এটি ভিটামিন সি, প্রোটিন, ফাইবার, নিয়াসিন, পটাসিয়াম, আয়রন এবং ক্ষার সমৃদ্ধ। এটি ডায়োজেনিন নামক যৌগের সমৃদ্ধ যাতে ইস্ট্রোজেন জাতীয় বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের জন্য মেথির মাইক্রোগ্রিন বেশ উপকারী। এর মধ্যে এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা রক্তে চিনির মাত্রা প্রতিরোধ করে দেহে ইনসুলিন উৎপাদনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে। বেশ কিছু ডায়াবেটিস রোগীর ওপর গবেষণা করে দেখা গেছে, মেথির মাইক্রোগ্রিন তথা সদ্য গজানো চারা খাওয়ার পর পরবর্তী ২৪ ঘন্টায় তাদের রক্ত প্রবাহে চিনির পরিমাণ অনেক কম দেখা গেছে। এটি অ্যামিনো অ্যাসিডের এমন একটি সমৃদ্ধ উৎস যা ডায়াবেটিস থেকে পরিত্রাণের জন্য ইনসুলিন উৎপাদনে কার্যকর।
ওজন কমায় মেথির মাইক্রোগ্রিন: গবেষণায় দেখা গেছে যে মেথির সদ্য গজানো চারা ওজন হ্রাসে সহায়তা করতে পারে। মেথিতে প্রায় ৭৫% দ্রবণীয় ফাইবার থাকে যা পরিপূর্ণতার অনুভূতিও অনুকরণ করে তাই মেথি ওজন কমানোর জন্য একটি ‘ডাবল অ্যাকশন’ সমাধান।
কার্ডিয়াক স্বাস্থ্যে মেথির উপকার: মেথির ভেতর হৃদরোগ রোধ করার সুবিধাগুলো রয়েছে বলে জানা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন মেথি খাচ্ছেন তাদের কোলেস্টেরল কম থাকে। আর তাই হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কম থাকে। এটি রক্তের ভেতর থাকা ট্রাইগ্লিসারাইড নামক একপ্রকার চর্বির আস্তরণকে কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে যা হৃদরোগ জটিলতার জন্য দায়ী। এটি পটাসিয়ামের একটি কার্যকর উৎস। এটাও হৃদরোগের ঝুঁকি এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সোডিয়ামের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে।
অ্যান্টি-ভাইরাল মেথি: মেথিতে রয়েছে অ্যান্টি ভাইরাল গুণ। যা কার্যকরভাবে ঠা-া ও গলা ব্যথার উপসর্গগুলো থেকে মুক্তি দেয়।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের উৎস: মেথির উপকারের তালিকায় আরেকটি বড় পালক হলো এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের একটি সমৃদ্ধ উৎস। যা আমাদের দেহে ফ্রি র্যাডিকেলগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করে কোষকে সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে বাঁচায়। এটি ক্যানসারও প্রতিরোধ করে।
হজমে সহায়ক মেথি: ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী বনাদী ওষুধের প্রক্রিয়া অনুযায়ী, মেথি হজমে সহায়তা করে। এরসঙ্গে গ্যাস্ট্রিক, পেট ফাঁপা এবং ডায়রিয়ার চিকিৎসাতেও দীর্ঘকাল ধরে এটি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এক্ষেত্রে মেথির মাইক্রোগ্রিনটাই বেশি কার্যকর।
প্রসবে মেথির উপকার: সীমিত অংশে মেথি জরায়ুর সংকোচনের উদ্দীপনা সৃষ্টির ক্ষমতার কারণে প্রসব কার্যকে সহজ করতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে ব্যথাও কমাতে পারে। তবে গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে মেথি খাওয়া গর্ভবতীর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
মন্তব্য
মন্তব্য করতে নিবন্ধন অথবা লগইন করুন